ভারতের মুসলমানদের মানবাধিকার নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন জার্মান-তুর্কি ফুটবলার মেসুত ওজিল। হিন্দু-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে নিপীড়নের শিকার মুসলমানদের দুর্দশার বিষয়ে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে টুইটারের মাধ্যমে আহ্বান জানান তিনি। খবর মিডলইস্টমনিটর।
গত বুধবার রিয়াল মাদ্রিদ ও আর্সেনালের সাবেক তারকা ফুটবলার ভারতে সাম্প্রতিক সময়ে যা ঘটছে সে ব্যাপারে নিরবতা ভাঙতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি দেশটির মুসলিম সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও মঙ্গলের জন্য দোয়া করেছেন তিনি।
টুইটে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশে মুসলমানদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের লজ্জাজনক পরিস্থিতির কথা বর্ণনা করেন মেসুত ওজিল। এতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের প্রতি গণহত্যা, মুসলিম নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতার জন্য প্রভাবশালী চরমপন্থীদের আহ্বানসহ নানা বিষয় তুলে ধরেছেন। টুইটে তিনি দিল্লির জামে মসজিদের ইফতারের একটি ছবি সংযুক্ত করেছেন।
গত সপ্তাহে হিন্দুস ফর হিউম্যান রাইটস নামের একটি সংস্থাও এক বিবৃতিতে ভারতের মুসলিমবিদ্বেষ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে। বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা হিন্দুত্ববাদের সমালোচনা করে বলেছেন, একটি শতাব্দী প্রাচীন রাজনৈতিক মতাদর্শ (বিজেপি) অন্যান্য ধর্মের নাগরিকদের অতি সহজেই বিদেশি হিসেবে গণ্য করছে এবং তাদেরকে ভারতীয় নাগরিকত্বের পূর্ণ সুবিধা ভোগ করার যোগ্য বলে মনে করে না।
বিবৃতিতে তারা আরো জানায়, আমরা দেখেছি কলেজ ছাত্রদের দ্বারা তৈরি একটি অ্যাপে মুসলিম নারীদের ‘নিলাম’ করা হচ্ছে এবং কর্ণাটকে হিজাব পরার কারণে মুসলিম নারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
ওজিল অবশ্য এবারই মুসলিম সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন, এমন নয়। ২০১৯ সালেও উইঘুর মুসলমানদের সাথে চীনের আচরণের ব্যাপক সমালোচনা করেছেন তিনি। ফলে সেই সময়ে তার ক্লাব আর্সেনাল ওজিলের কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরে গিয়ে মন্তব্য করেছিল, তারা কোনো ধরনের রাজনীতির সাথে যুক্ত নয়।
তবে রাশিয়ার হামলার পরে ইউক্রেনকে সমর্থন জানানোর ব্যাপারে দূরে সরে যাওয়ার মতো কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। এ কারণে উত্তর লন্ডনের ক্লাবটির ওপর তার পূর্ববর্তী ‘রাজনীতিতে কোন সম্পৃক্ততা নেই’ দাবি এবং তার সাবেক খেলোয়াড়ের সমর্থনের অভাবের কারণে ভণ্ডামীর অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই মাসের শুরুতে ওজিল আরেক টুইটে বলেছিলেন, শুধু ইউক্রেনে নয়, ফিলিস্তিন, সিরিয়া, ইয়েমেন, ইরাক এবং বিশ্বের অন্য সব জায়গায় যেখানে মানুষ যুদ্ধে ভুগছে, আমরা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সবার জন্য প্রার্থনা করি।