বৃহস্পতিবার | ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৬ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি | ৩ পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | শীতকাল | সন্ধ্যা ৬:০৩

বৃহস্পতিবার | ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৬ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি | ৩ পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | শীতকাল | সন্ধ্যা ৬:০৩

সাদুল্লাহপুরের গোলাপ গ্রাম ভালোবাসার স্বর্গরাজ্য!

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on pinterest
Share on telegram
  • ফজর
  • যোহর
  • আসর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যদয়
  • ভোর ৫:১০ পূর্বাহ্ণ
  • দুপুর ১১:৫৭ পূর্বাহ্ণ
  • বিকাল ১৫:৩৮ অপরাহ্ণ
  • সন্ধ্যা ১৭:১৭ অপরাহ্ণ
  • রাত ১৮:৩৬ অপরাহ্ণ
  • ভোর ৬:৩৩ পূর্বাহ্ণ

ফুল ভালোবাসেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়। ফুল এক স্বর্গীয় সৌন্দর্য। আর গোলাপ! সে যেন সৌন্দর্য নামক স্বর্গরাজ্যের রাণী! সেজন্যই হয়তো গোলাপ হয়ে উঠেছে ভালোবাসার প্রতীক। গোলাপের প্রতিটি পাপড়িতেই যেন লুকিয়ে থাকে ভালোবাসা। তাইতো অন্যান্য ফুলের তুলনায় এই রাণীর এতো কদর!

ফুলের প্রতি এই কদর প্রকাশ পায় কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের লেখনির ভাষায়,

‘জোটে যদি মোটে একটি পয়সা খাদ্য কিনিও ক্ষুধার লাগি;
দুটি যদি জোটে, অর্ধেক তার ফুল কিনে নিও হে অনুরাগী।’

গ্রামের ভেতর দিয়ে আঁকাবাঁকা সরু পথ। পিচঢালা রাস্তার দুপাশে বাতাসের তালে নেচে ওঠা গোলাপের বাগান যেন মন ছুঁয়ে যায়। যেন স্বপ্নে দেখা স্বর্গের কোন নিকুঞ্জ। যোজন যোজন গোলাপের সৌন্দর্যে মনের অজান্তেই হারিয়ে যেতে হয় অপরূপ মুগ্ধতায়। ঢাকার অদূরেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের তুরাগ নদীর তীরে সাদুল্লাহপুর গ্রামে অবস্থিত ঠিক এমনই এক নয়নাভিরাম স্থান। বলছি গোলাপগ্রামের কথা। শুধু সাদুল্লাহপুর নয়, আশেপাশের শ্যামপুর, কমলাপুর গ্রামের গোলাপের রাজ্যে চোখ আটকে যাবে যে কারোর। যতদূর চোখ যায়, শুধু গোলাপ আর গোলাপ। যেন যুগ যুগ ধরে এখানে এই গোলাপ ফুলেরই আবাস! তাই এ গ্রামগুলো এখানে ‘গোলাপ গ্রাম’ নামেই বেশি পরিচিত। শুধু ফাল্গুন কিংবা ভালোবাসা দিবস নয়, এই গোলাপগ্রামে সারা বছর থাকে সৌন্দর্যপিয়াসীদের ভিড়। গোলাপ গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পেলেও এখানে রজনীগন্ধা ফুলের চাষও করা হয়। এই গ্রামটির নাম দেশের মানুষ জানে এই গোলাপের কারণেই।

ঋতুরাজ বসন্তে সাদুল্লাহপুরের গোলাপগ্রাম যেন রাণী রূপে ধরা দেয় প্রকৃতিতে। এখানে এলেই মনটা মাধুর্যতায় ভরে ওঠে। গোলাপের বাগান এবং চোখ জুড়ানো সৌন্দর্য নিয়ে যেন পুরো গ্রামটি বধূবেশে সেজে থাকে। উঁচু জমিগুলোতে ছেঁয়ে আছে মিরান্ডি জাতের টকটকে রক্তবর্ণ-গোলাপ। লাল-হলুদ-সাদা, কতবর্ণের যে গোলাপ তার কোনো ইয়ত্তা নেই! দূর থেকে তাকালে মনে হবে যেন গোলাপের স্বর্গরাজ্য!

সকাল থেকে দুপুর গড়াতেই ফুল চাষীদের ব্যস্ততা বেড়ে যায় অনেকখানি। ফুল কাটা, ফুল ভেজানো, ফুল বাধা সব কাজ শেষ করা হয় সন্ধ্যার আগেই। গোলাপ বাগানের মালিকরা নিজে এবং দিনমজুর নিয়ে এসব কাজ সম্পন্ন করেন। প্রতিজন দিনমজুরের জন্যে তাদের গুনতে হয় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। সকালে এবং সন্ধ্যার পরে জমে শ্যামপুরের ফুলের বাজার।

