ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের টিকা দিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর খুবই খুশির খবর এই যে, দ্বিতীয় ধাপের টিকাদানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা প্রসঙ্গে আজ মঙ্গলবার বিবিসি বাংলার ফেসবুক লাইভ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলে তিনি।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে আজ একটি বৈঠকে ছিলাম। সেখানে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকা দিয়েই যেন রিওপেনিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এটি একটি বড় ঘটনা। আমরা আশা করি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছেলেমেয়েদের টিকা কার্যক্রমের আওতায় এনে বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে পারব। শিক্ষক-কর্মীসহ সব শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার নির্দেশনা এসেছে। সামনে যে পাঁচ-ছয় লক্ষ টিকা আসবে সেখান থেকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যে সংখ্যা তাতে পর্যাপ্ত হবে। সেখান থেকে আমাদের টিকা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। এটা খুবই খুশির খবর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারেরই একজন সদস্য। তিনি যখন এই নির্দেশনাটি দিলেন। এটি আমাদের জন্য খুবই গর্বের বিষয়। অত্যন্ত আনন্দের বিষয়।’
ঢাবি উপাচার্য বলেন, ‘যেটা বলা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস পরীক্ষা নেওয়া সেটা মন্দের ভাল। কিন্তু আমরা একবারে ভালটাই করতে পারব।’
অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আরও একটি সুখবর আছে, সেটি হলো- জুন মাসের মাঝামাঝি স্কুলগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালুর ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রীকে পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
উপাচার্য জানান, দেশে দ্বিতীয় ধাপে টিকাদান শুরু হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মী ও শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাবেন। এ লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে একটি ডিও লেটার পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
উপস্থাপক আফরোজা নিলা ঢাবি উপাচার্যের উদ্দেশে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অনেকেই বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পরীক্ষাগুলো নিয়ে নেওয়া যায়, আবার অকেকে বলছেন অনলাইনে ধাপে ধাপে পরীক্ষাগুলো নিয়ে নেওয়া সম্ভব।’
বিবিসি বাংলার লাইভ অনুষ্ঠান চলাকালেই অন্তত তিনবার ঢাবি উপাচার্যের এবং বেশকয়েকবার অন্যদের লাইভ অডিও বন্ধ হয়ে যায়। একপর্যায়ে বিরক্ত হয়ে অধ্যাপক আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘এই যে একারণেই অনলাইনে ক্লাস পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয় না। এখানেই তার প্রমাণ মিলছে।’
ড. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘সমস্যাটি শুধুমাত্র বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। সারাবিশ্বেই অবস্থা একই। মহামারিতে স্থির সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকা যায় না। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। ইউরোপ ও ভারত রিওপেনিংয়ে গিয়েছিল, পরে তারা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মধ্য দিয়ে তার মাশুল দিতে হয়েছে তাদের।’
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘কোনো ভাইরাস একেবারে নির্মূল হয় না। কোনো না কোনো পর্যায়ে থেকেই যায়। অতএব করোনাভাইরাস শেষ হয়ে যাবে তারপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে হবে এমনটি ভাবলে অন্তত আগামী দুইতিন বছরও তা খোলা সম্ভব হবে না। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দিয়ে, সবাই বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরে, স্যানিটাইজার ব্যবহার করে, ক্লাসে দূরে দূরে বসে কিন্তু কার্যক্রম চালানো যায়।’