ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ২০২৩ এর মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তকে তথ্য ও বানানগত ভুল এবং ভাষাগত আগ্রাসন চালানো হয়েছে। বিভিন্ন বই বিশ্লেষণ করে দৃষ্টিগোচর হযেছে যে, পাতায় পাতায় ইংরেজী ও বাংলা বানানে ভুল, শাব্দিক অর্থে ভুল, ইতিহাসের তথ্যে ভুল, বঙ্গবন্ধুর পিতার নামে ভুল। এ সমস্ত ভুলে ভরা পাঠ্যবই শিশুদের পাঠদান করা হলে শিশুরা ভুল শিখবে।
আমরা আরও উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছি, বইয়ের বিভিন্ন গল্পের উদাহরণে যেসব চরিত্র ব্যবহার করা হয়েছে তাদের অধিকাংশের নামে দেশীয় ছাপ নেই বরং সুকৌশলে পাশ্চাত্য এবং ভারতীয় বিভিন্ন নাম ব্যবহার করে সাংস্কৃতিক অগ্রাসন চালানো হয়েছে ।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, সার্বিক পর্যালোচনায় এমন বহু বিষয় আছে যা এদেশের মানুষের বোধ-বিশ্বাস, সামাজিক পুজির সাথে সাংঘর্ষিক। বিজ্ঞানের নামে বিজ্ঞান অসমর্থিত বিষয় পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এই অঞ্চলের ইতিহাসের একটি ভুল ও মিথ্যা বর্ণনা দেয়া হয়েছে যার ভিত্তি আমাদের কাছে মনে হয়েছে ধর্ম নিরপেক্ষতার আড়ালে ব্রাক্ষ্মন্যবাদী, হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক এজেন্ডা। কারণ এই অঞ্চলে ইসলাম ও মুসলমানদের উপনিবেশিক ও আগ্রাসী শক্তি আকারে দেখানো হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠার পুর্বশর্ত। আমাদের পাঠ্যবইয়েও এই কাজ করা হয়েছে। এরপরে ট্রান্সজেন্ডার এর ইস্যু আরেকটি ভয়াবহ দিক। এটা আমাদের পরিবার, সমাজ, মানব প্রজননসহ গোটা সমাজ ব্যবস্থাকে ভেঙ্গে ফেলবে।
অতএব ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনে করে, এই বই সংশোধন না বরং বাতিল করতে হবে এবং সত্যনিষ্ঠ শিক্ষাবিদ ও উলামাদের সমন্বয়ে নতুন করে বই লিখতে হবে। একই সাথে এই বই রচনার সাথে জড়িতদের ভিন্ন কোন রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি আছে কিনা তা খুঁজে বের করতে হবে এবং তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার বরিশালের চরমোনাই মাদরাসায় বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের সাথে আলোচনাকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় মাদরাসার শিক্ষকমন্ডলিসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, সরকার দুইটি বই বাতিল করে ভাল কাজ করেছে। কিন্তু এই দুইটি বই ছাড়া অন্যান্য বইয়েও অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। সবগুলো বাতিল করতে হবে। সেইসাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকলকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।
এন.এইচ/