মোকলেছুর রহমান, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে দুই স্কুলছাত্রকে বলৎকারের অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় সোমবার (২২ মে) বিকালে থানায় মামলার এজাহার দিয়েছে ভুক্তভোগী দুই ছাত্রের পরিবার।
এর আগে সোমবার দুপুরে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে দুই ছাত্রকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম জয়ন্ত কুমার মোহন্ত।তিনি ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং একই ইউনিয়নের পূর্ব পানিমাছকুটি গ্রামের বাসিন্দা।
এ ঘটনায় তাকে ছাত্রলীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ।
ভুক্তভোগী দুই ছাত্রের পরিবারের দাবি, গতকাল রবিবার (২১ মে) জয়ন্ত মোবাইল ফোনে কল করে ওই দুই ছাত্রকে তাঁর দোকানে ডাকেন।তাঁর কল পেয়ে তাঁরা আরও দুই বন্ধুসহ উপজেলা গেটে জয়ন্তের দোকানে যায়।
তাদের নিজ বাড়িতে নিয়ে যান অভিযুক্ত।এরপর তিন বন্ধুকে বাড়ির পাশের দোকানে চা-নাশতা করতে পাঠিয়ে দেন।
এ সুযোগে এক ছাত্রকে বাড়িতে নিয়ে গলায় ছুরি ধরে ভয় দেখিয়ে বলৎকার করেন।কিছুক্ষণ পর বন্ধুরা খুঁজতে এলে জয়ন্ত আরেক ছাত্রকে আটক করেন।এতে অপর দুই জন পালিয়ে যায়।
এরপর দ্বিতীয় ছাত্রের গলায় ছুরি ধরে বলৎকার করে পরে ভুক্তভোগীরা বাড়িতে ফিরে অসুস্থবোধ করলে, তাদের অভিভাবকদের জিজ্ঞাসায় ঘটনা খুলে বলে।
সোমবার দুপুরে তাদের ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।সেইসঙ্গে বিকালে অভিভাবকরা থানায় মামলার এজাহার দেন।
ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. আনোয়ার বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, বলৎকারের চেষ্টা করা হয়েছে।কিছু আলামত রয়েছে। ভুক্তভোগীদের কুড়িগ্রাম হাসপাতালে পাঠিয়েছি আমরা।
তবে বিষয়টিকে প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা।তাঁর দাবি, আমি একা একই সময়ে দুই কিশোরকে বলাৎকার করতে পারি?
এটা সম্পূর্ণ বানোয়াট, আমি ওই চার কিশোরের সঙ্গে তাদের সাইকেলে করে রবিবার দুপুরে বাড়িতে গিয়েছিলাম, এটা সত্যি।তাদের বাড়ির বাইরে দাঁড় করিয়ে গোসল শেষে আবার তাদের সাইকেলে দোকানে ফিরেছি।
ওই সময় আমার মা-বোন বাড়িতে ছিল।এই নেতা আরও দাবি করেন,ফেরার পর ওই চার জন আমার সঙ্গে দোকানে চা-নাশতা খেয়েছে।রাতেও তাঁরা আমার দোকানে এসেছিল।
আজ সকালে শুনি, আমার বিরুদ্ধে বলৎকারের অভিযোগ।এটা প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র, আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তৌকির হাসান তমাল বলেন, আমাদের কাছে এটা ষড়যন্ত্র মনে হচ্ছে।
তারপরও আমরা জয়ন্তের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।কারও ব্যক্তিগত অভিযোগের দায় সংগঠন নেবে না।
ফুলবাড়ী থানার ওসি ফজলুর রহমান বলেন, দুই কিশোরের অভিভাবকরা থানায় মামলার এজাহার দিয়েছেন।মামলা নথিভুক্তের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।