আশেপাশের গ্রাম থেকে এসে ফুল বিক্রেতারা এখান থেকে ফুল কিনে নিয়ে যায়। রাজধানীর সবচেয়ে বড় ফুলের বাজার শাহবাগ ছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন ফুলের বাজার এখান থেকেই ফুল সরবরাহ করে। ফুলের দাম সবথেকে বেশি থাকে ভালোবাসা দিবসে, ২১ ফেব্রু য়ারি, বিজয় দিবস, পহেলা বৈশাখসহ বিশেষ দিনগুলোতে। তবে বিশেষ দিন ছাড়া বেশিরভাগ দিনই প্রতি একশো গোলাপ ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়। এসব গোলাপ বাগান থেকে এই দামে বিক্রি হলেও বাইরের দোকানগুলোতে আট থেকে দশগুণ বেশি দামে বিক্রি হয়।

শীত মৌসুমে ফুলের ভালো ফলন হয়। প্রতিদিন গড়ে কমপক্ষে ৫০০ থেকে ১০০০ ফুল বিক্রি করেন তাঁরা। সেখান থেকেই বাগানের যত্ন নেওয়া থেকে শুরু করে দিনমজুর এবং বাড়ির খরচ চালান তাঁরা।

তবে সব সময় তো সমান ভাবে বিক্রি হয়না। তাই সবসময় ঠোঁটের কোণে হাসিটাও ধরে রাখা একটু কঠিন হয়ে যায়। তারপরেও প্রতিদিন বিরুলিয়ার বাজার গুলোতে প্রায় দুই থেকে আড়াইলাখ টাকার ফুল বিক্রি হয়।

দর্শনার্থীদের জন্য সাদুল্লাহপুরে মোটামুটি মানের বেশকিছু খাবার হোটেল আছে। সেখানে ভাত, ভর্তা, ছোট মাছ, সবজি ইত্যাদি পাওয়া যায়।

দিনশেষে গোলাপ গ্রামের কিছুটা সৌরভময় স্মৃতি নিয়ে শহরের কর্মব্যস্ত জীবনে ফিরে আসার পূর্বে ভালোবাসার এই স্বর্গরাজ্যে ঘাটের মিষ্টির দোকান, দই, গরুর দুধের চা ইত্যাদি প্রিয়জনের সাথে দর্শনার্থীদেরকে করে তুলতে পারে আরো বেশি কল্পনাবিলাসী।

যাই হোক, জেনে রাখা ভালো যে, ১৯৯০ সাল থেকে বিরুলিয়ার এই গ্রামটিতে গোলাপ চাষ শুরু হয়। এ ইউনিয়নের সাদুল্লাহপুর, শ্যামপুর, মোস্তাপাড়াসহ আরো বেশ কয়েকটি গ্রামের জীবিকার প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে আবির্ভ‚ত হয়েছে মিরান্ডি জাতের রক্তলাল গোলাপের চাষ। বর্তমানে এই ইউনিয়নে ৮০ শতাংশ মানুষ গোলাপ চাষ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। বাণিজ্যিকভাবে এই ফুল চাষের কারণে বছরের ১২ মাস গোলাপ চাষ হয়। শীতকালে এই ফুলের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসসহ জাতীয় দিবসগুলোতে গোলাপের চাহিদা থাকে ব্যাপক। বিরুলিয়ায় প্রায় চার হাজার চাষী গোলাপ ফুল চাষ করেন।

লেখক: তানভীর হোসেন তাম্মান
শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

 

এন.এইচ/

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on pinterest
Share on telegram

Leave a Comment

সর্বশেষ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

উত্তরা ১২ নং সেক্টর ওয়েলফেয়ার সোসাইটির যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর ওয়েলফেয়ার সোসাইটির উদ্যোগে বর্ণাঢ্য ও মর্যাদাপূর্ণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।  সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর পার্কে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সোসাইটির শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক জসিম উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে মার্চপাস্ট ও জাতীয় সংগীতের তালে তালে জাতীয় পতাকা

উত্তরা ১১ নং সেক্টর সোসাইটির উদ্যোগে বর্ণাঢ্য আয়োজনে দিনব্যাপী বিজয় দিবস উদযাপন

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর উত্তরা ১১ নং সেক্টর ওয়েলফেয়ার সোসাইটির উদ্যোগে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির

ডেভেলপারস ফোরাম উত্তরা এর ১৫তম বর্ষপূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠিত

ডেভেলপারস ফোরাম উত্তরা  (ডিএফইউ)-এর ১৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য উদযাপন ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক  অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত

ইস্ট ওয়েস্ট মেডিকেল ও শহীদ মডেল কলেজের উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে চিকিৎসা নিলেন প্রায় ২ হাজার মানুষ 

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে উত্তরা তুরাগের কামারপাড়া এলাকার শহীদ মডেল স্কুল এন্ড কলেজের প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির নাম ব্যবহার করে পুনরায় প্রভাব বিস্তার — চাকরিচ্যুত মামুনুর রশিদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন, সংযুক্ত কলেজসমূহ এবং পেশাজীবী সংগঠনগুলোর মধ্যে উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে চাকরিচ্যুত

  • ফজর
  • যোহর
  • আসর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যদয়
  • ভোর ৫:১০ পূর্বাহ্ণ
  • দুপুর ১১:৫৭ পূর্বাহ্ণ
  • বিকাল ১৫:৩৮ অপরাহ্ণ
  • সন্ধ্যা ১৭:১৭ অপরাহ্ণ
  • রাত ১৮:৩৬ অপরাহ্ণ
  • ভোর ৬:৩৩ পূর্বাহ্ণ