হিন্দু ধর্ম থেকে ইসলাম গ্রহণ করায় পরিবারের পক্ষ থেকে নির্যাতনের শিকার ময়মনসিংহ সদর এলাকার বাসিন্দা ফাতেমা রহমানকে সেফ হাউজে পাঠিয়েছে আদালত।
আজ (২৬ ডিসেম্বর) আদালত তাঁকে সেফ হাউজে পাঠানোর সিদ্ধান্ত দেয়।
সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহ সদরের ৭নং ওয়ার্ড, অমৃত বাবু রোড এলাকার গৌতম চন্দ্র সাহার কন্যা অর্পাসাহা জেলা জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেটের সম্মুখে উপস্থিত হয়ে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করেন। এফিডেভিটে তিনি নিজেকে প্রাপ্ত বয়স্কা ও কোন চাপ ছাড়াই নিজের ইচ্ছায় ধর্ম পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের কথা জানান। একই সাথে তিনি নিজের নাম পরিবর্তন করে ফাতেমা রহমান রাখেন।
কিন্তু ইসলাম গ্রহণের পর ফাতেমার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে পরিবারের সদস্যরা। ফলে গত ১০ ডিসেম্বর কোতয়ালী থানায় উপস্থিত হয়ে বাবা গৌতম চন্দ্র সাহা ও চাচা উত্তম চন্দ্র সাহার বিরুদ্ধে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে স্থানীয় এক মুসলিম পরিবারে আশ্রয় নেয়।
অন্যদিকে ফাতেমার বাবাও তাকে ফিরে পেতে থানায় আবেদন করে। এর প্রেক্ষিতে তাকে পরিবারের কাছে তুলে দেয় পুলিশ। ভবিষ্যতে নির্যাতন না করার এবং স্বাধীনভাবে ধর্ম পালনে সুযোগ দেয়া হবে মর্মে পুলিশের কাছে লিখিত দেয় ফাতেমার বাবা গৌতম চন্দ্র।
তবে বাসায় নিয়ে নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়। নির্যাতনের ঘটনা কৌশলে সহপাঠীদের জানায় ফাতেমা। এরপর গত ১৩ ডিসেম্বর তাকে উদ্ধারের জন্য আদালতে আবেদন করে সহপাঠী আশফিকা (মোকদ্দমা নং ১২৭/২০২২)। এর প্রেক্ষিতে সার্চ ওয়ারেন্ট জারি করে আদালত। তবে পুলিশ ব্যবস্থা না নিয়ে আবেদনটি ফেরত পাঠায়।
এরপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকলে রোববার (২৫ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে জাতীয় জরুরী সেবা নম্বর ৯৯৯ এ কল দিয়ে ঘটনা অবহিত করে সহপাঠীরা।
খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিম রাতেই ফাতেমাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। সোমবার ফাতেমার জবানবন্দি শুনে সেফ হাউজে রাখার সিদ্ধান্ত দেয় আদালত।
কোতওয়ালী থানার ওসি শাহ কামাল সাংবাদিকদের বলেন, গত ১০ ডিসেম্বর ফাতেমার ইচ্ছায় তাকে পরিবারের সদস্যদের হাতে দেয়া হয়। কিন্তু গতকাল রাতে ৯৯৯ কল দিয়ে নির্যাতনের কথা জানায় সহপাঠীরা। খবর পেয়ে মোবাইল টিমের মাধ্যমে ফাতেমাকে উদ্ধার করে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। আদালত তাকে সেফ হাউজে রাখার সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
এদিকে সহপাঠীদের অভিযোগ- ফাতেমাকে যারা সহযোগিতা করেছে তাদেরকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দেয়া হচ্ছে। তারা নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডির প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এন.এইচ/