বিশ্ব ব্যাংকের স্থগিত করা আফগানিস্তান ট্রাস্ট তহবিল থেকে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি ছাড় দেওয়া হয়েছে। জরুরিভাবে প্রয়োজনীয় শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য এবং পারিবারিক কর্মসূচিতে এই অর্থ ব্যবহার করা হবে। গতকাল মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংক এক ঘোষণায় এ তহবিল অনুমোদন দেওয়ার কথা জানায়। বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী বোর্ড এর অনুমোদন দিয়েছে। জাতিসংঘের সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সাহায্য গোষ্ঠীর মাধ্যমে এই তহবিলের অর্থ বিতরণ করা হবে। তালেবান কর্তৃপক্ষ সরাসরি তহবিল হাতে পাবে না।
বলা হচ্ছে, স্থগিত অর্থ ছাড়ের ফলে আফগানিস্তানের ক্রমবর্ধমান মানবিক ও অর্থনৈতিক সঙ্কট কিছুটা হলেও লাগব হবে। এই ফান্ড ব্যবহারের অন্যতম লক্ষ্য হল, প্রয়োজনীয় মৌলিক পরিষেবা সরবরাহে সহায়তা করা, দুর্বল আফগানদের রক্ষা করা, মানব পুঁজি এবং মূল অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষেবাগুলো সংরক্ষণে সহায়তা করা। সেই সাথে ভবিষ্যতে মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা হ্রাস করা।
গত বছরের আগস্টের মাঝামাঝিতে তালেবান আফগান দখল করলে বিশ্বব্যাংকের আফগানিস্তান পুনর্গঠন ট্রাস্ট ফান্ড স্থগিত করেছিল। ওই মাসেই ২০ বছরের যুদ্ধের পর মার্কিন নেতৃত্বাধীন সর্বশেষ আন্তর্জাতিক সৈন্যরা আফগান ত্যাগ করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সরকারি ব্যয়ের ৭০ শতাংশেরও বেশি আর্থিক সহায়তা বন্ধ করে দেয়। ওই সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তহবিলের প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার স্থগিত করে।
জাতিসংঘের মতে, তহবিল হ্রাস আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক পতন ও নগদ অর্থের সংকটকে ত্বরান্বিত করেছে। অর্থাভাবে এই মানবিক সংকট আরও গভীর হয়েছে, যা দেশটির ৩৯ মিলিয়ন জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি লোককে অনাহারের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে।
বিশ্বব্যাংক বলেছে, প্রাথমিকভাবে এআরটিএফ দাতারা প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের চারটি প্রকল্পের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। নারীরা যাতে অংশগ্রহণ করে এবং সহায়তা থেকে উপকৃত হয় তা নিশ্চিত করার ওপর একটি দৃঢ় ফোকাস থাকবে।
তালেবানরা বিগত দুই দশকে নারীদের অধিকারের ব্যাপারে কঠোরতা অবলম্বন করে আসছে। তবে নতুন তালেবান সরকার ক্ষমতায় এসে নারীদের শিক্ষাসহ সব অধিকার সংরক্ষিত করার দক্ষতা দেখিয়েছে।
ইতোমধ্যে আফগানিস্তানের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছেলেমেয়েদের পদভারে মুখর হয়ে উঠেছে। যদিও প্রথম দিকে পরিবেশ-পরিস্থিতি সামাল দিতে মেয়েদের ক্লাসে ফেরা থেকে বিরত রাখা হয়েছিল।