চলতি বছর শুধু তারাই পবিত্র হজ পালনের সুযোগ পাবেন, যারা আগে কখনও হজপালন করেননি। তবে তাদের বয়স ২০ থেকে ৬৫ বছর বয়সের মধ্যে হতে হবে। সৌদি আরব সরকার কর্তৃক প্রকাশিত হজ নির্দেশিকায় এসব শর্ত দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৬ জুলাই, ১৫ জিলকদ) থেকে হজযাত্রীদের রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে অনলাইনের মাধ্যমে। চলবে ১০ জুলাই (১৯ জিলকদ) পর্যন্ত।
প্রকাশিত নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, রেজিস্ট্রেশনের সময় আবেদনকারীকে স্বাস্থ্য বিষয়ক বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। সেই সঙ্গে হজের আগে ও পরে ১৪ দিন করে কোয়ারেন্টাইনে থাকার অঙ্গীকার করতে হবে।
সৌদি আরবের নাগরিকদের পাশাপাশি বৈধ রেসিডেন্স কার্ডপ্রাপ্তরা আবেদন করতে পারবেন। অন্যকোনো ভিসায় সৌদি আরবে বসবাসকারীরা আবেদন করতে পারবেন না।
ডায়াবেটিস, হার্টের রোগী, শ্বাসজনিত রোগী ও কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ কিংবা লক্ষণযুক্ত কেউ আবেদন করতে পারবেন না।
এ বছর সর্বোচ্চ ১০ হাজার হজযাত্রী হজপালন করতে পারবেন। তন্মধ্যে ৭০ ভাগ বিদেশি নাগরিক ও ৩০ ভাগ সৌদি নাগরিক। তবে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অগ্রাধিকার পাবেন।
আবেদনের পর নির্বাচিতদের নামের তালিকা ১২ জুলাই প্রকাশ করা হবে। সেই সঙ্গে আবেদনকারীকে এসএমএস ও মেইল করে জানিয়ে দেওয়া হবে।
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে শুধুমাত্র সৌদি আরবে বসবাসকারী দেশটির নাগরিক ও বিদেশিদের হজে অংশগ্রহণের অনুমতি দিয়েছে। এবার বর্হিবিশ্বের কেউ হজে অংশ নিতে পারবেন না।
রেজিস্ট্রেশনের জন্য কোনো দূতাবাসের কোনো ভূমিকা নেই।
এবারের হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে ১৯ জুলাই (২৮ জিলকদ) থেকে। চলবে ২ আগস্ট (১৩ জিলহজ) পর্যন্ত।
এদিকে সৌদি আরবের রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র (সিডিসি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এবারের হজে অংশ নেওয়া হজযাত্রীদের নতুন কিছু নিয়ম মেনে হজপালন করতে হবে।
এসব নিয়মের অন্যতম হলো- তাওয়াফের সময় পবিত্র কাবা স্পর্শ করা যাবে না। কালো পাথর হাজরে আসওয়াদে চুমু দেওয়া যাবে না।
নামাজের সময় এমনকি কাবা শরিফ তাওয়াফের সময়ও দেড় মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে হাজিদের। এ নিয়ম মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাতেও মানতে হবে। এই সময়ে হজযাত্রী ও আয়োজকদের প্রত্যেকের জন্য সর্বদা মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।
অনুমতি ছাড়া কেউ মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাতের ময়দানে যেতে পারবেন না। এসব স্থানে যাওয়া-আসা নিয়ন্ত্রণ করবে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
জামারাতে পাথর মারার সময় হজযাত্রীদের জীবাণুমুক্ত পাথর সরবরাহ করা হবে, সেগুলো ব্যবহার করতে হবে। পাথর নিক্ষেপের সময় কোনো দলে পঞ্চাশজনের বেশি লোক থাকতে পারবে না।
কোরবানি সম্পন্ন করতে হবে ব্যাংকের মাধ্যমে। কোনো হজযাত্রী নিজে কোরবানির পশু ক্রয় কিংবা জবাই করতে পারবেন না।
হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত পরিবহন শ্রমিক এবং খাবার সরবরাহকারী ও স্বেচ্ছাসেবকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। নিষিদ্ধ করা হয়েছে সব ধরনের সমাবেশ ও সভা। বার বার হাত ধোয়ার পাশাপাশি হাঁচি-কাশির সময় শালীনতা করতে হবে।
তাওয়াফের সময় আলাদা আলাদা লাইন থাকবে সেই লাইন অনুসরণ করতে হবে। সাফা-মারওয়ায় সায়ীর সময়ও একই নিয়ম মানতে হবে।
মসজিদে হারামে কোনো ধরনের খাবারের অনুমতি নেই। ওয়াটার কুলার ও জমজমের পানি সরবরাহ বন্ধ থাকবে। জমজমের পানি নির্দিষ্ট জায়গা থেকে সংগ্রহ করতে হবে।
হজযাত্রী ও হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িতদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়মতি পরীক্ষা করা হবে। হোটেল-রেস্তোরাঁ, চলাচলের পথ ও যানবাহনে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
কারো মাঝে করোনার লক্ষণ প্রকাশ পেলে তাকে আইসোলেশনে পাঠানো হবে। কোনো ধরনের পত্রিকা বা প্রচারপত্র বিলি-বিতরণ করা যাবে না। এটিএম বুথ, টাচস্ক্রিন গাইড এবং ভেন্ডিং মেশিনের পাশে হ্যান্ডস্যানিটাইজার রাখতে হবে। হজযাত্রীদের লাগেজ জীবাণুমুক্ত এবং স্যানিটাইজ করতে হবে।