গত এক সপ্তাহ ধরে জেরুজালেমের শেখ জারাহ এলাকায় ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে সেখানে একটি অবৈধ ইহুদি বসতি নির্মাণের পাঁয়তারা করছে ইসরাইল।
১৯৪৮ সাল থেকে ওই এলাকায় বসবাসকারী ২৮টি পরিবারকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের সময় তাদের ওপর ইহুদি বসতকারীদের সঙ্গে ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালায়।
নারী ও শিশুদের রাতের আঁধারে ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে দিচ্ছে এবং পুরুষ সদস্যদের বিনাকারণে আটক করে নিয়ে যাচ্ছে।
জেরুজালেমে পবিত্র মসজিদ আল-আকসায় টানা তিনদিন ধরে নিরপরাধ ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ওপর হামলা চালিয়েছে ইহুদিবাদী ইসরাইলি সেনারা।
ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব, ইরান, তুরস্ক, বাংলাদেশসহ প্রায় সব মুসলিম দেশ।
দখলদারদের এমন তাণ্ডবের প্রতিবাদে মুসলিম বিশ্ব ক্ষোভে ফুঁসলেও এই ইস্যুতে পশ্চিমাদের সুর অনেকটাই নমনীয়। ইসরাইলি তাণ্ডব নিয়ে তেমন কিছু না বললেও তারা সরব হয়েছে তিনদিন পর ইসরাইলের দিকে হামাসের রকেট ছোড়া নিয়ে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলো এ বিষয়ে প্রায় একই ধরনের কথা বলছে।
ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদ না জানিয়ে উল্টো সহিংসতা বৃদ্ধির জন্য ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসকে দায়ী করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ইসরাইলে একঝাঁক রকেট হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এটি অগ্রহণযোগ্য উস্কানি।
ইসরাইলি বাহিনীর হাতে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যার বিষয়ে প্রশ্ন করলে এ মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, উভয় পক্ষের প্রাণহানিই গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া হয়েছে।
একইধরণের কথা বলছে যুক্তরাজ্যও। সহিংসতার জন্য ফিলিস্তিনিদেরই দায়ী করেছে দেশটি।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেছেন, জেরুজালেমসহ ইসরাইলের অভ্যন্তরীণ জায়গাগুলোতে হামাসের রকেট হামলার নিন্দা করছে যুক্তরাজ্য।
এক টুইটে তিনি বলেন, জেরুজালেম ও গাজায় চলমান সহিংসতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। উত্তেজনা কমাতে উভয় পক্ষ থেকে আমাদের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে হবে এবং বেসামরিক মানুষজনকে লক্ষ্যবস্তু বানানোর অবসান ঘটাতে হবে।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস টুইট বার্তায় বলেছেন, গাজা থেকে ইসরাইলের বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে রকেট হামলা এবং তার পাল্টা জবাবে গাজায় ইসরাইলের বিমান হামলা কোনোটিই গ্রহণযোগ্য ও ন্যায়সঙ্গত নয়। এমন সংঘাত কখনই সমাধানের পথ বের করে না। এর পরিবর্তে যুক্তিযুক্ত পদক্ষেপের দিকে এগোতে হবে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম পক্ষপাতদুষ্টু এবং বৈষম্যমূলক আচরণ করছে বলে অভিযোগ করেছেন ফিলিস্তিনিরা।
নিরপরাধ ফিলিস্তিনিদের ওপর ইহুদিবাদী ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলা ও নির্যাতনের ছবি পোস্ট দেওয়ার পর এগুলো মুছে ফেলছে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম।
শুধু তাই নয়, ফিলিস্তিনিদের সতর্ক করা হচ্ছে— তারা যেন এ ধরনের পোস্ট আর না দেন। সূত্রঃ যুগান্তর