চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সহিংসতার ঘটনায় করা তিন মামলায় হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুফতি হারুন ইজাহারের তিন দিন করে নয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হেলাল উদ্দিন ভার্চ্যুয়াল শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
একই সঙ্গে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাটহাজারী থানার আরও দুই মামলায় হারুন ইজাহারকে গ্রেপ্তার (শ্যোন অ্যারেস্ট) দেখিয়েছেন আদালত।
গত বুধবার রাতে নগরের লালখান বাজার জামেয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসা থেকে হারুন ইজাহারকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে র্যাব জানায়, তিনি হাটহাজারীর সহিংসতার ঘটনার ‘মদদদাতা’।
আদালত সূত্র জানায়, হেফাজতে ইসলামের আগের কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মঈনুদ্দীন রুহীর গত বছরের সেপ্টেম্বরে করা মারধরের মামলা, থানায় হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে পুলিশের করা দুই মামলাসহ তিন মামলায় হারুনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হাটহাজারী থানার পুলিশ গত বৃহস্পতিবার সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন করে। আদালত সোমবার শুনানির দিন ধার্য রাখেন।আরও পড়ুন‘যুব হেফাজত’ গঠন করতে চেয়েছিলেন হারুন ইজাহার
চট্টগ্রাম জেলা কোর্ট পরিদর্শক হুমায়ুন কবির দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, হাটহাজারী থানার তিন মামলায় তিন দিন করে নয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। একই সঙ্গে সিআইডির তদন্ত করা আরও দুই মামলায় হারুনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
হারুন ইজাহারের আইনজীবী আবদুস সাত্তার বলেন,
ঘটনায় জড়িত না থাকলেও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে হারুন ইজাহারকে এসব মামলায় জড়ানো হয়েছে। তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না। থাকেন শহরের লালখান বাজারে। মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। তাই রিমান্ড বাতিল ও নতুন মামলায় গ্রেপ্তার না দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করা হয়। একই সঙ্গে জামিনের আবেদন করা হয়। আদালত সব আবেদন নাকচ করে দেন।
মুফতি হারুন ইজাহার ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের চেয়ারম্যান মুফতি ইজাহারুল ইসলামের ছেলে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরবিরোধী কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত ২৬ মার্চ জুমার নামাজের পর ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়।
এ ঘটনার জের ধরে হাটহাজারী ও পটিয়ায় সহিংসতার ঘটনা ঘটে। ৪ হাজার ৩০০ জনকে আসামি করে পটিয়া ও হাটহাজারী থানায় হামলা, ভূমি কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে জড়িত থাকার অভিযোগে করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনে পৃথক সাতটি মামলা হয়। পরে ২২ এপ্রিল হেফাজতের নেতা-কর্মীদের আসামি করে পৃথক তিনটি মামলা করে হাটহাজারী থানার পুলিশ। এর মধ্যে দুই মামলায় বিলুপ্ত কমিটির আমির জুনায়েদ বাবুনগরীকে আসামি করা হয়। তিন মামলায় আসামি করা হয় তিন হাজার জনকে। এর মধ্যে ১৪৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
হারুন ইজাহার বিস্ফোরক মামলায়ও ২০১৩ সালে গ্রেপ্তার হন। পরে জামিনে মুক্তি পান। ওই মামলায় তাঁর বাবা মুফতি ইজাহারও আসামি। এটি বিচারাধীন।
হারুন ইজাহারের বিরুদ্ধে ২০টি মামলা রয়েছে। আজ নতুন দুটিসহ তাঁর বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা দাঁড়াল ২২।