কাদিয়ানি সম্প্রদায়কে অমুসলিম ঘোষণার দাবী এবং পঞ্চগড়ে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে দেশের শীর্ষ ১০০ জন আলেম আজ এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে আলেমগণ বলেন, কাদিয়ানি সম্প্রদায় ইসলামের মৌলিক দু’টি বিশ্বাসের একটি তথা মুহাম্মাদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শেষ নবী হওয়ার দাবীকে অস্বীকার করে। খতমে নবুওয়াত সংক্রান্ত তাদের বিশ্বাস বিশ্ববিদিত। ফলে বিশ্বজুড়ে সকল মুসলিমদের কাছে তারা কাফের হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশেও সকল ধারার সকল মুসলমান তাদেরকে অমুসলিম বলে মনে করে এবং তাদের জন্য সংখ্যালঘু সংক্রান্ত বিধি-বিধান সাব্যস্ত করার দাবী করে।
এখানে একটি বিষয় পরিস্কার করা দরকার। সংখ্যালঘু অমুসলিম জনগোষ্ঠি হিসেবে কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের প্রতি আমাদের কোন রাগ-বিরাগ নাই। তাদের কোন ধর্মীয় আচার-প্রথা ও আয়োজনের প্রতি আমাদের কোন বিরুপ মনোভাব নাই।
কিন্তু সমস্যার জায়গা হলো, তারা যখন নিজেদেরকে মুসলিম দাবী করে দেশের কোটি-কোটি মুসলমানের ভেতরে অনুপ্রবেশ করতে যায়, যখন তারা নিজেদের মুসলিম দাবী করে কোটি কোটি জনতার আত্মপরিচয়ে বিভ্রান্তি ঘটায়, যখন তারা তাদের উপসানালয়, উৎসব –পার্বন ও আচার-প্রথাকে মুসলমানদের পরিভাষায় ব্যক্ত করে দ্বিধা-সংশয় তৈরি করে।
আমরা আবারো বলছি, কাদিয়ানিদের সাথে উম্মাহর সমস্যা তাদের ভিন্ন বিশ্বাস নিয়ে নয়, বরং সমস্যা হলো, মুসলিম উম্মাহর পরিভাষা ব্যবহার করে উম্মাহর মধ্যে অনুপ্রবেশ করতে চাওয়া নিয়ে।
সাম্প্রতিক পঞ্চগড়েও একই সমস্যা তৈরি হয়েছে। সেখানে কাদিয়ানিদের আলাদা পাড়া আছে। সেখানে তারা শান্তিতে জীবন-যাপন করছিলেন। কেউ তাদেরকে বাঁধা দেয় নাই। কিন্তু বিপত্তি বাধে যখন তারা নিজেদেরকে মুসলিম দাবী করে মুসলমানদের আদলে ও পরিভাষায় ধর্মীয় সম্মিলন করতে যায়।
কাদিয়ানিদের এই প্রতারণা নতুন নয়। যুগে যুগে তারা একই ধরণের প্রতারণা করে আসছে। মুসলিম উম্মাহ বারংবার তাদের এই প্রতারণা বন্ধ করতে চেয়েছে। তারা স্পষ্ট করে দাবী তুলেছে যে, তাদের এই ধরণের প্রতারণা বন্ধে তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করে তাদের জন্য সংখ্যালঘুদের বিধিমালা প্রযোজ্য করা হোক।
এবারও এই দাবী নিয়ে পঞ্চগড়ের মানুষ শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিলেন। তারা বহু আগে থেকেই মৌখিকভাবে বারংবার এই বিষয়ে সমাধান করতে রাষ্ট্রকে অনুরোধ করেছে। কিন্তু সরকার তা করে নি। ঘটনাক্রমে কাদিয়ানিদের প্রতারণামূলক আয়োজন যখন বাস্তবায়নের সন্নিকটে চলে এসেছে তখন জনতা রাস্তায় নেমেছে। ক্ষোভ দেখিয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার যদি সচেতন হতো, যদি তারা জনসম্পৃক্ত হতো, যদি তারা জনতার প্রতি দায়বদ্ধ থাকতো তাহলে কোটি জনতার দাবী মেনে এই বিষয়টার সুষ্ঠু সমাধান করতো। কিন্তু তা না করে হিংস্র পদ্ধতিতে তারা জনতার সাথে নির্মমতা করেছে। নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। জনতাকে হত্যা করেছে। অতএব, ঘটনার দায় সম্পুর্ণ সরকারের। এজন্য অন্য কারো উপর দায় চাপিয়ে তৌহিদী জনতাকে কোনরকম হয়রানী করা হলে দেশব্যাপী তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
উলামায়ে কেরাম সতর্ক করে দিয়ে বলেন, গুলি করে, হত্যা করে খতমে নবুওয়াতের দাবীকে অবদমিত করা যাবে না। বরং কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণার দাবী প্রতিনিয়ত জোড়দার হবে। প্রতিফোটা রক্ত হাজার গুণ শক্তি হয়ে খতমে নবুওয়াতের দাবী নিয়ে রাজপথে নেমে আসবে।
