দেশবাসী ঘৃণাভরে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ প্রত্যাখ্যান করেছে দাবি করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সরকারের যুগপূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অসত্য কথা বলেছেন। তার এ বিভ্রান্তিকর ও দুরভিসন্ধিমূলক ভাষণ অন্তঃসারশূন্য কথামালার ফুলঝুরি ছাড়া আর কিছুই নয়।
শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র হত্যা, ভোটাধিকার হরণ, খুন, গুম, অপহরণ, ধর্ষণ, টাকা পাচার, দুর্নীতি-লুণ্ঠন ও দুর্বৃত্তায়ন, দুঃশাসনের একযুগ পার করলো বাংলাদেশ। উন্নয়নের নামে ক্ষমতাসীন দুষ্টুচক্রের গত একযুগের এ দুঃশাসনের সঙ্গে একমাত্র বিতাড়িত তৎকালীন স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের কথিত উন্নয়নের এক দশকের তুলনা চলে।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের টিকা নিয়েও আওয়ামী লীগ সরকারের মাস্টারপ্ল্যান জনগণের কাছে পানির মতো পরিষ্কার। বৃহস্পতিবারও প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রীরা বলেছেন-করোনা টিকার ব্যবস্থা হয়ে গেছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার ভারতীয় হাইকমিশনার বলেছেন-বাংলাদেশে কবে টিকা আসবে তা নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। তাহলে কি দাঁড়ালো? টিকা নিয়ে আওয়ামী লীগের স্বনির্মিত মিথ্যাচারই প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কর্তৃত্ববাদী শাসনের এক যুগপূর্তি নিয়ে মাতামাতি করছে সরকার আর তাদের অনুগত ব্যক্তিরা। অথচ এক যুগে উন্নয়নের চেয়ে লুটপাট হয়েছে বহুগুণ। মেগা প্রকল্পের কয়েকটি কুমির ছানা যুগব্যাপী দেখিয়ে আর ক্ষমতার নিয়ামক শক্তিগুলোকে অবাধ সুযোগ-সুবিধায় তুষ্ট করে তিনটি ভূয়া জাতীয় নির্বাচন পার করার মধ্যে তারা তাদের সাফল্য খুঁজছে। তাদের এক যুগের সফলতা হলো-দেশের মানুষ এখন মৃত্যু আতঙ্কে ভুগছে এবং জীবিকার চিন্তায় অস্থির হয়ে আছে।
রিজভী আরও বলেন, তারা বলেছিল-২০২১ সালে দেশের ৮৫ শতাংশ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে। ঘরে ঘরে চাকরি দেবে। কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে উল্টোটা। গত ৭ বছরেই বেকারত্ব বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ! দেশের ৬৬ শতাংশ তরুণ এখনো কর্মহীন। চাকরির বদলে তারা ঘরে ঘরে মামলা, গুম আর লাশ দিয়েছে। তারা বলেছিল ১০ টাকা সের চাল খাওয়াবে। বিএনপি আমলের ১২/১৩ টাকার মোটা চালের কেজি এখন ৫০ টাকা। ৬/৮ টাকার আলু ৫৫ টাকায়, ৬০-৭০ টাকার আদা-রসুন ২০০ টাকায় খাওয়ানো কিংবা ২৫০ টাকার আবাসিক গ্যাস ৯৫০ টাকায়, ১৪ টাকার পরিবহন সিএনজি ৪৩ টাকায়, ১ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে ২ টাকা ৫০ পয়সার প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ এখন ৭ টাকায় তুলে পকেট কাটছে মানুষের।