ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী রেজাউল করীম বলেছেন, যে কোন রাষ্ট্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল স্থিতিশীল ও ভারসাম্যপূর্ণ হওয়া। এই দুইগুন না থাকলে রাষ্ট্রের বিকাশ, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি থমকে যায়। রাষ্ট্রের উন্নয়ন ব্যাহত হয়। বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য যে, স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও বাংলাদেশ স্থিতিশীল না; ভারসাম্যপূর্ণ না। যার খেসারত দিচ্ছে রক্তে কেনা বাংলাদেশের কোটি জনতা।
আজ (১৯ এপ্রিল) বুধবার বরিশালে সাংবাদিকদের সাথে আলোপকালে চরমোনাই পীর এসব কথা বলেন। এ সময় চরমোনাই মাদরাসার শিক্ষক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
চরমোনাই পীর বলেন, ৫২ বছরের একটি দেশ অথচ দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি চূড়ান্ত রকমের অস্থিতিশীল। নির্বাচন কমিশনসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আজও প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করা যায় নাই। যে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল জনতা ভোটাধিকার প্রয়োগের উৎসব; তা আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তার মহড়ায় পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতাকেন্দ্রীক দ্বন্দ্বে এতটাই বেপরোয়া যে, ৫ বছর পর পর নির্বাচনের সময় দেশে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়। অন্যদিকে ভারসাম্যহীনতা সর্বত্র। অর্থনীতিতে একদিকে আকাশচুম্বি জিডিপি অন্যদিকে টিসিবি’র পণ্য কিনতে ট্রাকের পেছনে ছুটছে ক্ষুধাতুর মানুষ। একদিকে কোটিপতির সংখ্যা বাড়ছে অন্যদিকে ৪৪ শতাংশ মানুষ খাবারের বাজেট কমাতে বাধ্য হচ্ছে। ক্ষমতা সংশ্লিষ্টরা রাষ্ট্রের সম্পদ চুরি করে বিদেশে পাচার করছে অন্যদিকে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের তুচ্ছ কারণে জেলে পাঠানো হচ্ছে। ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে যা খুশি করছে আর সাধারণ নাগরিকরা কথা বলার অধিকার থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে।
চরমোনাই পীর বলেন, এই অস্থিতিশীলতার মূল কারণ ইসলামী অনুশাসন মান্য না করা। ব্যক্তি জীবনে ইসলামের নির্দেশনা মেনে লোভ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা, ক্ষমতার মোহ, দুনিয়ার মোহ দূর করে তাকওয়া, খোদাভীতি, কল্যাণকামিতা, অল্পে তুষ্টি অর্জন করতে পারলে এই পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি হতো। একই সাথে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ইসলামের অনুশাসন মেনে দেশ পরিচালনার বিষয়কে ক্ষমতা মনে না করে দায়িত্ব মনে করলে, জনতা ও আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করার মনোভাব রাখলে, হযরত আবু বকর রাদি. এর মত দায়িত্ববান হলে, হযরত ওমর রাদি. এর মত স্বচ্ছ হলে হযরত ওসমান রাদি. এর মত কল্যাণকামী হলে এবং হযরত আলী রাদি. এর মত ন্যায়পরায়ন হলে বাংলাদেশ আজ স্থিতিশীলতা অর্জন করতে পারত, ভারসাম্যপূর্ণ হত রক্তে কেনা বাংলাদেশ।
এস.আই/