যথাযথ সুরক্ষা নিশ্চিত পূর্বক অবিলম্বে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে আজ ১০ জুন ২০২১, বৃহস্পতিবার মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন মুরাদনগর উপজেলা নেতৃবৃন্দ। সকালে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। সংগঠনের মুরাদনগর উপজেলা সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাবিব, সাংগঠনিক সম্পাদক আনাস আহম্মেদ-এর নেতৃত্বে স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কুমিল্লা জেলা উত্তর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ মাহদি হাসান।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন মুরাদনগর উপজেলা সভাপতি এম.এম. মফিজুল ইসলাম, সেক্রেটারী মুহাম্মদ হোসেন মোল্লা, যুব আন্দোলনের সভাপতি মুহা. সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শোয়াইব আহমদসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এর আগে সকালে মুরাদনগর আল্লাহ চত্তরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করতে চাইলে প্রশাসন তা করতে দেয়নি। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন নেতৃবৃন্দ।
স্মারকলিপিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষার্থীরা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সকলে। দীর্ঘ ১৬ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। আজ এক অনিশ্চিত গন্তব্যে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ ৪৪৭ দিন যাবত দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা হয়ে পড়ছে মানসিক বিকারগস্ত, জড়িয়ে পড়ছে নানাবিধ সামাজিক অপরাধে। বই-খাতা রেখে মাদক, ইয়াবা ও শিশু ধ্বংসাত্মক ডিভাইসে সময় কাটাচ্ছে আনন্দচিত্তে। অনলাইন গেমস খেলতে টাকা না পেয়ে অনেকে আত্মহত্যাও করছে। অনেকে পাড়া-মহল্লায় জড়িয়ে পড়ছে কিশোর গ্যাং এর মত অনৈতিক অপরাধমূলক সংগঠনে। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত অনেক মধ্যবিত্ত ও নিন্মবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা পড়েছে চরম আর্থিক সংকটে। যাদের টিউশনির টাকায় নিজেদের খেয়ে-পরে বেঁচে থাকাসহ চলতো পরিবারের ভরণপোষণ, তারা আজ অসহায়। নানামুখী সংকটে ঐ সকল শিক্ষার্থীরা আজ দিশেহারা। আর্থিক সংকট, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ সাথে সেশনজট সবমিলিয়ে জীবন হয়ে উঠেছে বিভীষিকাময়। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের তথ্যমতে এমন চরম উদ্বেগ ও উৎকন্ঠায় আজ পর্যন্ত আত্মহত্যা করেছে ৪০ জন শিক্ষার্থী। এমতাবস্থায় জাতির আগামী দিনের ভবিষ্যৎ শিক্ষাধর্থীদের কথা বিবেচনা করে অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কার্যকরি উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
স্মারকলিপিতে দেশের সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৫দফা দাবী পেশ করা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১. অগ্রধিকার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের টিকা নিশ্চিত করে অনতিবিলম্বে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
২. শিক্ষার্থীদের শিক্ষায় ফিরিয়ে আনতে ব্যাপকহারে শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. শিক্ষার্থীদের শিক্ষামুখী করতে সরকারিভাবে “এসো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাই” নামে কর্মসূচি পালন করতে হবে।
৪. চলমান বাজেটে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৫. চলমান বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।