পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, পাকিস্তান বর্তমানে এক “ডিফাইনিং মোমেন্টে” আছে। মুসলিমরা কারো দাস নয়, কারো কাছেই মাথা নত করব না আমরা।
শুক্রবার (১ এপ্রিল) দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদে ‘ইসলামাবাদ নিরাপত্তা সম্মেলনে’ দেয়া এক ভাষণে ইমরান এসব কথা বলেন।
জিও টিভি ও এআরওয়াই নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী ভাষণে ইমরান খান বলেন, আমি আপনাদের বলতে চাই কেন আমার মতো একজন মানুষ রাজনীতিতে এসেছে। আল্লাহ আমাকে সব দিয়েছেন। খ্যাতি দিয়েছেন। অর্থ দিয়েছেন। তাই আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। একটি স্বাধীন দেশে জন্মগ্রহণকারী প্রথম প্রজন্মের মানুষ আমি।
তিনি বলেন, আমার থেকে পাকিস্তানের বয়স ৫ বছর বেশি। দাসত্বের সময়কালে জন্মেছিলেন আমার পিতামাতা। তারা আমাকে বুঝতে শিখিয়েছিলেন যে, একটি স্বাধীন দেশে জন্মাতে পেরেছি, এ জন্য আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। আমি রাজনীতিতে এসেছি। তবে দুঃখের সঙ্গে বলছি, আল্লামা ইকবাল যেমন স্বপ্ন দেখেছিলেন, কায়েদে আযম ভগ্ন স্বাস্থ্য নিয়ে যে দেশের জন্য লড়াই করেছিলেন, সেই পাকিস্তান কখনো হবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান রাষ্ট্রের মূল উদ্দেশ্যই ছিল একটি ইসলামিক কল্যাণময় রাষ্ট্র হবে, যেমনটা দেখা যায় মদিনায়। যখন আমি রাজনীতি শুরু করি আমার ম্যানিফেস্টোতে তিনটি জিনিস যুক্ত করেছিলাম। প্রথমটি হলো ন্যায়বিচার। যার অর্থ হলো শক্তিধর এবং দুর্বল সবার জন্য একই আইন কার্যকর থাকবে। দ্বিতীয়ত রাষ্ট্রে থাকবে মানবতা। কারণ, একটি ইসলামিক রাষ্ট্রে থাকবে দয়া, সহানুভূতি। তৃতীয়ত থাকবে খুদ্দারি (ব্যক্তিত্ব)। কারণ, মুসলিম জাতি কোনো দাস হতে পারে না। আল্লাহ যদি আমার প্রতি সন্তুষ্ট না থাকতেন তাহলে আমি রাজনীতিতে প্রবেশ করতে পারতাম না।
ইমরান বলেন, আমি ১৪ বছর চেষ্টা করেছি। লোকজন বার বার আমার কাছে জানতে চেয়েছেন কেন রাজনীতিতে এলাম। একটি আদর্শের কারণে রাজনীতিতে এসেছি। যখনই রাজনীতিতে যোগ দিয়েছি, তখন থেকে সব সময়ই বলেছি, আমি কারো কাছে আমার মাথা নত করবো না। জাতিকেও মাথা নত করতে দেব না। এর অর্থ মুসলিম জাতিকে কারো দাস হতে দেব না। এই অবস্থান থেকে কখনো আমি সরে যাইনি।
তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমার পররাষ্ট্রনীতি হবে স্বাধীন। এটা হবে পাকিস্তানের জন্য। এর অর্থ এই নয় যে, আমরা শত্রুতা চাই। যখন আমি সরকার পেয়েছি তখন বলেছি, আমাদের পক্ষে যাবে না এমন কোনো পররাষ্ট্রনীতি আমাদের হবে না।
উল্লেখ্য: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে দেশটির সংসদে ৩ এপ্রিল অনাস্থা ভোট হবে। এই ভোটে হেরে গেলে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হবে। ইমরান খানকে সরিয়ে দিতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে দেশটির বিরোধী দলগুলো। তবে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে সরকারকে উৎখাতের চেষ্টার সঙ্গে বিদেশি শক্তির ষড়যন্ত্রে জড়িত বলে অভিযোগ তুলেছেন ইমরান খান। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে আমেরিকার নাম উল্লেখ করেছেন ইমরান খান।
সূত্র : ডেইলি টাইমস পিকে, হিন্দুস্তান টাইমস, জিও টিভি ও এআরওয়াই নিউজ।






