নীলফামারীতে হোসেন আলী যাদু (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্ত্রী সুফিয়া বেগমের (৫০) বিরুদ্ধে। সুফিয়া ও তাদের বড় ছেলে মতিয়ার রহমানকে (২৭) গ্রেফতারের পর তারা হত্যার কথা স্বীকার করে বলে পুলিশ জানায়। রবিবার সদর থানার ওসি (তদন্ত) মাহমুদ উন নবী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পুলিশ জানায়, হোসেন আলী নীলফামারী পৌর শহরের নিকুঞ্জপাড়ার মৃত সৈয়দ আলীর ছেলে। শনিবার সকাল ১১টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী সুফিয়া ও বড় ছেলে মতিয়ারকে আসামি করে নিহতের ছোট ভাই আলাল হোসেন (৪৫) নীলফামারী সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে পুলিশ। পরিবারের সদস্যরা ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা করলেও একপর্যায়ে পুলিশের কাছে এ হত্যার দায় স্বীকার করে তারা।
সম্প্রতি প্রতিবেশী শাহিনুর আলমের কাছে সাড়ে নয় লাখ টাকায় হোসেন আলী তার বাড়িটি বিক্রি করেন। শাহিনুর ওই টাকা বুঝিয়ে দিলেও বাড়িটির রেজিস্ট্রি হয়নি এখনও। তাকে ওই বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল গত শনিবার। ক্রেতাকে ওই বাড়ি ছেড়ে না দিয়ে টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে হোসেন আলীর স্ত্রী সুফিয়া বেগম ও বড় ছেলে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী শুক্রবার (৯ জুলাই) রাত সাড়ে ৩টার দিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হোসেন আলীর বাঁ হাতে আঘাত করে ঘরের বারান্দায় ফেলে রাখেন তারা। এ সময় প্রচুর রক্তক্ষরণে হোসেন আলীর মৃত্যু হয়। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য এলাকায় প্রচারণা চালায় তারা। শনিবার ভোরে ৯৯৯ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নীলফামারী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
সদর থানার ওসি বলেন, ‘ঘটনাটির মধ্যে ধোঁয়াশা তৈরি করে রেখেছিলেন সুফিয়া ও তার বড় ছেলে। এরপর থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে রহস্য বেরিয়ে আসে। তারা ওই বাড়ির ক্রেতা শাহিনুরকে বঞ্চিত করে টাকা আত্মসাতের জন্য হত্যাকাণ্ডটি ঘটান বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেন। রবিবার বিকালে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দির জন্য তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।’