মুহাম্মাদ ফরহাদ মোল্লা, খুলনা প্রতিনিধি :
রূপসায় দেবীপুর পদ্মবিলে রূপসা-বাগেরহাট পুরাতন সড়ক সংলগ্ন এলাকায় কামরুল ইসলামের সাড়ে ৮ বিঘা জমির উপর একটি চিংড়ি মৎস্য ঘেরে দুর্বৃত্তদের বিষপ্রয়োগ করার ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী দেবীপুর গ্রামের মোঃ আইয়ুব আলী শেখের পুত্র।
কামরুল ইসলাম সূত্রে জানা যায়, গত ১১ অক্টোবর মঙ্গলবার দিবাগত রাত্রে এই ঘটনা ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। প্রতিদিনের ন্যায় মোঃ কামরুল ইসলাম ঘের পাহারা দেয়ার জন্য ঘেরের ঘরে রাত দশটার দিক শুয়ে পড়েন। অন্যান্য দিন সে ভোর সাড়ে চারটায় ঘুম থেকে উঠে পার্শ্ববর্তী মসজিদে নামাজ আদায় করে পাশের একটি দোকান থেকে সকালে চা- বিস্কুট খেয়ে তারপর বাড়িতে যায়। কিন্তু ঘটনার দিন সকাল সাতটার পরে ঘুম থেকে উঠে ঘুম জড়িত চোখে বাড়ি যেয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়েন। পরিবারের সদস্যরা তাকে ডেকে তুলে মাছের খাবার দিয়ে ঘেরে পাঠালে তিনি ঘেরে এসে আবারও ঘুমিয়ে পড়েন। দুপুর দেড়টায় সময় পার্শ্ববর্তী ঘের মালিক ফারুক মোল্লা ও শহীদ শেখ তার ঘেরে মাছ মরা দেখে তাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন।
ভুক্তভোগীর বক্তব্য, তাকে ঐ দিন ঘুমে অচেতন করার জন্য যেকোনো ধরনের অচেতনমূলক স্প্রে প্রয়োগ করে তারপর দুর্বৃত্তরা তার ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে গলদা চিংড়ি মাছ চুরি করে নিয়ে যায়। এবং বাকি মাছ দিনের বেলা মরে ভেসে উঠেছে। এ থেকে তার তিন লক্ষাধিক টাকার মাছের ক্ষতি হয়েছে।
ভুক্তভোগী ঘের মালিক কামরুল ইসলাম আরো বলেন, কে বা কারা আমার ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে আমার ক্ষতি করেছেন তা জানি না ।
তবে তিনি বলেন, জায়গা জমি নিয়ে তার সাথে কতিপয় ব্যক্তিদের বিরোধের সূত্র ধরে কোর্টে একটি মামলা এবং থানায় অভিযোগ করা ব্যক্তিদের সন্দেহ করছি । তারা হলেন- দেবীপুর গ্রামের মোঃ রশিদ মোড়লের পুত্র মোঃ আব্দুল ইউসুফ (২৬), খালেক শেখের পুত্র কামাল শেখ (৩১) ও মৃত নারায়ণ চন্দ্র পালের পুত্র সুভাষ কুমার পাল(৫৫)। এই তিনজনের নামে ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে ফৌজদারী কার্যবিধির ১০৭ ও ১১৭ ধারায় একটি মামলা চলমান রয়েছে। এছাড়াও উক্ত ঘের নৈহাটি গ্রামের মোঃ মোজাফর শেখের নিকট তিন বছরের লিজ দেওয়া কালির সময় ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের ২০ তারিখে মাছ লুট করে নেওয়া ও মারপিট করার অভিযোগে ২১ ডিসেম্বর-২০২১ তারিখে রূপসা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছিল। মামলার বিবাদী উক্ত তিন ব্যক্তিসহ দেবীপুর গ্রামের সবুর শেখের পুত্র মহাসিন শেখ (৪২) এই চারজনের নাম উল্লেখ করে। এরা আমাকে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে পঙ্গু করার জন্য আমার ঘিরে বিষ প্রয়োগ করতে পারে বলে আমি ধারণা করছি।
এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দেবীপুর গ্রামের ওহাব শেখের পুত্র আরিফুল শেখ বলেন, কামরুল শেকের ঘিরে কে বা কাহারা বিষ প্রয়োগ করেছে। যা ফলে উনার অনেক মাছ মারা গেছে, তবে উনার সাথে দেবীপুর গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তির দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে তা অনেকেই জানে।
ভুক্তভোগী কামরুল শেখ এর কাছে এ ঘটনায় আইনের আশ্রয় নিয়েছেন কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমাকে যেহেতু চেতনা নাশক দিয়ে স্প্রে করেছে। আমি এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে পারিনি। তবে থানায় যোগাযোগ করেছি। এ ব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। যারা আমার ঘিরে বিষ প্রয়োগ করেছেন। তারা শুধু আমার ক্ষতি করেননি। তারা দেশের অর্থনীতিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। মানুষের মৎস্য চাহিদার ব্যাঘাত ঘটিয়েছেন। আমি প্রশাসনের কাছে তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।