তুরাগ থানা সূত্রে জানা যায়, রবিবার ভোর আনুমানিক ০৪:০১ ঘটিকায় ইতালিয়ান নাগরিক তানিয়া মোহাম্মদ শেখ নূর ইতালি হতে একটি ফ্লাইটে ঢাকা শাহজালাল আন্তজার্তিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। তিনি বিমানবন্দরের সামনে থেকে একটি উবার মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার ১৯নং সেক্টরের প্রবাসী হোস্টেলে যাওয়ার উদ্দেশে রওনা করেন। মোটরসাইকেল চালক ইতালিয়ান নাগরিককে হোস্টেলে না নিয়ে গিয়ে তুরাগ থানাধীন ১৫নং সেক্টরের ১নং মেট্রোরেল স্টেশন সংলগ্ন ব্রীজের পাশে নিয়ে যায়। সেখানে ইতালিয়ান নাগরিককে তার অপর এক সহযোগীর সহায়তায় ভয়-ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক তার সাথে থাকা ইতালিয়ান পাসপোর্ট, একটি আইফোন ১৩ মোবাইল, একটি আইফোনের চার্জার, একটি ম্যাকবুক চার্জার, ইতালিয়ান পরিচয়পত্র, ব্যাংক কার্ড, সুগন্ধি, ইতালিয়ান বই, নগদ ৫০ ইউরো ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। এই ছিনতাইয়ের ঘটনায় ইতালিয়ান নাগরিক তানিয়া মোহাম্মদ শেখ নূরের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তুরাগ থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়।
মামলাটি রুজু হওয়ার পর ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তির সহায়তায় ১২ ঘন্টার মধ্যে ছিনতাইকারী উবার মোটরসাইকেল চালক মোঃ খোরশেদ আলমকে শনাক্ত করা হয়। অতঃপর ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখ বিকেল ৫:১৫ ঘটিকায় তুরাগ থানার পাকুরিয়া হাসুর বটতলা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে খোরশেদকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাত ১১.১৫ ঘটিকার তুরাগ থানার পাকুরিয়া এলাকার একটি বাসায় অভিযান পরিচালনা করে ছিনতাইকাজে সহায়তাকারী মোঃ শাহিন মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা পেশাদার ছিনতাইকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা উবার মোটরসাইকেল চালকের বেশ ধারণ করে নির্জন জায়গায় নিয়ে ভয়-ভীতি দেখিয়ে যাত্রীদের টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনতাই করতো মর্মে স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
উল্লেখ্য, ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ার পর তুরাগ থানা পুলিশ ও ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ইতালিয়ান নাগরিক তানিয়া মোহাম্মদকে সার্বক্ষণিক মানসিক সাপোর্ট ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ছিনতাই হওয়া পাসপোর্ট, মোবাইল ফোন ও অন্যান্য মালামাল ফিরে পেয়ে ইতালিয়ান নাগরিক তানিয়া মোহাম্মদ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তথা বাংলাদেশ পুলিশকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করার জন্য এবং নিজের স্বতঃস্ফূর্ত অনুভূতি ব্যক্ত করার জন্য ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস বিফ্রিংয়ে উপস্থিত ছিলেন। অনুভুতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি আবেগে আপ্লুত হয়ে পরেন এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তথা বাংলাদেশ পুলিশকে বিশ্বের অন্যতম সেরা পুলিশ হিসেবে অভিহিত করেন।