ফিলিস্তিনের প্রত্যন্ত অঞ্চলের চারণভূমিতে মেষ চরাতেন হাজি সালামাহ আলী (৬০)। সাথে নিয়ে যেতেন একটি রেডিও। চারণভূমিতে একদিকে যেমন মেষপালের প্রতি খেয়াল রাখতেন, তেমনি রেডিও চালু করে নিয়মিত শুনতেন কুরআন তেলাওয়াত। এভাবে মাত্র চার বছরে রেডিও শুনে শুনেই ১৯৮৭ সালে পবিত্র কুরআনুল কারিম মুখস্থ করেন তিনি।
গত ২০২১ সালের ১৬ এপ্রিল আলজাজিরা মুবাশিরকে নিজের অনুভূতি জানিয়ে হাজি সালামাহ আলী বলেন, ‘১৯৮৩ সালে নিয়মিত আমি রেডিওতে কারীদের তেলাওয়াত শোনা শুরু করি এবং আল্লাহর অনুগ্রহে মাত্র চার বছরের মধ্যে আমি কুরআনে কারিম হিফজ করতে সক্ষম হই। তখন আমাদের আশপাশে কোনো নিয়মতান্ত্রিক হিফজখানা কিংবা হিফজ শিক্ষক ছিলেন না। হাফেজ হওয়া ও তেলাওয়াত সুন্দর করা আমার একান্ত ব্যক্তিগত চেষ্টার ফলেই সম্ভব হয়েছে।
শুরুতে আমার তেলাওয়াত ততটা মানসম্মত ছিল না, তবে আমি শুধু পবিত্র কুরআন মুখস্থ করেই শেষ করিনি; বরং কখন কোন কারী তেলাওয়াত করতেন তা-ও খেয়াল রাখতাম এবং নির্দিষ্ট সময়ে রেডিও ছেড়ে কুরআনে কারিম দেখে দেখে আয়াত মিলিয়ে ঠোঁট নাড়াতাম এবং পড়তাম। এভাবে মুখস্থ করার পাশাপাশি তেলাওয়াতও সুন্দর করেছি। আর তা করেছি চারণভূমিতে মেষ চরানোর সময়।
বাহ্যত এরূপ প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও আমাকে কুরআন হিফজ করতে উদ্বুদ্ধ করেছে ইসলামী বইপত্র পাঠের আগ্রহ; আমার হাতে যে বই-ই আসুক আমি তা পড়ার চেষ্টা করতাম। এভাবেই একসময় কুরআন পাঠে গভীর মনোযোগী হই। আমি এখনো মরুভূমিতে কুরআন তেলাওয়াত করার সময় ভিন্ন রকম আমেজ উপলব্ধি করি।
মেষ চরানোর জন্য আমি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল চষে বেড়াই, নানা প্রকৃতির ও সংস্কৃতির মানুষের সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়, আমি তাদের সবাইকে কুরআন পড়তে উদ্বুদ্ধ করি। কেননা, কুরআন পড়ে কেউ বিফল হয় না। আমি আমার সময়কে কাজে লাগিয়েছি এবং আল্লাহর অনুগ্রহে হাফেজ হয়েছি। আলহামদু লিল্লাহ!
-আলজাজিরা অবলম্বনে বেলায়েত হুসাইন
সূত্র: নয়া দিগন্ত