হাকালুকি হাওর থেকে ১৬৫ মিটার নিষিদ্ধ বেড় ও কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে। সোমবার (২ আগস্ট) মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার হাকালুকি হাওরের বিভিন্ন বিল এলাকায় প্রায় আট ঘণ্টা ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে এই জাল জব্দ করা হয়। পরে এগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। ধংস করা জালের মূল্য প্রায় আড়াই লাখ টাকা।
বড়লেখা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই অভিযান চালানো হয়। এতে উপজেলা মৎস্য বিভাগ ও থানা পুলিশ সহযোগিতা করে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী। অভিযানে আরও অংশ নেন বড়লেখা উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান, বড়লেখা থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাকালুকি হাওরের বিভিন্ন বিলে নিষিদ্ধ ঘোষিত বেড় বা কোণা জাল ও কারেন্ট জাল দিয়ে নিয়মিত মাছ ধরা হচ্ছিল। এসব জালে ক্ষুদ্র পোনা মাছ, মাছের ডিমসহ অন্য জলজপ্রাণী প্রাণীও মারা পড়ে। এতে মাছ ও জলজপ্রাণীর বাস্তুসংস্থান ধংস হয়ে যায়। অবৈধভাবে পোনা মাছ ধরা এবং মাছ ও জলজপ্রাণীর বাস্তুসংস্থান ধংস করার খবরে সোমবার সকাল আটটা থেকে হাকালুকি হাওরের বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের জল্লা, ফাড় জল্লা, বালিঝুরি গ্রুপ বদ্ধ জলমহালের একাংশে অভিযান চালানো হয়। এ সময় প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে জাল ফেলে জেলেরা পালিয়ে যায়। এই এলাকা থেকে ১০৫ মিটার অবৈধ বেড় জাল জব্দ করা হয়। অন্যদিকে হাওরের পিংলা বিল, মাইছলা বিল, পলোভাংগা বিলসহ বিভিন্ন বিলে বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়েছে। এসব বিল এলাকা থেকে আরও ৬০ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। এখানেও কোনো জেলেকে পাওয়া যায়নি। জব্দ করা জালের মূল্য প্রায় আড়াই লাখ টাকা। পরে জব্দ করা জালসমূহ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।
বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী বলেন, ‘কয়েকটি বিষয়কে সামনে রেখে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এরমধ্যে হাওরে মাছের প্রজনন ও বাস্তুসংস্থান নষ্ট করে এমন অবৈধ জালের ব্যবহার এবং সরকারি জলমহাল (ইজারা দেওয়া হয়নি) থেকে অবৈধভাবে মাছ আহরণ বন্ধ করা। অবৈধভাবে মাছ ধরা বন্ধে হাকালুকি হাওরে প্রায় ৮ ঘণ্টা অভিযান হয়েছে। হাওরের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় উপজেলা প্রশাসন বদ্ধপরিকর। এরকম অভিযান অব্যাহত থাকবে।’