ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেছেন, মাদককে সহজলভ্য করে দেয়া হয়েছে। যাতে নেশাগ্রস্ত জাতি তৈরি হয়। তিনি বলেন, একটি পরিবার, সমাজ ও দেশ ধ্বংস করতে মাদকাসক্ত একটি প্রজন্মই যথেষ্ট। সরকার মদকে সহজ করে দিয়ে সেই কাজটিই করছে। মানুষের মৌলিক ও ভোটের অধিকার দিতে ব্যর্থ সরকার পুরোনো স্বৈরাচারী কায়দায় যেনতেন নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। নানাবিদ সংকট ক্রমেই ঘোলাটে হচ্ছে। পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে এ নিয়ে দেশের সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সংকটে জর্জরিত। আধা পেট খেয়ে থাকছেন অনেকে। কিন্তু দুর্নীতি এবং লুটেরাদের দাপট কমছে না। বিদেশে পাচারের টাকা ফেরত আনা হচ্ছে না। খেলাপী ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে চিনি নিয়ে তেলেসমাতি চলছে নতুনভাবে।
তিনি বলেন, বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী সিলেবাস থেকে কৌশলে ইসলামী শিক্ষাকে বিদায়ের নানামুখি আয়োজন সম্পন্ন করেছেন। তিনি ভারতের সিলেবাসের মত করে ইসলামী শিক্ষাকে নামমাত্র রেখে পাবলিক পরীক্ষা থেকে বাদ দিয়েছেন। তার মানে গাছের গোড়া কেটে আগায় পানি ঢালার মত অবস্থা। ডারউইনের নাস্তিক্যবাদি অযৌক্তিক মতবাদ সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করে কোমলমতি মুসলিম শিশুদের নাস্তিক্যবাদে ধাবিত করার চক্রান্ত চলছে।
দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী উপজেলা শাখার উদ্যোগে ফুলবাড়ী মাইক্রোস্ট্যান্ডে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের আকাশচুম্বি মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ, শিক্ষা সিলেবাস থেকে ইসলামী শিক্ষা সংকোচন নীতি বাতিল এবং দুর্নীতি ও দুঃশাসনের অবসান করে কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষে বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফুলবাড়ী উপজেলা শাখা সভাপতি রবিউল ইসলাম-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের নায়েবে আমীর আল্লামা আব্দুল হক আজাদ, কেন্দ্রীয় সহকারি সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন। বক্তব্য রাখেন মাওলানা আব্দুর রহমান কাসেমী, জনাব আমিরুজ্জামান পিয়াল, জেলা সভাপতি ডা. নুরুল আলম সিদ্দিকী, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহসহ জেলা ও থানা নেতৃবৃন্দ।
ইসলামী আন্দোলনের আমীর বলেন, সরকারকে পদত্যাগ করে এবং সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। দেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতি থেকে উদ্ধারে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের বিকল্প নেই। সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরণে সারাদেশে ভয়ের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। পীর সাহেব চরমোনাই নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের অধীনে কালো টাকা, পেশিশক্তি এবং কারসাজিমুক্ত পরিবেশে নির্বাচনের দাবি জানান। শ্রমজীবী ও নিম্নআয়ের মানুষের জন্য আর্মি রেটে রেশন ব্যবস্থা এবং সারা বছর ওএমএস কার্যক্রম চালুর দাবি জানান।
তিনি আরো বলেন, জনগণকে দুর্ভিক্ষের ভয় দেখানো হচ্ছে। এই কথায় লুটেরারা লুটপাটের আরও সুযোগ নেবে। দেশজ পণ্যের অভাব নেই। কৃষকরা উৎপাদন বাড়াতে প্রস্তুত; তাদের যথাযত সহায়তা দিন। আর উৎপাদিত ও নিত্যপণ্যের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করুন। তাহলে সংকট দূর হয়ে যাবে।