সাইফুল টাঙ্গাইল, টাঙ্গাইল:
স্থাপত্য শিল্পের অনন্য নিদর্শন টাঙ্গাইলের সখীপুরের দেওয়ানবাড়ি মসজিদ। উপজেলার কচুয়া গ্রামের দেওয়ান বাড়িতে মসজিদটি অবস্থিত। এটি মুঘল আমলের শেষ দিকে নির্মাণ করা হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। দেড় শ বছরের বেশি সময় ধরে আটটি গম্বুজ নিয়ে এখনো স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে আছে মসজিদটি।
এটি নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে ইটের গুঁড়ি ও চুনাপাথর দিয়ে। মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান হাবিবুর রহমান ৮৬) এসব তথ্য জানান।
দেওয়ান হাবিবুর রহমান আরও জানান, দেওয়ান পরিবারের পূর্বপুরুষ শাহ্সূফি মো. গোমর আলী দেওয়ান (১৭৬৫-১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দ) মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন।
মসজিদের প্রতিটি দেয়াল ৪০ ইঞ্চি পুরু। যার ভেতরে-বাইরে নানা কারুকাজ খচিত। চোখ জুড়ানো বিস্ময়কর এই প্রাচীন স্থাপত্যের পিলারগুলোতে কোনো প্রকার লোহা বা রড ব্যবহার করা হয়নি বলে জানান এলাকার প্রবীণ মুসল্লিরা।
জানা যায়, এই মসজিদের জন্য প্রায় পাঁচ একর জমি ওয়াক্ফ করে দেওয়া হয়েছে। মসজিদের পাশেই রয়েছে বিশাল পুকুর। পুকুরের চারপাশে নানা প্রজাতির গাছপালা, আছে কবরস্থান। যেখানে চার নিদ্রায় শায়িত রয়েছেন হজরত শাহ্সূফি মো. গোমর আলী দেওয়ানের ছেলেসহ তাঁর পরবর্তী বংশধর।
মসজিদের পাশে বিশাল এক ঈদগাহ মাঠ। যেখানে প্রতি ঈদের নামাজে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মুসল্লি সমবেত হন। দেওয়ান বাড়ি মসজিদে একসঙ্গে প্রায় তিন শ মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন। মসজিদের ভেতরে প্রতিদিন সকালে নিয়মিত কোরআন শিক্ষা দেন পেশ ইমাম আইন উদ্দিন।
মসজিদটির বর্তমান পরিচালনা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান হাবিবুর রহমান বলেন, ‘মসজিদটি আমার দাদার বাবা গোমর আলী দেওয়ান নির্মাণ করেছিলেন। এটি প্রায় দেড় শ বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছে।’
দেওয়ান বংশের সুযোগ্য উত্তরসূরি নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বাদল বলেন, ‘ আমার জানামতে এই মসজিদের সমসাময়িক বা এর আদলে আর কোনো মসজিদ সখীপুরে খুঁজে পাওয়া যাবে না।’