গত ২৬ জুন রিফাত হত্যাকাণ্ডের পর তাঁর বাবা আব্দুল হালিম দুলাল শরীফ মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন। এরপর ১৩ জুলাই রিফাত হত্যাকাণ্ডে মিন্নি জড়িত থাকার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। পরদিন মিন্নিকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করা হয়।বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী থেকে ফাঁসির আসামি হয়েছেন নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি।
ফাঁসির আদেশ পেয়েছে রিফাত ফরাজি, আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান, আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি।
খালাস পেয়েছেন মো. মুসা, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুন।
উল্লেখ্য, এই মামলায় প্রধান সাক্ষী ছিলেন রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। পরে তাকে সাত নম্বর আসামি করে ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। মামলার প্রধান ও প্রত্যক্ষ সাক্ষী মিন্নিকে আসামি করার পেছনে যেসব কারণ রয়েছে, তার কিছুটা জানা গেছে পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার মাধ্যমে।
জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন ওই কর্মকর্তা জানান, মিন্নিকে রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করার পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। যার মধ্যে প্রথমত মিন্নি তার স্বামী রিফাত হত্যার ঘটনায় সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।রিফাত হত্যায় নয়ন বন্ডের সঙ্গে পরিকল্পনায় ছিল মিন্নি। ২৬ জুন ঘটনার দু’দিন আগে রিফাত শরীফ হেলাল নামে তার এক বন্ধুর মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। হেলাল রিফাত শরীফের বন্ধু হলেও নয়ন বন্ডের খুব ঘনিষ্ঠ। তাই ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধারের জন্য নয়ন বন্ড দ্বারস্থ হয় মিন্নির। নয়ন বন্ডের অনুরোধে হত্যাকাণ্ডের দু’দিন আগে রাতে সেই ফোন রিফাত শরীফের কাছ থেকে উদ্ধার করে মিন্নি। কিন্তু এ ফোন উদ্ধার করতে গিয়ে রিফাত শরীফের মারধরের শিকার হন মিন্নি। পরে হত্যাকাণ্ডের আগের দিন নয়নের সঙ্গে দেখা করে মিন্নি সেই ফোন তার হাতে তুলে দেন। এ সময় মিন্নি তার স্বামী রিফাত শরীফের হাতে যে মারধরের শিকার হয়েছেন তার প্রতিশোধ নিতে বলেন নয়নকে। এরপর ওইদিন বিকেলে বরগুনা কলেজ মাঠের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নয়ন বন্ড ও তার বাহিনীর সঙ্গে রিফাত শরীফকে মারধরের বিষয়ে সভা করেন মিন্নি। তা ছাড়া রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের আগে এবং পরে নয়ন বন্ডের সঙ্গে মিন্নির একাধিকবার মোবাইল ফোনে কথা হয়েছে।