মুহাম্মাদ আব্দুল আওয়াল:
সাহসী ইসলাম ধর্মপ্রচারক, কর্মবীব, অনলবর্ষি বক্তা, যুক্তিবাদী তার্কিক, সংগ্রামী আর প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর, ক্ষণজন্মা মুন্সী মেহেরুল্লাহ’র আজ ১৬০তম জন্মদিন। তার বাড়ি যশোর সদরের চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলা গ্রামে।
বাংলা ১২৬৮ সালের ১০ পৌষ হিসাবে আজ -আর ইংরেজী ১৮৬১ সালের ২৫ ডিসেম্বর তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১৩১৪ সালের ২৪ জৈষ্ঠ আর ইংরেজী ১৯০৭ সালে তিনি ৪৬ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।
তৎকালীন সময়ে খ্রীষ্টান পাদ্রীরা ভারতীয় উপমহদেশের বিশেষ করে মসুলমানদের আর্থীক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে খ্রীষ্টান ধর্মে ধর্মান্তারিত করছিল । মেহেরুল্লাহ একা একা পাদ্রীদের সাথে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে যুক্তিপূর্ণ বাহাসের মাধ্যমে সংগ্রাম আর চরম সাহসের মধ্য দিয়ে প্রতিরোধ করে ইসলামে নবজাগরণের সৃষ্টি করেছিলেন।
মেহেরুল্লাহ’র সে রকম একটি যুক্তিপূর্ণ উপস্থিত বুদ্ধি আপনাদের জন্য-
কার নবীর ওজন বেশি:
“কে আল্লাহর কাছে প্রিয়। আল্লাহর কাছে কার ওজন বেশি। হযরত মোহাম্মাদ ( সঃ) এর না যীশু খ্রীষ্ট্রের “।
এ বিষয় নিয়ে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে মঞ্চে মেহেরুল্লাহ ও পাদ্রীদের সাথে চরম পর্যায়ে বাহাস চলছে ।
মেহেরুল্লাহর যুক্তিপূর্ণ বক্তব্যের শ্রোতে খড় কুটোর ন্যায় ভেসে যাচ্ছে পাদ্রীরা ।
মেহেরুল্লার যুক্তিপূর্ণ বক্তব্য খন্ডন করতে না পেরে পাদ্রীরা “মেঠো” প্রশ্ন ছুড়ে দিলো মেহেরুল্লার কাছে…
“আমাদের নবী যীশু আল্লার কাছে বড়ো ওজন ওয়ালা (মর্যাদাবান) বলে আল্লাহ তাকে আসমানে নিজের কাছে উঠিয়ে নিয়েছেন। আর আপনাদের নবী মোহাম্মদ (সঃ) কম ওজন ওয়ালা বলে আল্লাহ তাকে দুনিয়ার মাটির কবরে রেখেছেন “।
মুন্সি সাহেব এবার বলুন – ওজন ওয়ালা আপনার নবী মোহাম্মদ (সঃ), না আমাদের নবী যীশু ?
এ প্রশ্নে পুরো জনতার ভিতরে কবরের নিরবতা নেমে এলো। সকলে হতাশ- এর কোনো জবাব দিতে পারবে না মুন্সি।
নিরবতা ভেঙে মেহেরুল্লাহ আয়োজকদের একটা দাড়িপাল্লা সাথে “একসের ” ও “পাঁচ” সের আনতে বললেন।
দাড়িপাল্লার দু’পাশে পাঁচ সের ও একসের চাপিয়ে দিয়ে উঁচু করতেই এক সেরের পাল্লা উপরে উঠে গেলো আর পাঁচ সেরের পাল্লা রইলো মাটিতে।
এবার সমবেত জনতাকে মেহেরুল্লাহ প্রশ্ন করলেন…
” ভাই সকল যার ওজন বেশি- সে কি আকাশে আল্লাহর কাছে থাকেন, না মাটিতে কবরে শুয়ে থাকেন “?
এ ঘটনায় মসুলমানরা তো আনন্দে চিংড়ি মাছের ন্যায় নাচতে লাগলো। আর মাথা নিচু করে পাদ্রীরা ছাড়লো মঞ্চ।






