মিনহাজ আবেদিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: রাজশাহীতে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় আয়েশা খাতুন নামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। রোববার ( ১৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ০৩ টার দিকে মতিহার থানার নতুন বাইপাস রোডের পশ্চিম বুধপাড়া চৌরাস্তার মোড়ে এঘটনাটি ঘটে।
আহত শিক্ষার্থী আয়েশা খাতুন বিশ্বিবদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। তিনি বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতলের ১নং ওয়ার্ডের চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা যায়, রোববার বিকাল সাড়ে ০৩ তিন টার দিকে রাবি থেকে রিকশায় করে বাড়ি যাচ্ছিল ওই শিক্ষার্থী। যখন চৌরাস্তার মোড়ে রাস্তা পার হচ্ছিল তখন প্রাইভেটকার ও অটোরিকশা মুখোমুখি ধাক্কা খেলে রিকশা ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২০ হাত দূরে গিয়ে পড়ে। এসময় রিকশায় থাকা ওই শিক্ষার্থী দুই পা, কোমরসহ মাথায় প্রচন্ড আঘাত পায়।
ভুক্তভুগীর সহপাঠী রাকিব জানান, ‘আমরা জেনেছি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েরই ক্রপ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক খায়রুল ইসলামের ছেলে শামিম ড্রাইভিং করতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। শামিম রাজশাহী কলেজ পড়াশোনা করছে। ইন্টার ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। শামিমের কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। এরপরও তাকে দিয়ে কেন ড্রাইভিং করানো হলো, এটার সঠিক জবাব চাই। তার বেপরোয়া ড্রাইভিংয়ের কারণেই আয়েশা গুরুতর আহত হয়েছে। তার চিকিৎসার পূর্ণব্যয়ভার বিশ্বিবদ্যালয়কেই বহন করতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র উপদেষ্টা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমাদের ছাত্রী সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে, এটা শুনেই আমি হাসপাতালে গিয়েছি। তার দেখাশুনা করছি। তার বাম পায়ের হাড় ভেঙে গেছে, ডান পায়েও আঘাত পেয়েছে। আর মাথায় এক ইন্সি পরিমাণ ক্ষত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘রাবির ক্রপ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক খায়রুল ইসলামের ছেলে শামিম প্রাইভেটকার ড্রাইভিং করাকালীন তার গাড়ির সঙ্গে রিকশায় থাকা আমাদের ছাত্রী গুরুতর এক্সিডেন হয়। ছেলের বাবার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, তাকে বলা হয়েছে, মেয়ের সকল প্রকার চিকিৎসার ব্যায়ভার বহন করতে।’
এবিষয়ে কথা হয় মেয়ের বাবা আনোয়ারের সঙ্গে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কোষাধ্যক্ষ ড. অবায়দুর রহমানের বাড়িতে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কর্মরত। তিনি জানান, ‘মেয়ের চিকিৎসার ব্যয়ভার তারা নিচ্ছে। আর আমি যেহেতু কোষাধ্যক্ষের অধীনে কাজ করছি, তাই তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবে সেটা আমি মেনে নেবো। মামলার বিষয়েও তিনি একই কথা বলেছেন।’
এবিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ছেলের পরীক্ষা চলছে। সেও একটু তাড়াহুড়ার মধ্যে ছিল। তবে ওখানে রিকশাওয়ালারই দোষ ছিল। আমার ছেলেও ক্ষত হয়েছে। সেও হাসপাতালে ভর্তি আছে। আয়েশা নামে যে মেয়েটি আহত হয়েছে আমি তার দেখাশুনা করছি। তার পাশেই আমি আছি এবং তার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করব।’
ছেলের ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকা সত্ত্বেও কেন তাকে দিয়ে ড্রাইভিং করানো হয়েছে, এ প্রশ্নের উত্তরে খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ছেলে ড্রাইভিং শিখেছে, ও ভালো গাড়ি চালাতে পারে। এরপরও তার সঙ্গে একজন লাইসেন্সধারী ছিল। দূর্ঘটনার বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত।’
হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক জানান, দুর্ঘটনার শিকার দু’জনই গুরুতর আহত হয়েছেন। শিক্ষার্থীর পা ভেঙ্গে গেছে ও মাথায় গভীর খত হওয়ায় ৪ টি সেলাই দেওয়া লেগেছে।






