আগামী শুক্রবার ২৫ ফেব্রয়ারী শুরু হচ্ছে ঐতিহাসিক চরমোনাই মাহফিল। বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ইসলামী মহাসম্মেলন। বাংলাদেশসহ বিশ্বের নানা প্রান্ত হতে ধর্মপ্রাণ মানুষ এই মাহফিলের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করছে।
দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে লক্ষ লক্ষ মানুষ এই মাহফিলের মাধ্যমে হেদায়াতের মিছিলে সমবেত হতে সক্ষম হয়েছে। চরমোনাই মাহফিলের রূহানী আমেজ দিনদিন অবিশ্বাস্য গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
লক্ষ লক্ষ মানুষ নদীর স্রোতের মতো ছুটে আসেন কীর্তনখোলা নদীর তীরে। দিকভ্রান্ত পথহারা মানুষ এই ময়দানের বরকতে আল্লাওয়ালাদের কাতারে শামিল হওয়ার প্রতিযোগিতা করে। ইসলামের পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনা নিয়ে ব্যক্তিগত জীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন ও রাজনৈতিক জীবনে দীনি দীক্ষা নিয়ে সফল মুত্তাকী মানুষে পরিণত হয়।
এই মাহফিলকে কেন্দ্র করে দেশ-বিদেশের খ্যাতিমান শীর্ষ ওলামা হযরত আল্লাহওয়ালাদের মিলনমেলায় এসে অভিভূত হয়েছেন। দুনিয়ার কালিমা, শয়তানের প্ররোচনায় রোগাক্রান্ত অন্তর, স্বার্থ ও মোহের ঘুর্ণাবর্তে পড়ে নষ্ট হওয়া এই জীবনকে রূহানিয়াতের নুরে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার জন্য এই মাহফিল হেদায়াতের কষ্টিপাথর। ইশকের আগুনে নিজের আমিত্বকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে নিজেকে খাঁটি সোনায় পরিণত করবার একটি মারাফাতের কারখানা। মাহফিলের তাকওয়াপূর্ণ পরিবেশ, চমৎকার শৃঙ্খলা, রূহানী বয়ান, মুজাহিদদের ক্ষণেক্ষণে জিকিরের ধ্বণিতে মনে হয় মহান আল্লাহ আসমান থেকে লক্ষ লক্ষ ফেরেস্তা নাযিল করেছেন।
যাদের সৌভাগ্য হয়েছে রূহানিয়াত ও জিহাদের এই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হবার তাদের কাছে আমার এই বর্ণনা কোনভাবেই যথেষ্ট নয়। কারণ মাহফিলে নবাগত মুজাহিদদের অনুভূতি, অল্পসময়ে তাদের জীবনের আমূল পরিবর্তন, পুরো ময়দানে জান্নাতি পরিবেশ, নুরের ঝলকানি, আসমান থেকে বর্ষিত আল্লাহ পাকের রহমত, প্রভুর সনে নিবেদিতপ্রাণ আশিকদের কলিজা নিংড়ানো আকুতি, জাহান্নামের ভয়ে পাগলদের বুকফাটা কান্না, অশ্রুসিক্ত ময়দান ও শায়খের মর্মস্পর্শী বয়ানের বর্ণনা দৃশ্যমান কাগজে কলমে তুলে আনা কখনো সম্ভব নয়! যারা এখনো এই মাহফিলে যাননি তারা বিশ্বাসই করবেন না যে এই ধরার বুকে এখনো আল্লাহ রহমত সরাসরি দেখতে পাওয়া যায়।
দু একজন ব্যক্তি এই ঐতিহাসিক মাহফিল নিয়ে তীর্যক মন্তব্য করেন, চরমোনাই তরিকা নিয়ে না জেনে, না বুঝে সমালোচনা করেন, তাদের উচিত অন্তত একবার এই ময়দানে ঘুরে আসা। উচিত সরেজমিনে পর্যবেক্ষক করে বিরূপ মন্তব্য করা। তাদের জন্য সুযোগ আসন্ন ২৫, ২৬ ও ২৭ ফেব্রুয়ারি”২২ তিনদিন ব্যাপী এই মাহফিলে অংশগ্রহণ করা।
সাথে সাথে যারা নিজের অন্তরকে সকল পাপাচার থেকে মুক্ত করে, বিশুদ্ধ আকিদা বিশ্বাস নিয়ে, শয়তানের সকল প্ররোচনাকে পদদলিত করে প্রকৃত আল্লাহর আশেক হয়ে ঈমান নিয়ে কবরে যেতে চাই তাদের জন্য এই মাহফিল সময়ের শ্রেষ্ঠ বাতিঘর।
লেখক: মুহাম্মদ দেলাওয়ার হোসাইন সাকী
এন.এইচ/