পবিত্র হজ্ব আজ। ৯ জিলহজ্ব আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের দিনকেই হজ্বের দিন বলা হয়। এ দিনের নাম ইয়াওমুল আরাফাহ। ‘লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে আজ আরাফাতের ময়দান মুখরিত হবে। সার বিশ্বের প্রায় পঁচিশ লাখ মানুষ এবার হজ্বে অংশ নিচ্ছেন।
পবিত্র হজ্বের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে মিনায় মুসল্লিদের জড়ো হওয়ার মধ্য দিয়ে। সোমবার ৮ জিলহজ্ব সকাল থেকে মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও রোববার দুপুরে পবিত্র কাবা শরিফ তাওয়াফের পর বিকেল থেকেই হাজিরা মক্কা থেকে আট কিলোমিটার দূরের মিনার উদ্দেশে কেউ হেঁটে, কেউ গাড়িতে চড়ে রওনা দেন। এ সময় গুঞ্জরিত হয় তালবিয়া- ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক। লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক। ইন্নালহামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।’ মিনায় পৌঁছে হাজীরা ফজর থেকে শুরু করে এশা অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করেন নিজ নিজ তাঁবুতে।
আজ মঙ্গলবার হাজীরা আরাফাহ ময়দানে সমবেত হবেন। তবে গতকাল রাতেই অনেকে মিনা থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানের দিকে রওনা হন। আরাফাতে যাওয়ার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে মুসল্লিরা হেঁটে, হুইল চেয়ারে, বাসে- যে যেভাবে পারেন পৌঁছাবেন। সেখানেই হজ্বের মূল আনুষ্ঠানিকতা হবে। মিনা থেকে এসে হাজিরা এখানে খুতবা শোনার পর একই সাথে জোহর ও আসরের সালাত সংক্ষিপ্তভাবে আদায় করবেন। এ বছর আরাফাতের ময়দানে হজ্বের খুতবা দেবেন শায়খ ড. ইউসুফ বিন মুহাম্মদ বিন সাঈদ। একই সাথে তিনি মসজিদে নামিরাতে নামাজ পড়াবেন।
হজ্বের নিময় অনুসারে, আজ সূর্যাস্তের পর হাজীরা মাগরিবের সালাত আদায় না করেই আরাফাতের ময়দান থেকে রওনা দেবেন প্রায় আট কিলোমিটার দূরে মুজদালিফার দিকে। সেখানে পৌঁছে মাগরিব ও এশার সালাত একসাথে আদায় করবেন তারা। এখানে খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন করবেন।
তারপর মিনার জামারায় শয়তানকে (প্রতীকী) নিক্ষেপের জন্য পাথর সংগ্রহ করবেন। এরপর ফজরের সালাত শেষে মুজদালিফা থেকে আবার মিনায় ফিরবেন হাজিরা। মিনায় প্রত্যাবর্তনের পর ওই দিন (১০ জিলহজ্ব ) হাজীদের পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ সম্পন্ন করতে হয়। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ, আল্লাহর উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি, মাথা মুণ্ডন করা এবং তাওয়াফে জিয়ারত। এরপর ১১ ও ১২ জিলহজ্ব মিনায় অবস্থান করে প্রতিদিন তিনটি প্রতীকী শয়তানকে সাতটি করে পাথর নিক্ষেপ করবেন হাজীরা। সর্বশেষে কাবা শরিফে বিদায়ী তাওয়াফের মধ্য দিয়ে শেষ হবে হজ্বের আনুষ্ঠানিকতা।