তুরস্কে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে শান্তি আলোচনাকে ‘ইতিবাচক’ বলা যেতে পারে বলে মনে করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর এই প্রথম দুই শহর কিয়েভ ও চেরনিহিভ থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় রাশিয়া।
বার্তা সংন্থা রয়টার্রসের খবরে জানা গেছে, দুই শহরের কাছ থেকে সৈন্য সাময়িকভাবে সরালেও রাশিয়া সম্ভবত ইউক্রেনের অন্যান্য অংশে আক্রমণ আরও জোরদার করতে যাচ্ছে। পশ্চিমা কয়েকটি দেশ থেকে এমন আশঙ্কার কথা জানা যায়। নিজের টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে জেলেনস্কি বলেছেন, ‘আলোচনার প্ল্যাটফর্ম থেকে আমরা যে ইঙ্গিত পাচ্ছি, তাতে একে ইতিবাচক বলা যেতে পারে। কিন্তু এই ইঙ্গিত রাশিয়ার গোলাবর্ষণে ফাটল তৈরি হয়েছে সেটাকে অপসারণ করবে না।’
‘তাছাড়া আমাদের ধ্বংসের জন্য যারা হামলা অব্যাহত রেখেছে সে রকম একটি রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট প্রতিনিধিদের কথায় বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই,’ বলেন ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ইউক্রেনিয়ানরা নির্বোধ নয়। ইতোমধ্যে বিগত ৩৪ দিনের আগ্রাসন থেকে তারা অনেক কিছু শিখেছে। এ ছাড়া দনবাসে গত ৮ বছরের যুদ্ধের অভিজ্ঞতা তো আছেই। যে কারণে এই ইঙ্গিতেই একটি সুনির্দিষ্ট ফলাফল বিশ্বাস করা যেতে পারে না।
মঙ্গলবার ইস্তাম্বুলে নতুন রাউন্ডের দুই দিনব্যাপী আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রথম দিন ৩ ঘণ্টা ধরে চলে আলোচনা শেষে রাশিয়া ও ইউক্রেনের আলোচকরা ফলাফল সম্পর্কে বিশ্বকে অবহিত করার জন্য পৃথকভাবে প্রেস ব্রিফিং করেন। এ সময় ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা সম্ভাব্য ভবিষ্যতের শান্তি চুক্তির ক্ষেত্রে তুরস্কসহ ৮টি দেশকে গ্যারান্টার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। অপরদিকে, রাশিয়া পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি ভবিষ্যতের আলোচনার জন্য আস্থা বাড়াতে ইউক্রেনীয় শহর কিয়েভ এবং চেরনিহিভের দিকে সামরিক কার্যকলাপ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করবে।
রাশিয়ার উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেক্সান্ডার ফোমিন সাংবাদিকদের জানান, পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি, আরও আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টি এবং সমঝোতা ও চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্য অর্জনে কিয়েভ ও চেরনিহিভের দিকে সামরিক কর্মকাণ্ডের মাত্রা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে ইউক্রেনের যেসব অংশে এখনো তুমুল লড়াই চলছে সেসব এলাকার বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি।
ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফ বলছেন, কিছু এলাকায় সামরিক অভিযানের তীব্রতা কমানোর প্রতিশ্রুতি সম্ভবত বিভিন্ন ইউনিটের পালাবদল ও অন্যদের বিভ্রান্ত করার লক্ষ্যে। এদিকে রাশিয়া অভিযোগ করে বলেছে, ইউক্রেনের বাহিনী বিভিন্ন শহরে অস্ত্রবিরতির সুযোগ নিয়ে পুনর্গঠিত হচ্ছে এবং হাসপাতাল ও স্কুলকে ব্যবহার করে সেসব স্থাপনা থেকে গুলি ছুড়ছে। সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।