আফগানিস্তানের সংঘাতময় পরিস্থিতিতে সীমান্তে বিপদে পড়া আফগান সরকারি বাহিনীকে আশ্রয় দিচ্ছে পাকিস্তান।
তালেবান ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে লড়াইকালে অনেক সরকারি সেনা পাকিস্তান সীমান্তে এসে সাহায্য চাইলে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের নিরাপদে আশ্রয় দিচ্ছে।
এরকম ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। এসব সেনাদের আবার আফগান সরকারের কাছে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। খবর দ্য ডনের।
আফগানিস্তানের ৪৬ সেনা সদস্য ও বর্ডার পুলিশকে রোববারও (২৫ জুলাই) নিরাপদে আশ্রয় দিয়েছে পাকিস্তান।
এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের ইন্টার সার্ভিস পাবলিক রিলেশনস। বিবৃতিতে বলা হয়, পাকিস্তান সীমান্তের ওপারে আফগানের অরুন্দু চিত্রাল বর্ডারে ৪৬ জন আফগান সেনা সদস্য পাকিস্তান সেনবাহিনীর কাছে সাহায্য কামনা করে।
তারা তালেবান হামলায় সীমান্তের ঘাঁটি রক্ষা করতে না পারায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন। ওই দলের মধ্যে ৫ জন সেনা অফিসারও রয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়, চলমান সংঘাতে আফগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনী সীমান্তের তথ্য আদান প্রদান করছে।
আফগানিস্তানের এসব সেনা রাতের বেলায় অরুন্দু সেক্টরের চিত্রাল সীমান্তে পৌঁছায়। আফগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে পাকিস্তান সেনা সদস্যরা ওইসব আফগান সৈন্যদের নিরাপদে পাকিস্তানে ঢোকার সুযোগ করে দেয়।
তাদের খাবার, থাকার জায়গা এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। বিবৃতিতে বলা হয় যথাযথ সামরিক বিধি ও আইন প্রক্রিয়া মেনেই তাদেরকে আফগান সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
এর আগে ১ জুলাই ৩৫ আফগান সেনা পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছিল। তাদেরকে পাকিস্তানে নিরাপদ আশ্রয় প্রদানের পর আফগানের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আফগানিস্তানে তালেবান তাদের সংঘাত জোরদার করার পর পাকিস্তান সীমান্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যে কোনো পরিস্থিতির জন্য ব্যবস্থা নিতে আফগান সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছে পাকিস্তান।
জুলাই মাসের প্রথম দিকে তালেবানের ভয়ে তাজিকিস্তানে পালিয়ে যায় এক হাজারের বেশি আফগান সরকারি সেনা। আফগানের উত্তরাঞ্চল সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে, কারণ সেখানে তালেবানের অবস্থান বেশি শক্তিশালী।
উত্তরের বাদাকশান প্রদেশের ছয়টি বড় জেলাও দখল করে তালেবান। এ এলাকায় চীন ও তাজিকিস্তান উভয় দেশের সীমান্ত রয়েছে।
আফগানে শান্তি ফেরাতে ১৭ জুলাই তালেবান ও আফগান সরকারি প্রতিনিধি দল কাতারের রাজধানী দোহায় সংলাপে বসেও কোনো সমাধান হয়নি।
জনগণের জান-মাল রক্ষা ও আফগানে শান্তি ফেরাতে আরও সংলাপে বসার বিষয়টিতে একমত হয় দুপক্ষ।
কিন্তু কোনো যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তে তারা পৌঁছাতে পারেনি। এরই মধ্যে তালেবান ঘোষণা দিয়েছে তারা দেশটির ৯০ শতাংশ সীমান্ত এলাকা দখল করে নিয়েছে। তবে তালেবানের এ দাবিকে অস্বীকার করেছে আফগান সরকার।