এম. কলিম উল্লাহ, কক্সবাজার: সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার পলাতক আসামি কনস্টেবল সাগর দেব আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) দুপুরে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈল। সেই সঙ্গে আগামী ২৭ জুন পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন দিলীপ দাস।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ঘটনার পর থেকে দীর্ঘ ১০ মাসের বেশি সময় পলাতক ছিলেন টেকনাফ থানার সাবেক পুলিশের কনস্টেবল সাগর দেব। তখন থেকে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তার সন্ধান পায়নি তদন্তকারী সংস্থা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
পিপি বলেন, বৃহস্পতিবার আত্মসমর্পণের পর জামিন আবেদন করেছেন আইনজীবী। শুনানি শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
২০২০ সালের ২১ ডিসেম্বর দীর্ঘ চার মাস আট দিন তদন্ত শেষে টেকনাফ থানার আলোচিত ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে আসামি করে চার্জশীট দেয় র্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা মো. খায়রুল ইসলাম। চার্জশীটে সাগর দেব পলাতক বলে উল্লেখ্য করা হয়।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে গাড়ি তল্লাশিকে কেন্দ্র করে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাখেদ খান।
এ ঘটনায় ওই বছরের ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে প্রধান ও টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ নয় জন পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটির তদন্ত করার আদেশ দেন র্যাবকে।
এরপর ৬ আগস্ট প্রধান আসামি লিয়াকত আলী ও টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৭ পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
পরবর্তীতে ঘটনায় জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে পুলিশের দায়েরকৃত মামলার ৩ জন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টের দায়িত্বরত আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
একই অভিযোগে টেকনাফ থানা পুলিশের সাবেক সদস্য কনস্টেবল রুবেল শর্মাকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলায় গ্রেপ্তারকৃত ১৪ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারী কর্মকর্তা। এদের মধ্যে প্রদীপ কুমার দাশ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া ১২ জন আসামি আদালতে ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলায় নতুন করে সাগর দেবকে আসামি করা হয়েছে। তিনি ওসি প্রদীপের বিশেষ সহকারী ছিলেন।
মামলায় বহুল আলোচিত আসামি প্রদীপ কুমার দাসকে দুদকের মামলায় হাজিরা দিতে ২০২০ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম কারাগারে নেয়া হয়। গত ১০ জুন তাকে সেখান থেকে কক্সবাজার কারাগারে নিয়ে আসা হয়েছে।