ভয়াবহ বন্যার কবলে দেশের পূর্বাঞ্চল। বাড়ছে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা। সিলেট-সুনামগঞ্জে বিদ্যুৎহীন প্রায় দুই লাখ গ্রাহক। বিভিন্ন উপজেলার সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এ দুই জেলার। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সিলেটে সেনা মোতায়েন হয়েছে আগেই। এর পরেই পরিস্থিতি মোকাবেলায় যোগ দিয়েছে নৌবাহিনীর বোট ও ডুবুরি দল। বন্ধ আছে ওসমানী বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠানামা। আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে শেরপুর এবং নেত্রকোণার কিছু এলাকায়। অপরদিকে তিস্তায় পানি বাড়তে থাকায় খুলে দেয়া হয়েছে ব্যারেজের সবকটি গেট।
উজানের ঢল আর টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে নগরীর রাস্তাঘাট। পানি ঢুকেছে বসতঘরে। সিলেটবাসী বলছে, স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্যোগে আক্রান্ত হয়েছেন তারা।
সিলেট সদরের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন কোম্পানীগঞ্জ আর গোয়াইনঘাটের। আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছে বানভাসী মানুষ। নগরীতে ৩৬টিসহ জেলায় মোট ৪৭৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও বিদ্যুৎকেন্দ্রে ঢুকে পড়েছে পানি। প্রশাসনের অনুরোধে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান বলেন, পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে আমাদের। কিন্তু উদ্ধার করে নিয়ে আসার মতো যানবাহন পর্যাপ্ত পরিমাণে নেই।
সিলেট ক্যান্টনমেন্টের জিওসি মেজর জেনারেল হামিদুল হক বলেন, ৮টি উপজেলায় আমরা সেনা মোতায়েন করেছি। সেনাসদস্যরা পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নেয়া, বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র নির্বাচন এবং উদ্ধারকৃতদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা, চিকিৎসা সহায়তা দেয়া, খাদ্য গোডাউন, পাওয়ার স্টেশন এবং অন্যান্য স্থাপনা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করা, সীমিত পরিসরে খাদ্য এবং সুপেয় পানি সরবরাহ করা প্রভৃতি কাজ করবেন বলে জানান তিনি।
সুনামগঞ্জ সদরের সাথে সব উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বাড়িঘরে পানি ঢোকায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দুর্গত এলাকার মানুষকে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন পুরো জেলা।
ব্রহ্মপুত্র, তিস্তাসহ উত্তরের নদ নদীর পানি বৃদ্ধ অব্যাহত থাকায় তীরবর্তী নিচু এলাকা প্লাবিত। পানি বেড়ে যাওয়ায় লালমনিরহাটে ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানি বাড়ছে সীমান্তবর্তী অভিন্ন নদ নদীতে। এতে নেত্রকোণা ও শেরপুরের বেশিকিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন লাখো মানুষ।