মক্কা মুকাররমার পবিত্র মসজিদুল হারামে প্রথম জুমার নামাজের ইমামতি করলেন শায়খ ড. ইয়াসির আল-দাওসারি। এর আগে তিনি ইসলামের প্রধান এই মসজিদের ইমাম ছিলেন। জুমার নামাজ পড়ানোর মাধ্যমে শায়খ দাওসারি খতিব হিসেবে অভিষিক্ত হলেন।
শুক্রবার পবিত্র কাবা প্রাঙ্গনে স্থাপিত মিম্বরে দাঁড়িয়ে খুতবা ও এরপর নামাজ পড়ানোর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ইমামতির সাথে সাথে খেতাবতের দায়িত্বও পালন করলেন তিনি।
এর আগে গত ৭ ডিসেম্বর সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের সম্মতিক্রমে মক্কা ও মদিনার পবিত্র দুই মসজিদের পরিচালনা পর্ষদের প্রধান শায়খ ড. আবদুর রহমান আল-সুদাইস তাকে নিয়োগের ঘোষণা দেন। ইসলামের প্রধানতম মসজিদের মিম্বর থেকে বিশ্বের মুসলিমদের কাছে ইসলামের সাম্য-সম্প্রীতি ও মধ্যপন্থার বার্তা পৌঁছে দিতে তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে জানান শায়খ সুদাইস।
শুক্রবার জুমার খুতবায় শায়খ ইয়াসির আল-দাওসারি তাওহিদের গুরুত্ব তুলে ধরেন। শিরিক থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একমাত্র মহান আল্লাহর ইবাদত করা এবং তাঁকে সৃষ্টিকর্তা ও একমাত্র প্রতিপালক হিসেবে বিশ্বাস করা একজন মুসলিমের প্রধান কর্তব্য। এটি ছিল যুগে যুগে সব নবী-রাসূলের দাওয়াতের প্রধান লক্ষ্য।’ এরপর তিনি পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন আয়াতের আলোকে এর ব্যাখ্যা তুলে ধরেন।
শায়খ ড. ইয়াসির দাওসারি ১৯৮০ সালে সৌদি আরবের আল-খারাজ প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা-মায়ের কাছে প্রাথমিক পড়াশোনা শেষ করে স্থানীয় মাদরাসায় হিফজ করেন। এরপর প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তর শেষ করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি কিং আবদুল আজিজ মিলিটারি একাডেমিতে স্নাতক স্তরে এক বছর পড়েন। সেখানের পড়াশোনা শেষ না করেই ইমাম মোহাম্মদ বিন সাউদ ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে শরিয়াহ বিভাগে ভর্তি হন এবং ২০০২ সাল থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। ২০০৮ সালে ফিকাহ বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের হায়ার ইনস্টিটিউট অব জুডিশিয়ারি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
এরপর তার কর্মজীবন শুরু হয়। পড়াশোনা শেষে রিয়াদের বিভিন্ন মসজিদে ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সাল থেকে তিনি মক্কার পবিত্র মসজিদুল হারামে পাঁচ বছর পর্যন্ত রমজান মাসে তারাবি ও তাহাজ্জুদ নামাজের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সাল থেকে তিনি মসজিদুল হারামের নিয়মিত ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২২ সালে মক্কার উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়াহ বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যুক্ত হন।
এদিকে একই দিন পবিত্র মসিজদে নববিতে নতুন খতিব হিসেবে অভিষিক্ত হন শায়খ খালিদ আল-মুহান্না। তিনিও ওই দিন ইসলামের দ্বিতীয় পবিত্রতম মসজিদে প্রথম বার জুমার খুতবা ও নামাজ পড়িয়েছেন।
সূত্র : হারামাইন শারিফাইন ও অন্যান্য