শিক্ষা সিলেবাসের অসঙ্গতি, ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে আমরা ধারাবাহিকভাবে দীর্ঘদিন যাবৎ আন্দোলন করে আসছি। আমাদের এ ধারাবাহিক কার্যক্রমকে শিক্ষামন্ত্রী ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে মিথ্যা সাব্যস্ত করার চেষ্টা করেছিলো। এখন শিক্ষামন্ত্রীই মিথ্যুক প্রমাণিত হয়েছেন। অতএব শিক্ষামন্ত্রী এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারেন না। তাই অতিস্বত্বর বিতর্কিত শিক্ষা সিলেবাস বাতিল করে নতুনভাবে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে। যেখানে সকল ধরনের শিক্ষক ও বিজ্ঞ আলেমগণকে আন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
আজ বুধবার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগরের উদ্যোগে নগর সম্মেলন’২৩ অনুষ্ঠিত হযেছে। এতে প্রধান অতিথি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
সভাপতির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, ২০২৩-এর মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তকে জনগণের বোধ-বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও জাতীয়
স্বার্থকে উপেক্ষা করে সাম্প্রদায়িক উষ্কানি, তথ্য ও ইতিহাস বিকৃতি, বিতর্কিত ও অবৈজ্ঞানিক মানব সৃষ্টিতত্ত্ব অনুপ্রবেশ, ট্রান্সজেন্ডার, পৌত্তলিক ও ব্রাহ্মণ্যবাদী সংস্কৃতির আধিপত্য, ইসলামকে ভিনদেশি সাব্যস্ত করা এবং প্লেজারিজমের মত নিন্দনীয় কাজের আশ্রয় নেয়া হয়েছে; যা জাতি হিসাবে আমাদের জন্য উদ্বেগ ও হতাশার।
তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পাঠ্যপুস্তকের বিকৃতি ঘটানো ও ইতিহাস থেকে মুসলমানদেরকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।
দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলার প্রচলিত ইতিহাসের বিরুদ্ধে গিয়ে পাঠ্যপুস্তকে প্রতিবেশী, ব্রাহ্মণ্যবাদীদের সুরে সুর মিলিয়ে মুসলিম শাসনকে দখলদারিত্ব ও উপনিবেশিক শাসন বলা হয়েছে। ইতিহাসে খ্যাত স্বাধীন সুলতানি আমল ও বারো ভুঁইয়াদের গৌরবময় ইতিহাসকেও অস্বীকার করা হয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জোড়ালোভাবে এর প্রতিবাদ জানাচ্ছে ।
তিনি আরও বলেন, আমরা সুস্পষ্টভাবে জানাতে চাই যে, বাংলা একটি রাজনৈতিক একক ভূখণ্ড হিসেবে গড়ে উঠেছে মুসলামানদের হাতে এবং বাংলা ভাষার আশ্রয় ও বিকাশও হয়েছে মুসলমানদের হাতে, এটা ইতিহাসের সত্য ঘটনা। এই ঘটনার বাইরে গিয়ে বিদেশী উদ্দেশ্য প্রনোদিত কোন মিথ্যা ইতিহাস বাংলাদেশে চলতে দেয়া যায় না। একই সাথে আমরা দাবি জানাচ্ছি যে, পাঠ্যপুস্তকের এই মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রনোদিত বিকৃতি যারা আমাদের শিশুদের পাঠ্যপুস্তকে সংযুক্ত করেছেন তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মুফতী সৈয়দ এছহাক মুহাম্মাদ আবুল খায়ের, কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা বরিশালের প্রভাবশালী আলেম মাওলানা ওবাইদুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগর সেক্রেটারী মাওলানা সৈয়দ নাসির আহমেদ কাওছার, জয়েন্ট সেক্রেটারী মাওলানা আবুল খায়ের আশ্রাফী সাংগঠনিক সম্পাদক মুওলানা শাহাদাত নূরী সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নাসির উদ্দিন নাইস, প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক মুহাম্মাদ এনামুল হক শামীম রাঢ়ী, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা আলী আকবার।
এ ছাড়াও দফতর সম্পাদক খোন্দকার মাহবুব রব্বানী, অর্থ সম্পাদক এইচ এম হাসানুজ্জামান মিরাজ, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক, আইনবিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. শেখ আব্দুল্লাহ নাসের, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বরিশাল মহানগর সভাপতি মুহাম্মাদ ফজলুর রহমান, ইসলামী যুব আন্দোলন বরিশাল মহানগর সভাপতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগর এর সভাপতি মুহাম্মাদ জাহিদুল ইসলাম সহ নগর ও থানা নেতৃবৃন্দ প্রমূখ।
সম্মেলন শেষে ২০২৩-২৪ সেশনের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে
সভাপতি-মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম
সহ-সভাপতি-মাওলানা সৈয়দ নাছির আহমেদ কাওছার
সেক্রেটারী-অধ্যাপক মাওলানা জাকারিয়া হামিদী।
এন.এইচ/