আজ শনিবার ৩জুন রাত ১টা ২০ মিনিটে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আল্লামা ইয়াহইয়া আলমপুরী (৭৭) ইন্তেকাল করেছেন, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন ।
আল্লামা ইয়াহইয়া আলমপুরী এর ইন্তেকালে গভীর শোক ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদ ও সেক্রেটারি জেনারেল ইউসুফ আহমাদ মানসুর।
আজ এক যৌথ শোকবার্তায় নেতৃদ্বয় বলেন, আল্লামা ইয়াহইয়া আলমপুরী এর ইন্তেকালে আমরা কেন্দ্রীয় মজলিসে আমেলার সকল দায়িত্বশীলই সমব্যথী। আল্লাহ্ তায়ালা মরহুমকে জান্নাতে সুউচ্চ মাকাম দান করুন, আমীন।
আল্লামা ইয়াহইয়া হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক হিসেবে ২০২১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
তিনি ১৯৪৭ সালে চট্টগ্রামের হাটহাজারী পৌরসভার অন্তর্গত আলমপুর গ্রামের কাজী সালেহ আহমদ বাড়ির এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
আল্লামা ইয়াহইয়া আলমপুরী ১০ বছর বয়সে হাটহাজারী মাদ্রাসার নুরানি বিভাগের শিক্ষক কারি নুরুল হকের কাছে শিক্ষা শুরু করে ১৯৭৩ সালে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) সমাপ্ত করেন।
তার শিক্ষকরা হলেন— মুফতি আজম ফয়জুল্লাহ, শায়খুল হাদিস আল্লামা আব্দুল আজীজ রহ. আল্লামা আব্দুল কাইয়ুম, মুফতি আহমদুল্লাহ, মাওলানা হামেদ, আল্লামা নাদেরুজ্জাম, মাওলানা ইব্রাহীম আলমপুরী ও শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী প্রমুখ।
১৯৭৩ সালে তিনি শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করে হাটহাজারীর গড়দুয়ারা মাদ্রাসায় শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। গড়দুয়ারা মাদরাসায় ১০ বছর শিক্ষকতার পরে তিন বছর মাদার্শা মাদরাসা ও হাজী ইউনুস সাহেব রহ. প্রতিষ্ঠিত ইছাপুর ফয়জিয়া তাজবিদুল কুরআন মাদরাসায় ছয় বছর শিক্ষকতা করেন। অতঃপর হাটহাজারী মাদরাসার মজলিশে শূরার ডাকে ১৯৯১ সালে উম্মুল মাদারিসখ্যাত হাটহাজারী মাদরাসায় যোগদান করেন।
শিক্ষকতা সময়ের শুরু থেকে আজ অবধি তার মেধা, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে দক্ষতার সহিত উর্দুখানা থেকে তাফসির জামাত পর্যন্ত সব বিভাগের বিভিন্ন কিতাবের পাঠদান করে আসছেন। সর্বশেষ ২০২০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর হাটহাজারী মাদরাসায় অনুষ্ঠিত মজলিশে শূরার বৈঠকে মসলিশে এদারি (মাদরাসা পরিচালনা বোর্ড)-এর সদস্য নির্বাচিত হন।
হাটহাজারী মাদরাসায় অধ্যয়নকালে শুধু জ্ঞানার্জনের মাধ্যমেই তৃপ্ত হননি বরং আধ্যাত্মিক সাধনার জন্যেও অস্থির ছিলেন আল্লামা ইয়াহইয়া আলমপুরী। লেখাপড়ার পাশাপাশি তাসবিহ তাহতাফসির আদায়ে সুষ্ঠু নিয়ম, আকাবিরদের প্রতি সীমাহীন ভালোবাসা-শ্রদ্ধা এবং উন্নত চরিত্রের অধিকারী ও হজরতের খোদাভীরু, ইখলাস ও আমল-আখলাক দেখে শায়খুল ইসলাম হযরত হুসাইন আহমদ মাদানী রাহ. এর সুযোগ্য খলিফা আল্লামা শাহ আহমদ শফী রহ. চার তরিকার খেলাফত দান করে বাইয়াত ও মুরিদ করার অনুমতি প্রদান করেন।
এস.আই/