দাবীসমূহ :
হতাহত ও শহীদ পরিবারকে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
আহতদের সরকারি খরচে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।
সারা দেশে কাদিয়ানীদের সকল অপতৎপরতা বন্ধ ঘোষণা করতে হবে এবং
অচিরেই কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা করে জাতীয় সংসদে আইন পাশ করতে হবে।
বিবৃতি প্রদানকারী শীর্ষ আলেমগন হলেন-
1) আল্লামা নূরুল ইসলাম আদীব দা. বা., মুহতামিম, দারুল উলুম হোসাইনিয়া ওলামা বাজার
2) আল্লামা মোহাম্মদ ইয়াহইয়া, মহাপরিচালক, হাটহাজারী মাদরাসা
3) মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই
4) আমীরে শরিয়ত আল্লামা আতাউল্লাহ হাফিজ্জী পরিচালক, জামিয়া নূরিয়া কামরাঙ্গিরচর
5) আল্লামা ওসমান ফয়জী দা. বা. মুহতামিম, মেখল মাদরাসা
6) মাওলানা শায়খ আহমদ, সিনিয়র মুহাদ্দিস হাটহাজারী মাদরাসা
7) মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, পরিচালক, শাইখ জাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার
8) মাওলানা সালাহ উদ্দিন নানুপুরী, পরিচালক, জামেয়া ওবায়দিয়া নানুপুর
9) মুফতি হাবিবুর রহমান কাসেমী, পরিচালক, নাজিরহাট বড় মাদরাসা
10) মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়েখে চরমোনাই
11) মাওলানা ওবায়দুর রহমান খান নদভী ঢাকা
12) মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযা, পরিচালক, জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া
13) আল্লামা মুফতি ইমাদ উদ্দিন, সিনিয়র মহাদ্দিস ফরিদাবাদ মাদ্রাসা, ঢাকা ও মহাসচিব খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ কমিটি বাংলাদেশ।
14) মুফতি ফয়জুল্লাহ দা. বা. নায়েবে মুহতামিম, লালবাগ মাদরাসা
15) ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইন, মুহাদ্দিস জামিয়া আরাবিয়া জিরি ও সাবেক সহযোগী অধ্যাপক, এমইএইচ কলেজ, চট্টগ্রাম
16) হযরত মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, মুহাদ্দিস, হাটহাজারী মাদরাসা
17) মুফতি হিফজুর রহমান দা. বা., প্রধান মুফতি, জামিয়া রাহমানিয়া আজিজিয়া
18) আল্লামা মুহিবুল্লাহিল বাকী আন নদভী, শায়খুল হাদিস, জামিয়া ফজলুল উলুম মাদ্রাসা
19) মাওলানা মোবারক উল্লাহ, মুহতামিম, জামিয়া ইউনুসিয়া বি-বাড়িয়া
20) অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, মুহতামিম, জামিয়া ফজলুল উলুম মাদরাসা
21) মাওলানা মোহাম্মদ আলী, মুহতামিম, এদারাতুল উলুম মাদরাসা
22) মাওলানা আবুল বাশার নোমানী, মুহতামিম, জামিউল উলুম মিরপুর
23) মাওলানা আবুল বাশার, মুহতামিম, জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়া
24) মাওলানা সাইফুল ইসলাম, মুহতামিম, বড় কাটারা মাদরাসা
25) মাওলানা আব্দুল হক আজাদ, সিনিয়র মুহাদ্দিস, জামিল মাদরাসা, বগুড়া
26) মাওলানা নূরুল হুদা ফয়েজী, পীর সাহেব কারীমপুর
27) মুফতি ওমর ফারুক সন্দ্বীপি, খলিফা ও জামাতা, সন্দ্বীপ হুজুর রহ.
28) আল্লামা মাহবুবুল হক কাসেমী, শায়খুল হাদিস, জামেয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়া ঢাকা।
29) মাওলানা মাহমুদুল হাসান, ফতেহপুর মাদরাসা চট্টগ্রাম
30) মসজিদ, মাওঃ আবু জাফর কাসেমী।
31) মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ, খলিফা, হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ.
32) ড. মাওলানা মোস্তাক আহমদ খলিফা, মালিক আব্দুল হাফিজ মক্কী রহ
33) মাহমুদুল হাসান মোমতাজি, খতিব রহিম মেটাল মসজিদ
34) মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মুহতামিম, ফজলুল উলূম জহিরিয়া মাদ্রাসা, ঢাকা
35) মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ আল ফরিদী মুহতামিম, জামিয়াতুস সুন্নাহ, মাদারীপুর
36) মুফতী হেমায়েতুল্লাহ কাসেমী, শায়খুল হাদীস ও শিক্ষা পরিচালক রামপুরা মাদরাসা, ঢাকা
37) মাওলানা ড. বেলাল নূর আজিজি
38) মাওলানা আজিজুর রহমান কক্সবাজার
39) মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, পরিচালক, জামিআ সাঈদিয়া কারীমিয়া
40) মুফতি সামসুদ্দোহা আশরাফী
41) মুফতী কেফায়েতুল্লাহ কাশফী, প্রিন্সিপাল মাদরাসা বাহরুলু উলূম, ঢাকা
42) মাওলানা মুফতি রেজাউল করীম আবরার
43) হাফেজ মাওলানা কামাল উদ্দিন সিরাজ, পরিচালক, মাদরাসায়ে নূরে মদীনা, সাভার
44) মাওলানা আব্দুল আজিজ কাসেমী
45) মাওলানা শাহজাহান আল হাবিবী
46) মাওলানা নাজির আহমাদ শিবলী
47) মাওলানা আশরাফ আলী নূরী
48) মুফতি এমদাদুল্লাহ ফাহাদ
49) মুফতি তাজুল ইসলাম, সিলেট
50) মুফতি মিজানুর রহমান কাসেমী
51) মুফতি গোলাম মাওলা ভূঁইয়া
52) মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মাদারীপুর
53) মাওলানা আব্দুল আখির কাসেমী
54) মুফতি মুহিব্বুল্লাহ কাসেমী
55) মুফতি আব্দুর রাজ্জাক কাসেমী
56) মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মুর্তুজা কাসেমী
57) মুফতি নুরুল আলম সিদ্দিকী
58) মুফতি রফিকুন্নবী হক্কানী
59) মুফতি আখতারুজ্জামান মাহদী
60) মাওলানা জোবায়ের আব্দুল্লাহ কাসেমী
61) মুফতি রেজওয়ান হাসান
62) মুফতি সানাউল্লাহ কাসেমী
63) মাওলানা এহসান সন্ধিপী
64) মাওলানা ইসমাঈল সিরাজী, মাদানি
65) মাওলানা মোহাম্মদ আলী, কক্সবাজার
66) মাওলানা মনসুরুল হক জিহাদী
67) মাওলানা আব্দুস সাত্তার হামিদী
68) মাওলানা আব্দুর রহিম কাসেমী
69) মাওলানা ছগির আহমাদ বরিশাল
70) মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ ফয়েজী
71) মাওলানা বাছির উদ্দিন মাহমুদ
72) মাওলানা জাফর আহমাদ, শাহতলী
73) মাওলানা মুসা বিন কাসেম
74) হাফেজ মাওলানা বদরুজ্জামান
75) মুফতি মোহাম্মাদুল্লাহ আনসারী (ঢাকা উত্তর)
76) মুফতি জাবের হোসাইন
77) হাফেজ ক্বারী মোহাম্মদ ইলিয়াছ সাদী
78) মুফতি আমিমুল ইহসান (ঢাকা)
79) মুফতি লুৎফর রহমান ফরাজী
80) মাওলানা মজিবুর রহমান (খলিফা হুজুর, কালিশ্বরী)
81) মুফতি গোলামুর রহমান (খুলনা)
82) মুফতি মোহাম্মাদ আলী
83) মুফতি ওলিউল্লাহ (রামপুরা)
84) মাওলানা ইমতিয়াজ আলম (ঢাকা)
85) মাওলানা মুকবুল হোসাইন (মুহতামিম জামিয়া কারিমিয়া)
86) মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দিক, কুয়াকাটা
87) মাওলানা হাবিবুর রহমান মিয়াজী (গাজীপুর)
88) মাওলানা ইউনুছ ঢালী
89) মাওলানা খালেদ কাসেমী আজহারী
90) মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ আজাদী
91) মাওলানা ফরিদ উদ্দিন আল মোবারক
92) মাওলানা শোয়াইব আহমাদ আশরাফী
93) মাওলানা আব্দুল মালেক ফয়েজী (বি-বাড়িয়া)
94) মাওলানা তাওকির আবু তাহের
95) মাওলানা আব্দুল হালিম
96) মাওলানা সালাউদ্দীন জাহাঙ্গীর
97) মাওলানা শেখ আব্দুল্লাহ (খুলনা)
98) মাওলানা আবদুল কাদের মেহেরপুর
99) মাওলানা আবদুর রাজ্জাক ফেনী
100) মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন নোয়াখালী
এস.আই/