দ্বীন ইসলাম, ডেমরা প্রতিনিধি:
সম্প্রতি রাজধানীর ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের পর কারা আসছেন ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের কমিটিতে এ নিয়ে গুঞ্জন চলছে সর্বত্র। সম্মেলনের পর চায়ের দোকান ও হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ সব আড্ডাস্থলে চলছে সম্ভাব্য নেতাদের নিয়ে আলোচনার ঝড়। ব্যক্তি ও রাজনৈতিকভাবে সুন্দর ভাবমূতিসম্পন্ন এবং ত্যাগী নেতাদের প্রাধান্য দিয়ে কমিটি গঠন করা হবে- এমনটিই প্রত্যাশা সবার।
গত ৩ সেপ্টেম্বর ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ডেমরা মহাবিদ্যালয় কলেজ মাঠে। ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হলেও প্রকৃতপক্ষে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয় প্রায় ১৮ বছর পর। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে অন্তত দেড় ডজন প্রার্থী তাদের জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন।
পদপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্তগুলো কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির।
জানা গেছে, সম্মেলনের পর থেকেই ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীরা ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যার যার মতো যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। তাদের মধ্যে অনেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উভয় পদের বিপরীতে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন।
সভাপতি প্রার্থী হিসেবে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন সাতজন। তারা হলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপকমিটির সদস্য নেহরীন মোস্তফা দিশি, ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খাঁন মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজল, ডিএসসিসির ৭০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আতিকুর রহমান আতিক, পুরাতন সারুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মো. মোজাম্মেল হক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর ইসলাম মোল্লা।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন নয়জন। তারা হলেন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপকমিটির সদস্য নেহরীন মোস্তফা দিশি, ডিএসসিসির ৬৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহমুদুল হাসান পলিন, ডিএসসিসির ৭০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আতিকুর রহমান আতিক, ডেমরা থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. সিফাত সাদেকীন চপল, সাবেক ডেমরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল বাশার, প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা মো. আতিকুর রহমান তোতা, আওয়ামী লীগ নেতা টিপু সুলতান মোল্লা, শাহাদাৎ হোসেন ভূইয়া ও রেবেকা সুলতানা।
এই বিষয়ে ডেমরায় আওয়ামী লীগের একাধিক তৃণমূল নেতাকর্মী প্রেজেন্ট নিউজকে বলেন, ঢাকা-৫ আসনটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে প্রয়োজন ক্লিন ইমেজের জননন্দিত নেতার, যারা নতুন প্রজন্ম থেকে শুরু করে সর্বস্তরের কর্মীদের একত্রিত করে ডেমরা থানা আওয়ামী লীগকে নতুন করে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে পারবেন। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের সহযোগী প্রতিটি সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে দলের অন্তঃকোন্দলের সমস্যা সমাধান করতে পারবেন এমন যোগ্যতাও তাদের থাকা চাই।
যেহেতু ডেমরা ঢাকা মহানগরের দক্ষিণ সীমান্ত এলাকা, তাই শক্তিশালী কমিটি না হলে আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন আন্দোলন প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না। এক্ষেত্রে ডেমরা থানা কমিটিতে এলাকার বাইরের কাউকে নেতা নির্বাচিত করলে তা মেনে নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের নেতারা।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী বলেন, ‘দুর্দিনে যারা দলের জন্য জীবন বাজি রেখেছেন এবং দলের প্রয়োজনে নিঃস্বার্থভাবে শ্রম দেওয়াসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে কাজ করেছেন, আমরা কেবল তাদেরই নির্বাচিত করব। এ বিষয়ে তদবির করে কোনো লাভ হবে না।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, তদবির তো দূরের কথা, কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের হাইপ্রোফাইল নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বয়ে প্রার্থীদের বিষয়ে বিচার-বিবেচনা করা হবে। এক্ষেত্রে সাংগঠনিক সব নিয়ম অনুযায়ী ডেমরা থানা গঠন করা হবে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা আজম বলেন, ক্লিন ইমেজের নেতাদের মাধ্যমে ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হবে। কোনো ধরনের বিতর্কিত, দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ ও ভূমিদস্যুরা কমিটিতে স্থান পাবে না।
আর.আই/