করোনা’র অজুহাত দেখিয়ে জাতিকে পরিকল্পিতভাবে বোকা বানানো হচ্ছে। কোন এক অজানা ভয়ের অজুহাতে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে দুই দুইটা শিক্ষা বর্ষ নষ্ট করে দেয়া হয়েছে। অমার্জনীয় ও অদূরদর্শী এ সিদ্ধান্তের কারণে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর আত্মপরিচয়ের সংকট তৈরি হয়েছে যা আজীবন খুব বাজেভাবে ঘৃণাভরে মূল্যায়িত হবে।
আজ (২৩ মে’২১) রবিবার ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল করীম আকরাম ও সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মুহাম্মাদ আল-আমিন শিক্ষা ব্যবস্থার চলমান অচলাবস্থা নিরসন করে যথাযথ সুরক্ষা নিশ্চিত পূর্বক অনতিবিলম্বে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার জোরালো দাবি জানিয়ে এক যৌথ বিবৃতিতে উপরোক্ত কথা বলেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাবের অজুহাতে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত বন্ধ রাখার দরূণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো এখন ধুলোবালির স্তুপ এবং পোকামাকড় ও কীট পতঙ্গের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে কোন ভ্রুক্ষেপ না করে সরকার দফায় দফায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের নোটিশ দিয়ে যাচ্ছে। খোড়া অজুহাত দাড় করিয়ে সরকারের এমন সিদ্ধান্ত চরম হটকারিতার শামিল। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও হাট-বাজারসহ অধিক লোক সমাগমের সকল স্থানই উন্মুক্ত করে দিয়ে সরকার দ্বি-মূখী আচরণ করছে। পরিকল্পিতভাবে দফায় দফায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে একটি কলঙ্কিত ইতিহাস রচনার পাশাপাশি শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষার্থীদের মেধাকে জীবন্ত কবরস্থ করা হচ্ছে। সচেতন ছাত্র সমাজ এই ধ্বংসাত্মক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অচিরেই রুখে দাঁড়াবে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। অনেকেই অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িয়ে যাচ্ছে, অনেকেই মাদক সেবনের মতো ভয়ংকর পথ বেছে নিচ্ছে, অনেকই অবসাদগ্রস্থ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় উঠতি বয়সী শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে কিশোর গ্যাং গড়ে উঠছে, যা অভিভাবকসহ সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য সীমাহীন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘ অবসরে থাকার দরুণ শিক্ষারা ফ্রি ফায়ার ও পাবজি’র মতো এমনসব জীবন বিধ্বংসী গেমসে আসক্ত হয়ে পড়েছে যা তাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক জীবনে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। চাঁদপুরের মতলবে ফ্রি ফায়ার গেমস খেলতে খরচের টাকা না পাওয়ায় যুবকের আত্মহত্যাই প্রমাণ করে যুবসমাজ কতোটা হুমকির পথে পা বাড়াচ্ছে। এর থেকে উত্তরণের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শিশু কিশোর ও যুবকদের পড়াশোনায় ব্যস্ত রাখাই একমাত্র সমাধান বলে মনে করছি।
নেতৃবৃন্দ জোরালো তাগিদ দিয়ে বলেন, শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে চলমান নাটক দেখতে দেখতে বিরক্ত হয়ে পড়েছে। আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এই অচলাবস্থা আর দেখতে চাই না। যেই যুক্তিতে হাট-বাজার, কল-কারখানা অফিস-আদালত খুলে দেয়া হয়েছে একই যুক্তিতে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিন। আমরা আমাদের বিদ্যালয়ে যেতে চাই। এটি আমাদের অধিকার।
নেতৃবৃন্দ সরকারের প্রতি হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, শিক্ষার্থীদের যথাযথ সুরক্ষা নিশ্চিত পূর্বক অতিদ্রুত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিন, অন্যথায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষা ব্যবস্থার সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে ও শিক্ষার্থীদের সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত রুখে দিতে সকল ছাত্র জনতাকে সাথে নিয়ে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন দেশব্যাপী দুর্বার গণ আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে।