হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক আমীর আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী রহ., ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী ফয়জুল করীম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ও হেফাজতের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ১৩ ও ২৭ নভেম্বর তিনটি সমাবেশে ধোলাইখালে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করে বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ এনে ২০২০ সালের ৭ ডিসেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
আদালত থেকে এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পিবিআইকে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পিবিআই।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৯০% মুসলমানের এই দেশে ভাস্কর্য স্থাপনের বিষয়ে বিবাদীদের এহেন কাজ রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধের আওতাধীন নয়। আলেমদের বক্তব্যে বাংলাদেশের সংবিধান কিংবা রাষ্ট্রের প্রতি বিদ্বেষী মনোভাবের প্রকাশ ঘটেনি।
পিবিআই’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভাস্কর্য স্থাপন প্রসঙ্গে বিবাদীদের দেওয়া বক্তব্য বিবৃতি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তারা প্রত্যেকেই কোনো একটা ইসলামি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। ধর্মপ্রাণ এই মুসলিমপ্রধান দেশে তাদের রয়েছে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা। তাদের বক্তব্যে বাংলাদেশের সংবিধান কিংবা রাষ্ট্রের প্রতি বিদ্বেষী ভাব প্রকাশ ঘটেনি। তাদের বক্তব্যে সরকারের একটি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অসমর্থনমূলক অভিমত প্রকাশ পেয়েছে। আর এই অভিমতের বিষয়টি ধর্মপ্রাণ মুসলিম প্রধান দেশের জনগণের সামনে কোরআন হাদিসের আলোকে বিবাদীরা উপস্থাপন করেছে। একটি স্বাধীন দেশে সরকারি কোনো কাজ বা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন; তা যদি হয় জনবিরোধী ও ব্যক্তি স্বার্থকেন্দ্রিক, জাতি ধর্মবিরোধী তবে সেসব কাজের বিরুদ্ধে মত প্রকাশের জন্য প্রত্যেক নাগরিকের রয়েছে সাংবিধানিক অধিকার।
এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা সারা মুসলিম বিশ্বে মসজিদের শহর হিসেবে পরিচিত, মুসলমানদের এই ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য বিবাদীরাসহ দেশের বিশিষ্ট আলেম দেশের বিশিষ্ট ইসলামিক জ্ঞান সম্পন্ন আলেমগণ ধর্মের প্রশ্নে বজ্র কণ্ঠে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। কাজেই তাদের এই কাজ রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধে বিবেচ্য নয়।
এই প্রতিবেদনে আপত্তি জানিয়েছে বাদীপক্ষ। তাদের আপত্তির জেরে মামলাটি এখন তদন্ত করছে সিআইডির ঢাকা মেট্রো (দক্ষিণ) বিভাগ।
বাদীপক্ষের আপত্তির জবাবে পিবিআই বলছে, আমরা যথাযথভাবেই তদন্ত করেছি। বাদিপক্ষের কোনো অভিযোগই সত্য নয়। তদন্তকালে আমাদের সিনিয়র অফিসার তদারকি করেছেন। মামলার অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ায় ফাইনাল রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে।
সূত্র : বাংলা নিউজ