বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে ব্যঙ্গ করে বিশ্বব্যাপী সমালোচিত কার্টুনিস্ট কুর্ট ওয়েস্টারগার্ড মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
২০০৫ সালে হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র এঁকেছিলেন ড্যানিশ এই কার্টুনিস্ট। কুর্টের পরিবারের বরাত দিয়ে সোমবার (১৯ জুলাই) বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বিবিসি বলেছে, দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ১৪ জুলাই (বুধবার) মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তিনি ১৯৮০ সাল থেকে ইসলাম বিদ্বেষী হিসেবে সমালোচিত ড্যানিশ পত্রিকা জাইল্যান্ডস পোস্টেনে কার্টুনিস্ট হিসেবে কাজ করতেন। ২০০৫ সালে জাইল্যান্ডস পোস্টেনের সম্পাদকীয়তে ১২টি ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশিত হয়েছিল। এই ১২টি ব্যঙ্গচিত্রের মধ্যে কুর্ট ওয়েস্টারগার্ডের আঁকা ব্যঙ্গচিত্রটিও ছিল। ব্যঙ্গচিত্রগুলো অধিকাংশই ছিল ইসলামের শ্রেষ্ঠ পয়গম্বরদের ইঙ্গিত করে আঁকা। ২০০৫ সালে মহানবী (সা.) কে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র আঁকার পর বিশ্বব্যাপী ব্যাপক ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন তিনি। ছবিগুলো প্রকাশের সাথে সাথে বিশ্বব্যাপী মুসলিমরা ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তুলেন। খোদ ডেনমার্কেও বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল।
মুসলিম প্রধান দেশগুলোর পক্ষ থেকে ডেনমার্ক সরকারের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। পরবর্তীতে বিক্ষোভ আরও ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পরে ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ডেনমার্কের দূতাবাসগুলোতে হামলার ঘটনাও ঘটে। বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় প্রায় ডজনখানেক মানুষ নিহত হয়েছিলেন।
যদিও প্রকাশিত ওই ছবিগুলো নিয়ে ২০০৮ সালে রয়টার্সের কাছে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কুর্ট ওয়েস্টারবার্গ জানিয়েছিলেন, তার কোনো অনুশোচনা নেই।
এই ঘটনার পর থেকেই কুর্ট ওয়েস্টারবার্গকে লাগাতার হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। একই বছরেই কুর্টকে হত্যার পরিকল্পনাকারী তিন ব্যক্তিকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছিল ড্যানিশ গোয়েন্দা সংস্থা। পরবর্তী বছরগুলোতে ওয়েস্টারগার্ড নিরাপত্তারক্ষীসহ গোপন ঠিকানায় থাকতে শুরু করেন।
প্রসঙ্গত, ওয়েস্টগার্ডের বাড়ি থেকে ২৮ বছর বয়সী এক সোমালি যুবককে ছুরিসহ গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। হত্যাচেষ্টা ও জঙ্গিবাদে যুক্ত থাকার অভিযোগে ২০১১ সালে ওই যুবককে নয় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।