শনিবার | ৬ জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৯ জিলহজ, ১৪৪৫ হিজরি | ২২ আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বর্ষাকাল | রাত ১২:২৯

শনিবার | ৬ জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৯ জিলহজ, ১৪৪৫ হিজরি | ২২ আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বর্ষাকাল | রাত ১২:২৯

থার্টি ফার্স্টে বাজির শব্দে কাঁপছিল শিশুটি, কয়েক ঘণ্টা পর মৃত্যু!

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on pinterest
Share on telegram
  • ফজর
  • যোহর
  • আসর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যদয়
  • ভোর ৩:৫২ পূর্বাহ্ণ
  • দুপুর ১২:০৭ অপরাহ্ণ
  • বিকাল ১৬:৪২ অপরাহ্ণ
  • সন্ধ্যা ১৮:৫৪ অপরাহ্ণ
  • রাত ২০:২০ অপরাহ্ণ
  • ভোর ৫:১৫ পূর্বাহ্ণ

‘আতশবাজির বিকট শব্দে ছেলেটা বারবার কেঁপে উঠছিল। তার সামনে গেলেই ভয়ে আঁতকে উঠছিল, দূরে সরে যাচ্ছিল। সারারাত আতঙ্কে কাটে তার, শ্বাসকষ্টও হচ্ছিল। বিকট শব্দের একপর্যায়ে আমি ও স্ত্রী আমাদের ছেলেটাকে জড়িয়ে ধরি। বুকে তার মাথা রাখি। ছেলেটা তখনও স্বাভাবিক হচ্ছিল না। কে জানতো। কয়েক ঘণ্টা পরই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করবে আমার ছোট্ট ছেলেটি।’

এভাবেই কাঁদতে কাঁদতে থার্টি ফার্স্ট নাইটের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করছিলেন তানজীম উমায়ের নামে এক শিশুর বাবা ইউসুফ রায়হান। চার মাস বয়সী শিশুটি ১ জানুয়ারি বিকেলে মারা যায়। জন্মগতভাবে হৃদযন্ত্রে ছিদ্র ছিল উমায়েরের। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছিল সে। জানুয়ারির ১ তারিখ শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি উমায়ের।

৩ জানুয়ারি বিকেল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরছে ছোট্ট উমায়ের ও তার বাবার ছবি। চলছে পটকা-আতশবাজি ফাটানো নিয়ে নানা সমালোচনা, চলছে নিষিদ্ধের দাবি।
উমায়েরের বাবা ইউসুফ রায়হান বলেন, ‘আমার বাবু মায়ের পেট থেকেই হৃদযন্ত্রে ছিদ্র নিয়ে এসেছিল। প্রথমে রোগ ধরতে না পারলেও আমরা আমরা বিভিন্ন হাসপাতালে তার টেস্ট করাই। অবশেষে রোগ শনাক্ত করতে পেরে চিকিৎসকরা ফেব্রুয়ারিতে তার অপারেশনের ডেট দেন। উমায়েরের শ্বাসকষ্টও ছিল। সে অল্প শব্দেই কেঁপে উঠত, ভয় পেত।’

ডিসেম্বর মাসের ১০ তারিখে নিউমোনিয়া নিয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় উমায়েরকে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে ভর্তি করা হয় তাকে। চারদিন পর সুস্থ হয়ে বাসায় আসে সে। বাসায় ফিরে সপ্তাহখানেক পর আবার তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার তাকে ডাক্তার দেখানোর কথা ছিল। ডাক্তারের একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজের কারণে তাকে দেখানো যায়নি। ডাক্তার উমায়েরকে ১ তারিখে নিয়ে যেতে বলেছিলেন।

