ফিলিস্তিনিদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া দুই জনগোষ্ঠীর (ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি) মধ্যে সংঘাতের অবসান সম্ভব নয় বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ওয়াশিংটন সফররত দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইনের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ইসরায়েলিদের ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি যাতে অব্যাহত থাকে, সেজন্য তিনি প্রার্থনা করছেন।
তিনি আরও বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাতের একমাত্র সমাধান দুটি আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা।
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার পুনর্গঠনে অন্য দেশের সঙ্গে মিলে বড় ধরনের সহায়তা প্যাকেজের প্রতিশ্রুতি দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে টানা ১১ দিনের সংঘাতের পর শুক্রবার (২১ মে) থেকে চলছে যুদ্ধবিরতি, যার পেছনে কুশীলব হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ভূমিকা রেখেছে বলে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে।
বাইডেন বলেন, হামাস যাতে অস্ত্রের মজুদ না গড়তে পারে তা নিশ্চিত করতে ইসরায়েলি দখলে থাকা ওয়েস্ট ব্যাংকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্যালেস্টাইনিয়ান অথরিটির সঙ্গে সমন্বয় করে ওই অঞ্চলে সহায়তা দেওয়া হবে।
“একটা বিষয় স্পষ্ট করা দরকার: একটি স্বাধীন ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের অস্তিত্ব যতদিন না ওই অঞ্চলের স্বীকৃতি পাবে, ততদিন কোনো শান্তি আসবে না।”
গত ১০ মে হামাসের রকেট হামলার জবাবে সামরিক অভিযান শুরুর কথা জানায় ইসরায়েল; বিমান হামলার পাশাপাশি গাজা সীমান্তে কামান-ট্যাংক থেকেও গোলা বর্ষণ চলতে থাকে।
এতে নারী ও শিশুসহ প্রায় আড়াইশ ফিলিস্তিনি নিহত হয় বলে বিবিসি জানিয়েছে। অন্যদিকে হামাসের রকেট হামলায় ১২ ইসরায়েলি নিহত হওয়ার খবরও এসেছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান উপেক্ষা করেই সংঘাত চলছিল। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে হামলা বন্ধ না করার কথাই বলা হচ্ছিল।
পরে যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ নিয়ে আসা প্রতিবেশী দেশ মিশরের প্রস্তাবে দুই পক্ষ শুক্রবার থেকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়।
ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংঘাত বন্ধে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল দীর্ঘদিন ধরে জেরুজালেমকে রাজধানী হিসেবে ভাগাভাগি করে ইসরায়েলের পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের জন্য আলাদা রাষ্ট্রের ধারণাকে সামনে রেখে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ফিলিস্তিনিদের উপেক্ষা করে অন্ধভাবে ইসরায়েলকে সমর্থন করায় এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি সমালোচিত হয়েছে।
তার প্রশাসনও দুই রাষ্ট্র সমাধান নিয়ে হাজির হয়েছিল। কিন্তু তাতে ‘ইসরায়েলকে নিরাপত্তার দায়িত্ব দিয়ে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে সীমিত সার্বভৌমত্ব দেওয়ার’ প্রস্তাব থাকায় তা প্রত্যাখ্যাত হয়।
তবে শুক্রবার বাইডেন যে কথা বলেছেন, তাতে সেই অবস্থান থেকে সরে গিয়ে ফিলিস্তিনিদের জন্য পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠারই ইঙ্গিত ছিল।