ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেছেন, সরকার দেশকে নিরব দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মাদক নিষিদ্ধ করেছিলেন,অথচ তার কন্যার নেতৃত্বাধীন সরকার ২১ বছরের ছেলেদেরকে মদের লাইসেন্স ও ১০০ লাইসেন্সধারীদের জন্য মদের বার অনুমোদন দিয়ে দেশের ভবিষ্যতকে ধ্বংসের চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। মদের লাইসেন্স দেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরকার বিরত না হলে দেশের জনগন বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।
তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে দেশের মানুষ আজ দিশেহারা। প্রতিদিনই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে চলছে। বাজারের ওপর সরকারের কোন নিয়ন্ত্রণ আছে বলে মনে হয়না।
আজ (১৮ ফেব্রুয়ারি)শুক্রবার বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ উত্তর গেটে ভারতে হিজাব নিষিদ্ধের ষড়যন্ত্র, বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতি ও মদের অবাধ অনুমতি প্রদানের প্রতিবাদে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শায়খে চরমোনাই এসব বলেন ।
সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ। বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারি মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা নেছার উদ্দীন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নগর উত্তর সেক্রেটারি মাওলানা আরিফুল ইসলাম, দক্ষিণ সেক্রেটারি আলহাজ্ব আব্দুল আউয়াল মজুমদার, ডা. শহীদুল ইসলাম, নূরুল ইসলাম নাঈম, কে এম শরীয়াতুল্লাহ, মুফতী ফরিদুল ইসলাম, ছাত্রনেতা সাব্বির আহমাদ ও নাঈম বিন জামশেদ প্রমূখ।
ভারতের কর্ণাটকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধের প্রতিবাদ জানিয়ে মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে মুসলমানদের রক্ত সবচেয়ে বেশী ঝরেছে। অথচ মোদী সরকার হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠার নামে ভারতকে ইসলামশূণ্য করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। তিনি হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, ইসলাম বিরোধীতার পরিণামে ভারত নিজের ধ্বংস অনিবার্য করে তুলছে।
শায়খে চরমোনাই আরো বলেন, পঞ্চগড়ে কাদিয়ানি সম্মেলন অবশ্যই বন্ধ করতে হবে এবং কাদিয়ানিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি নিরপরাধ আলেম ওলামাদের দ্রুত মুক্তির দাবি জানান।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদ বলেন, দেশের মানুষের প্রতি সরকারের কোন দায় নেই। পানি-গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব মরার ওপর খাঁড়ার ঘা।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, ভারতের মুসলিমরা বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির শিকার। হিজাব নিষিদ্ধের অন্তরালে ভারত সরকার মুসলিম নারীদেরকে শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখতে চায়। বাংলাদেশের সরকার একদিকে মুখে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে অন্যদিকে পাড়ায়-মহল্লায় যুব সমাজের হাতে মাদক তুলে দেয়, এটা সরকারের দ্বিমুখী আচরণ।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, ভারত সরকারের ইসলাম বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারসহ মুসলিম বিশ্বকে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি আগামী নির্বাচন নিয়ে সরকারের নীল নকশার বিরুদ্ধে হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, চৌদ্দ-আঠারো আর তেইশ এক নয়।