আলম গাজী , খুলনার প্রতিনিধি: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম (শায়েখে চরমোনাই) বলেছেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। নানাবিদ সংকট ক্রমেই ঘোলাটে হচ্ছে। দেশের পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে এ নিয়ে সাধারণ মানুষ আজ উদ্বিগ্ন। দেশের অধিকাংশ মানুষ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সংকটে জর্জরিত। আধা পেট খেয়ে থাকছেন অনেকে। কিন্তু দুর্নীতি এবং লুটেরাদের দাপট কমছে না। বিদেশে পাচারের টাকা ফেরত আনা হচ্ছে না। খেলাপী ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে চিনি নিয়ে তেলেসমাতি চলছে নতুনভাবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী সিলেবাস থেকে কৌশলে ইসলামী শিক্ষাকে বিদায়ের নানামুখি আয়োজন সম্পন্ন করেছেন। তিনি ভারতের সিলেবাসের মত করে ইসলামী শিক্ষাকে নামমাত্র রেখে পাবলিক পরীক্ষা থেকে বাদ দিয়েছেন। তার মানে গাছের গোড়া কেটে আগায় পানি ঢালার মত অবস্থা ডারউইনের নাস্তিক্যবাদি অযৌক্তিক মতবাদ সিলেবাসে অন্তরর্ভুক্ত করে কোমলমতি মুসলিম শিশুদের নাস্তিক্যবাদে ধাবিত করার চক্রান্ত চলছে।
আজ শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) জুম্মাবাদ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর ও জেলা শাখার উদ্যোগে নগরীর নিউমার্কেট বায়তুন নূর চত্বরে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ, শিক্ষা সিলেবাসে ধর্মীয় শিক্ষা সংকোচন বন্ধ, ইসলাম- দেশ ও মানবতা বিরোধী মদের বিধিমালা বাতিল, বন্ধকৃত মিল কলকারখানা চালু, স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য সাম্য-মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠা এবং জাতীয় মহাসমাবেশে পীর সাহেব চরমোনাই ঘোষিত ১৫ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিশাল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর সভাপতি আলহাজ্ব মুফতি আমানুল্লাহ’র সভাপতিত্বে ও নগর সেক্রেটারী শেখ মোঃ নাসির উদ্দিন, জেলা সেক্রেটারী আলহাজ্ব হাফেজ আসাদুল্লাহ আল গালিব, জয়েন্ট সেক্রেটারী মাওলানা ইমরান হোসাইন এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর নায়েবে আমীর হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ, কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা শোয়াইব হোসেন, জেলা সভাপতি মাওলানা অধ্যাপক আব্দুল্লাহ ইমরান।
সমাবেশে শায়েখে চরমোনাই বলেন, মাদককে সহজলভ্য করে দেয়া হয়েছে। যাতে নেশাগ্রস্ত জাতি তৈরি হয়। তিনি বলেন, একটি পরিবার, সমাজ ও দেশ ধ্বংস করতে মাদকাসক্ত একটি প্রজন্মই যথেষ্ট। সরকার মদকে সহজ করে দিয়ে সেই কাজটিই করছে। মানুষের মৌলিক ও ভোটের অধিকার দিতে ব্যর্থ সরকার পুরোনো স্বৈরাচারী কায়দায় যেনতেন নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে।
ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমীর আব্দুল আউয়াল বলেন, সরকারকে পদত্যাগ করে এবং সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। দেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতি থেকে উদ্ধারে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের বিকল্প নেই। সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরণে সারাদেশে ভয়ের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। পীর সাহেব চরমোনাই নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের অধীনে কালো টাকা, পেশিশক্তি এবং কারসাজিমুক্ত পরিবেশে নির্বাচনের দাবি জানান। শ্রমজীবী ও নিম্নআয়ের মানুষের জন্য আর্মি রেটে রেশন ব্যবস্থা এবং সারা বছর ওএমএস কার্যক্রম চালুর দাবি জানান।
দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুস আহমদ বলেন, জনগণকে দুর্ভিক্ষের ভয় দেখানো হচ্ছে। এই কথায় লুটেরারা লুটপাটের আরও সুযোগ নেবে। দেশজ পণ্যের অভাব নেই। কৃষকরা উৎপাদন বাড়াতে প্রস্তুত; তাদের যথাযত সহায়তা দিন। আর উৎপাদিত ও নিত্যপণ্যের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করুন। সাথে সাথে সারাদেশের বন্ধ মিল কলকারখানা চালুর জোর দাবী করেন। বিশেষ করে শিল্পনগরী খুলনার বন্ধ করে দেওয়া সকল মিল কলকারখানা চালুর কথা উল্লেখ করে লক্ষ লক্ষ শ্রমিকদের কর্মসংস্থান ফিরিয়ে দেওয়ার আহবান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে মুফতী আমানুল্লাহ বলেন, ইসলাম ছাড়া মানবতার মুক্তি নেই; তাই জীবনের সর্বত্র ইসলাম প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় দেশের ইসলাম প্রিয় জনগণকে ইসলামী আন্দোলনের পতাকাতলে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আজ সংকটাপন্ন, জনগণ তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত, দুর্নীতিবাজ, লুটেরা এবং তাবেদার শক্তি দেশের মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে। এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্যে সমাজ ঐক্যদ্ধ হতে হবে। দেশের স্বাধীনতা সুরক্ষা ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তীব্র গণজাগরণ সৃষ্টি করতে হবে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলনের নগর সহ সভাপতি মুফতি মাহবুবুর রহমান, মাওলানা মোঃ মুজিবুর রহমান, মাওলানা মোঃ আবু সাইদ, আলহাজ্ব জাহিদুল ইসলাম, মাওলানা মোঃ শায়খুল ইসলাম বিন হাসান, মাওঃ মাহবুব আলম, মোঃ সাইফুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল নোমান, ফেরদৌস গাজী সুমন, মুফতী আমিরুল ইসলাম, এইচ এম খালিদ সাইফুল্লাহ, হাফেজ মাওলানা মুফতি আশরাফুল ইসলাম, মোল্লা রবিউল ইসলাম তুষার, মঈন উদ্দিন ভূঁইয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা জিএম কিবরিয়া, আলহাজ্ব আবু তাহের, মাওলানা হারুন অর রশিদ, মাওলানা আঃ সাত্তার, এসকে নাজমুল হাসান, মাওঃ আব্বাস আমিন, মোঃ কবির হুসাইন, আলহাজ্ব আমজাদ হোসেন, মাওলানা আসাদুল্লাহ হামিদী, মুফতি আঃ জববার আজমী, মাওলানা ওমর ফারুক, ইঞ্জিঃ সরদার মোঃ গোলাম সরোয়ার, সৈয়দ মোঃ আঃ হালিম, মোঃ বোরহান উদ্দিন, মোঃ নুরুল হদা সাজু, মাওঃ হাফিজুর রহমান, আলহাজ্ব সরোয়ার হোসেন বন্দ, মোঃ ক্বারী জামাল উদ্দীন, মোঃ আবদুল হাফিজ শেখ, মোঃ আবদুস সামাদ গাজী, মোঃ শফিকুল ইসলাম, মাওঃ নিজাম উদ্দিন, মোঃ কামরুল ইসলাম, আলহাজ্ব শফিউল ইসলাম, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের নগর সভাপতি মুফতী রবিউল ইসলাম রাফে, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন খুলনা মহানগর সভাপতি মোঃ আবুল কালাম আজাদ, জেলা সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, নগর সেক্রেটারী গাজী মুরাদ হোসেন, জেলা সেক্রেটারি মাওলানা হেলাল উদ্দিন শিকারী, ইসলামী যুব আন্দোলনের মোঃ মেহেদী হাসান, আলহাজ্ব আবুল কাশেম, মোঃ ইমরান হোসেন মিয়া, মোঃ আব্দুর রশিদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ নগর সভাপতি মোঃ মঈন উদ্দিন, জেলা সভাপতি এনামুল হাসান সাঈদ, আবু রায়হান, ইব্রাহিম ইসলাম আবির, আবদুল্লাহ আল মামুন, মোল্লা ফরহাদ হোসেন, মাহদী হাসান মুন্না, আবুল কাশেম, হাবিবুল্লাহ মেসবাহ প্রমুখ।