নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মেট্রো সিআইডিতে কর্মরত নারী এসআই সুমাইয়া বেগম লাকী ও সদ্য সাময়িক বরখাস্তকৃত ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের কর্মরত এসআই ওবায়দুল কবির সুমন দম্পতির বনিবনা না হওয়া নিয়ে পারিবারিক কলহের জেরে উভয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেন। এসব মামলায় তারা দু’জনেই আত্মসমর্পনে জামিন নেন। এতে উভয়ে পুলিশের বিধিমালা লঙ্গন করলেও শুধু এসআই ওবায়দুল কবির সুমনকে এ লঙ্গনের দায়ে কতৃর্পক্ষ বরখাস্ত করা হয়েছে এবং এসআই লাকী চাকরিতে বহাল তবিয়াতের রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সদ্য বরখাস্ত এস আই সুমন জানান, পারিবারিক কলহের জেরে লাকি বায়না ধরে তাকে ২০লাখ টাকা ডিপোজিট করে দিতে হবে এবং তাঁর মাকে পাঁচ লাখ টাকা বিল্ডিং করার জন্য দিতে হবে। এটা না করলে সে ঘর সংসার করবে না। দিনের পর দিন উক্ত টাকা ডিপোজিট না করে দেওয়ায় আমার অবাধ্য হয়ে পড়ে এবং উশৃঙ্খল জীবন যাপন করতে থাকে এবং পরকিয়ায় লিপ্ত হয়ে পড়ে।
একসময় আমাকে না জানিয়ে বদলি নিয়ে রাজশাহী চলে যান। এক পর্যায়ে ২০২০ সালের ২৫ অক্টোবর সুমন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত—১৯ ঢাকায় ১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইনের (সংশোধনী ২০১৮) ৩ ধারায় মামলা করি। এ মামলা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি এ মামলায় জামিন পান লাকী। এরমধ্যে ১৩ ডিসেম্বর লাকীকে তালাক দেওয়া হয়। এ নোটিশ পেয়ে ২৭ ডিসেম্বর আমার বাসার সামনে কয়েকজনককে নিয়ে এসে আমাকে মেরে ফেলার হামলা চালান। পরে কোনো উপায় না পেয়ে ফের নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত—ঢাকা—তে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১০৭/১১৭ মামলা করি। যা বর্তমানে আদালতে বিচারাধনি আছে।
জানা যায়, এদিকে গত ২০ ডিসেম্বর রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় নারী ও শিশু নিযার্তন দমন আইনে সুমনের বিরুদ্ধে মামলা করেন লাকী। এতে সুমন সুপ্রীম কোর্টে আবেদন করে পরদিন কোর্ট থেকে আট সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করান। এ মামলার এজাহার নামীয় আসামী ও আত্মসমর্পনে জামিনপ্রাপ্ত হওয়ায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বিধিমালা/২০০৬ এর ৯/(১) মোতাবেক ওবায়দুল কবির সুমন চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে মামলা ও জামিন সংক্রান্ত তথ্যাদি বিলম্বে প্রাপ্ত হওয়ায় এ আদেশ জারি করে গত ১ জুন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের উপপুলিশ কমিশনার আব্দুল মান্নান স্বাক্ষরিত কাযার্লয় আদেশে জারি করেন। যা ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে বলে জানান।
ওবায়দুর রহমান সুমন বলেন, আমাকে যদি মামলা এবং আত্মসমর্পণে পুলিশের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বরখাস্ত করা হয়, তাহলে সুমাইয়া বেগম লাকীর বিরুদ্ধে বিজ্ঞ চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে ১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইনের (সংশোধনী ২০১৮) মামলায় তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয় এবং আত্মসমর্পন করে জামিন হওয়াতে সেও পুলিশের শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়েছে। তাহলে কেনো তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। এখন আমার দাবি শৃঙ্খলা সেও ভঙ্গ করেছে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হোক।