চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাল আমদানিতে শুল্ক কমানোর ঘোষণার পর থেকেই স্থানীয় বাজারে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে৷ ফলে বাজারে মোটা চিকন সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা কমেছে। সপ্তাহ ব্যবধানে চিকনের থেকে মোটা চালের দাম বেশি কমেছে৷ একই সঙ্গে ওএমএস ও খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি চালু হয়েছে৷ ফলে কয়েক দিনের মধ্যে চালের দাম আরো কমে যাবে বলে আশা ব্যবসায়ীদের।
সোমবার (০৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কয়েকটি খুচরা ও পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুচরা বাজারে জাত ও মানভেদে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৬৭ থেকে ৭২ টাকা। নাজিরশাইল চাল ৭২ থেকে ৮২ টাকা, পাইজাম বা হাস্কি ৫২ থেকে ৫৫ টাকা, আটাশ চাল ৫৬ থেকে ৬২ টাকা এবং মোটা স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৪৭ থেকে ৫১ টাকা ও হাইব্রিড মোটা ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা।
এক সপ্তাহ আগেও খুচরা বাজারে জাত ও মানভেদে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, নাজিরশাইল চাল ৭৫ থেকে ৯০ টাকা, মাঝারি মানের চাল পাইজাম ও হাস্কি ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা, আটাশ চাল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, মোটা চাল স্বর্ণা ৫২ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
পাইকারি বাজারে চিকন চাল প্রতি কেজি মিনিকেট মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৮ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে মানভেদে বিক্রি হয়েছে ৬২ থেকে ৭২ টাকায়। নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৭ থেকে ৭৬ টাকা। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। মাঝারি মানের প্রতিকেজি আটাশ নম্বর প্রতিকেজি চাল ৫১ থেকে ৫৩ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৩ থেকে ৫৭ টাকা৷ হাস্কি চাল প্রতি কেজি ৪৭ থেকে ৫০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৫৪ টাকা। মোটা চাল প্রতি কেজি পাইজাম ৪৭ থেকে ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৫৩ টাকা এবং স্বর্ণা মানভেদে ৪২ থেকে ৪৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা।
প্রসঙ্গত, ২৮ আগস্ট জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন বলা হয়েছে, চাল আমদানিতে এখন রেগুলেটরি ডিউটি বা আবগারি শুল্ক ৫ শতাংশ, আগাম আয়কর ৫ শতাংশ ও অগ্রিম কর ৫ শতাংশসহ মোট ১৫ দশমিক ২৫ শতাংশ শুল্ক কর দিতে হবে। আর এই আদেশ আটোমেটেড চাল ছাড়া সব ধরনের চাল আমদানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। একই সঙ্গে আমদানির আগে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার অনুমোদন নিতে হবে। এর আগে চালে শুল্ক-কর মিলিয়ে ২৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ কর প্রযোজ্য ছিল। যা কমে ১৫ দশমিক ২৫ শতাংশ করা হলো। এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে, যা চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বহাল থাকবে।
এদিকে রোবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্য আমদানির নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, রাশিয়া, ভারত, মায়ানমার, থাইল্যান্ড এ ভিয়েতনাম এই ৫ দেশের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। এসব দেশ থেকে চাল আসছে। এর বাইরে আরো দুই একটি জায়গা থেকে খাদ্য কেনার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। আগামী নভেম্বর থেকে আমরা যে চিন্তা করছি একটা খাদ্য সংকট হতে পারে বিশ্বব্যাপী। তবে আমাদের ওয়ার্ক অর্ডার এবং খাদ্য পাওয়ার নিশ্চয়তা এসেছে।
বর্তমানে ১৯ লাখ ৫০ হাজার টন খাদ্য শস্য মজুত রয়েছে। যে পরিমাণ খাদ্য আমাদের গোডাউন থেকে যাবে, সে পরিমাণ খাদ্য এবং সেফটির জন্য আরও কেনার সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। ওএমএস এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কারণে বাজারে চালের দাম ৪-৫ টাকা কমেছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।






