করোনা মহারীতে মিডিয়া বান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশের সাংবাদিকদেরকে নগদ অর্থ সহায়তা (প্রনোদনা) দিয়েছেন। সুষম বন্টনের অভাবে বরিশালে এই টাকা পেয়েছেন বেশীর ভাগ নাম সর্বস্ব সাংবাদিক ও ধনাঢ্য ব্যাক্তিরা। ফলে বরিশাল মিডিয়া পাড়ায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। হাতে গোনা কয়েক জন ব্যাতীত ধনাঢ্য পেশাদার সাংবাদিকদের নাম তালিকায় থাকলেও বাকি সকলেই নামকাওয়াস্তে সাংবাদিক। তারা দিনে ভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থেকে জীবিকা নির্বাহ করেন এবং কোন পত্রিকার সাথে নামে মাত্র সংযুক্ত রয়েছেন।
আবার অনেকে সাংবাদিক সংগঠনের সদস্য হওয়ায় মাঠে সাংবাদিকতা না করেও প্রনোদনা পেয়েছেন। যাদের বহুতল ভবন আছে, এবং এই টাকার আদৌ প্রয়োজন নাই তাদের নামও আছে প্রনোদনার তালিকায়। চেক প্রাপ্ত অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন কেন তার নাম দেয়া হলো? তারা এই চেক ফেরত দিতে চান যারা পাওয়ার জন্য যোগ্য ছিলো তাদের নাম কেন দেয়া হলোনা?
এক সাংবাদিক নেতা বলেছেন সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্যদেরকেই সরকার প্রনোদোনা দিয়েছেন তাই তারাই পেয়েছেন। করোনা মহামারিতে যারা ঘরে বসে ছিলেন, দু কলম ও লিখেন নি তাদের নামও তালিকায় আছে। এছাড়াও সাংবাদিকদের বাদ দিয়ে অফিসের ম্যানেজার, কম্পিউটার অপারেটরও প্রনোদনার চেক পেয়েছেন।
করোনার সময় যারা সংবাদ সংগ্রহ করতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে কাজ করেছেন তাদের বড় অংশ বাদ দিয়ে কিভাবে অসাংবদিকরা এবং নাম সর্বস্ব সাংবাদিক ও ধনীরা টাকা পেলো তা নিয়ে বরিশাল মিডিয়া পাড়ায় ব্যাপক কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ তদন্ত দাবি করছেন । দুঃস্থ সাংবাদিক হিসাবে যারা ৫০ হাজার টাকার চেক পেয়েছেন তাদের অনেকেই নগরীতে বিলাশ বহুল বহুতল ভবনের মালিক।
বরিশালে প্রনোদনা প্রাপ্ত সাংবাদিকদের নাম বা তালিকা আজো কেউ জানে না। মন্ত্রী মহোদয়ের উপস্থিতিতে চেক বিতরন অনুষ্ঠানে কয়েক জনকে চেক দিয়ে ফটোসেশন করা হয়। সেখানে সকলের নাম ঘোষনা করার জন্য অনুরোধ করা হলেও রহস্য জনক ভাবে তা ঘোষনা করা হয় নি। এর পর নামের তালিকা চাওয়া হলেও তা দিয়ে দিছি বলে সময় ক্ষেপন করা হচ্ছে।
বরিশালে কতজনে প্রনোদনার টাকা পেয়েছেন তাও আজো অন্ধারে রয়ে গেছে। কেউ বলছেন ৫৪ জন।আবার কেউ বলছেন ৬৯ জন। শুধু তাই নয় প্রনোদনার আবেদনের করার জন্য একটা গন বিজ্ঞপ্তি সকল মিডিয়ায় প্রচার করার কথা ছিলো। তাও চুপিসারে করায় অনেকেই আবেদন করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। জানাগেছে কয়েকজন সাংবাদিক নেতা ঐ গন বিজ্ঞপ্তি ঢালাও ভাবে প্রচার না করে তাদের পছন্দের ব্যাক্তিদের মোবাইল ম্যাসেঞ্জারে দিয়েছেন। ফলে বেশিরভাল মাঠে কর্মরত সাংবাদিকরা প্রনোদনার জন্য আবেদন করতে পারেন নি।
প্রধানমন্ত্রীর দেয়া সাংবাদিকদের প্রনোদনার টাকা প্রাপ্তি নিয়ে এমন স্বজন প্রীতি বা অনিয়ম করা মোটেও কাম্য ছিলোনা। বরিশাল মিডিয়া পাড়ায় এটা বিরল ঘটনা। অনেকেই বলছেন সরকারকে সমালোচিত করতে সু কৌশলে ইতোপুর্বে রাজাকারে তালিকায় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম আসার মত ঘটনা না তো? খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
লেখক
বার্তা সম্পাদক
দৈনিক দক্ষিনাঞ্চল