ইউসুফ রায়হান বলেন, ‘শুক্রবার রাতে ছেলেটা খুব সুস্থ ও সবল ছিল। সে সন্ধ্যায় উৎফুল্লভাবে খেলাধুলা করছিল। সন্ধ্যায় তার মা আমাকে ভিডিও কল করে ছেলেটাকে দেখাল। উৎফুল্ল ছেলেকে দেখে আমিও বাসায় ফিরে আসি। বাসায় ফিরে দেখি উমায়েরের মা তাকে খাওয়াচ্ছে। রাত ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে বিকট শব্দে পটকা ও আতশবাজি ফাটানো শুরু হলো। ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে চারপাশ থেকে পটকা ফাটানোর অনেক শব্দ হচ্ছিল। ছেলেটা তখন রীতিমত কাঁপছিল। আমি যখন তাকে চুমু খেতে যাচ্ছিলাম, তখনও ভয় পাচ্ছিল। কান্নাকাটি করছিল। সে জোরে শব্দ হলে সে ভয় পেত বলে আমরা বাসায় খুব সতর্কভাবে জিনিসপত্র নাড়াচাড়া করতাম।’
মর্মান্তিক সেই মুহূর্তের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি তখন উমায়েরের মাকে বলি ওকে জড়িয়ে ধরতে, যাতে বিকট শব্দগুলো তার কানে না যায়। আমরা তাকে বুকে জড়িয়ে ধরি। বুঝতে পারছিলাম শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল তার। কোনোভাবে রাতটি অতিক্রম করলাম। সকালে শ্বাসকষ্ট বেশি হওয়ায় আমরা তাকে হার্ট ফাউন্ডেশনে নিয়ে যাই। চিকিৎসক দেখে সঙ্গে সঙ্গে তাকে ভর্তি নেন। দুপুর পর্যন্ত তার অবস্থা খুব খারাপ ছিল, বিকেলে তাকে আইসিইউতে নেয়া হলো। এর পরপরই তাকে নেয়া হলো লাইফ সাপোর্টে। সন্ধ্যায় কিছুক্ষণ পর ডাক্তার আমাদের ডেকে বললেন ছেলেটা হার্টফেল করেছে, সে আর বেঁচে নেই।’

মোহাম্মদপুরের নবীনগর হাউজিংয়ে ইউসুফের একটি মোবাইল অ্যাক্সেসরিজের দোকান রয়েছে। ছয় বছর আগে বিয়ে করেন তানিয়া নামে এক নারীকে। তাদের পাঁচ বছর বয়সী একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। ২০২১ সালের ১২ আগস্ট তাদের পরিবারে এসেছিল উমায়ের।
ইউসুফ বলেন, ‘সত্যিই অতিরিক্ত শব্দের কারণেই তার হার্টফেল হয়েছিল কি না, আমরা তা বলতে পারব না, তবে সেই বিকট শব্দের কারণে বার বার কাঁপতে থাকা ছেলেটির সেই মুহূর্তের চেহারা কিছুতেই ভুলতে পারছি না।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on pinterest
Share on telegram

Leave a Comment

সর্বশেষ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

দেশবিরোধী সকল চুক্তি বাতিল করতে হবে, ভারতের রেল বাংলাদেশে চলতে দেয়া হবে না – প্রিন্সিপাল আব্দুল আউয়াল

এম শাহরিয়ার তাজ, খুলনা প্রতিনিধি: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর নায়েবে আমীর ও খুলনা মহানগর সভাপতি প্রিন্সিপাল আব্দুল আউয়াল বলেছেন, বর্তমান ডামি সরকার দেশবিরোধী ১০টি সমঝোতা চুক্তি করেছে। যাতে বাংলাদেশের ন্যুনতম কোন স্বার্থ নেই। সব স্বার্থ ভারতের। দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে শেখ হাসিনা দেশকে ভারতের করদরাজ্যে পরিণত করার সকল আয়োজন সম্পন্ন করেছে।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোটা বাতিলের আন্দোলনে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সংহতি প্রকাশ

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা পুনর্বহালের প্রতিবাদে চলমান সাধারণ শিক্ষর্থীদের আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন ইসলামী ছাত্র

ভারতকে অবৈধভাবে ট্রানজেট দেয়ার প্রতিবাদে শুক্রবার খুলনায় ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল

এম শাহরিয়ার তাজ, খুলনা প্রতিনিধি: বর্তমান সরকার অবৈধভাবে ভারতকে ট্রানজিট দেয়ার প্রতিবাদে আগামী ৫ জুলাই

  • ফজর
  • যোহর
  • আসর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যদয়
  • ভোর ৩:৫২ পূর্বাহ্ণ
  • দুপুর ১২:০৭ অপরাহ্ণ
  • বিকাল ১৬:৪২ অপরাহ্ণ
  • সন্ধ্যা ১৮:৫৪ অপরাহ্ণ
  • রাত ২০:২০ অপরাহ্ণ
  • ভোর ৫:১৫ পূর্বাহ্ণ