ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর নায়েবে আমীর, মুফতি ফয়জুল করীম বলেছেন, রক্তে কেনা ৫০ বছরের বাংলাদেশ; কিন্তু সেই দেশটা এখন অদক্ষ মন্ত্রী, ভোটচোর সরকার, দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী-আমলা, অসৎ ব্যবসায়ী আর চাঁদাবাজ-মাস্তানদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। দেশে উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়ে সরকার দলীয় মধ্যস্বত্বভোগী ও চাঁদাবাজদের দৌরাত্বে। আমদানীকৃত পণ্যের দাম বাড়ে অসৎ ব্যবসায়ীদের কারসাজীতে। প্রশাসন বখরা পেয়ে চুপ থাকে এবং জালিয়াতদের নিরাপত্তা দেয়। মন্ত্রীর মতলবাজী বিশ্বাসে বাজার থেকে পণ্য উধাও হয়ে যায়। এই দুষ্টচক্রের ফেরে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ অবস্থা তৈরি হয়েছে।
আজ (১৩ মে) শুক্রবার রংপুর কালেক্টরিয়েট ঈদগাহ ময়দানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রংপুর বিভাগ আয়োজিত বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, নাগরিকদের অন্ন, বস্ত্র, নিরাপত্তা, শিক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য যে সরকার বাংলাদেশে সেই সরকারই অবৈধভাবে ক্ষমতায় চেপে বসে আছে। ভোটবিহিন নির্বাচন করে তারা রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে লুটপাট চালাচ্ছে।
মুফতি ফয়জুল করীম আরো বলেন, জনগণের প্রতি দায়িত্বহীন এই সরকার মানুষের মন থেকে নাগরিকবোধ দূর করে মানুষকে মোহাচ্ছন্ন করার অশুভ চিন্তায় মদের লাইসেন্স দেয়ার আড়ালে মাদককে সহজলভ্য করছে। অনৈতিকভাবে ক্ষমতা দখল করা এই সরকার নানা ছলচাতুরি করে শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ইসলামকে ক্রমান্বয়ে সরিয়ে দিচ্ছে। ডারউনের মিথ্যাচারকে বিজ্ঞানের নামে শিক্ষার্থীদের পড়তে বাধ্য করছে। বিজ্ঞানের এই উৎকর্ষের যুগে এরা কল্পকথাকে বিজ্ঞানের নামে চালিয়ে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে এই সরকার ও এদের দেশি-বিদেশি দোসররা বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থের বিরুদ্ধে বহুমাত্রিক চক্রান্তকরে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশকে একটি নৈতিকতাহীন মাদকাচ্ছন্ন, ক্ষুধাতুর দেশে পরিনত করছে। এই অবস্থা চলতে দেয়া যায় না। আমরা জীবন-রক্ত দিয়ে এদেশকে স্বাধীন করেছি। আমাদের চোখের সামনে এই দেশটা শেষ হয়ে যাবে তা বরদাস্ত করা হবে না।
মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, দেশে নির্বাচনের সময় আসলেই অশুভ কিছু গোষ্টি মাথাচাড়া দেয়। এবারও সেই প্রবনতা দেখা যাচ্ছে। দেশের মানুষের প্রধান সমস্যা যখন দুমুঠো খাবার জোগারের চিন্তা ও ভোটাধিকার ফিরে পাওয়া তখন একটি গোষ্টি কৃত্রিমভাবে জঙ্গিবাদকে দেশের প্রধান সমস্যা আকারে হাজির করার পায়তারা করছে। দেশে যখন স্থানীয় নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের দলীয় হানাহানিতে শতশত মানুষ মারা যাচ্ছে তখন তারা কথিত সাম্প্রদায়য়িকতাকে ইস্যু আকারে উপস্থান করছে।
তিনি বলেন, দেশে যখন সরকারদলীয় ব্যক্তি ও সরকারের কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির খবরে মানুষ অতিষ্ট তখন এরা উলামাদের আর্থিক লেনদেন নিয়ে হাউকাউ শুরু করেছে। জাতি এই ধান্ধাবাজ অশুভ গোষ্ঠিকে চেনে। কারা এদেরকে অর্থায়ন করে, তাদের মতলব কি তা মানুষ জানে। এরা হলো দুর্নীতির দোসর, লুটপাটের দোসর। এরা মানুষের ভাত-ভোটের অধিকার হরণকারীদের ছা-পোষা বুদ্ধজীবি, এরা দুষ্ট প্রতিবেশির পা-চাটা গোলাম।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ তাদেরকে পাত্তা দেয় না। গুটিকয়েক মতলববাজী মিডিয়ার হুল্লোড় ছাড়া এদের কোন জনভিত্তি নাই। জনতা এদেরকে প্রতিহত করবে।