তরুণদের জন্য আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা হয়নি। করোনা পরিস্থিতিতে তরুণদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার ছিল। কিন্তু বিষয়টি খুব একটা গুরুত্ব পায়নি প্রস্তাবিত বাজেটে।
গতকাল সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) ও একশনএইড বাংলাদেশ আয়োজিত ‘২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট : প্রেক্ষিত তরুণ জনগোষ্ঠী’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেমের গবেষণা পরিচালক ড. সায়মা হক বিদিশার সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন
প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নাহিম রাজ্জাক বলেন, তরুণদের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থান- এই তিনটি জায়গা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। করোনাকালীন তরুণদের জন্য এই তিনটি খাতে কী করা হয়েছে, তার মূল্যায়ন করা দরকার। সরকারের অনেক ভালো প্রকল্প থাকলেও এর সুফল পাওয়ার জায়গায় ঘাটতি রয়েছে।
আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ও সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, তরুণদের জন্য বাজেটে বরাদ্দ ভীষণভাবে অপর্যাপ্ত। তরুণদের জন্য বাজেটে বরাদ্দ আগে থেকেই অপর্যাপ্ত ছিল। করোনা পরিস্থিতিতে তরুণদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে যে বরাদ্দ বাড়ানোর প্রয়োজন ছিল, প্রস্তাবিত বাজেটে আমরা তা দেখিনি।
তরুণদের সমস্যার সমাধান না করে উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয় উল্লেখ করে ফারাহ কবির বলেন, করোনার এই বিশেষ সময়ে তরুণদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বাজেটে সেটি নেই।
ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, করোনার আগেও তরুণদের জন্য অনেক ধরনের চ্যালেঞ্জ ছিল। করোনার সময়ে তরুণদের জন্য সেই চ্যালেঞ্জগুলোর তীব্রতা আরও বেড়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হাসানুল ইসলাম বলেন, কভিড পরিস্থিতিতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষা খাত ও তরুণ সমাজ। তবে সরকার এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইসমাইল জানান, তরুণদের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়াবে সরকার। অগ্র ভেঞ্চারের চেয়ারম্যান ফারজিন ফেরদৌস আলম বলেন, কভিড চলাকালীন তিন-চার মাসের চেষ্টায় তিনি বিদেশ থেকে দেড় কোটি টাকার বিনিয়োগের ব্যবস্থা করতে পেরেছেন। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ পাননি। সানেমের গবেষক ইশরাত শারমীন জানান, গবেষণায় দেখা গেছে যে, তরুণ সমাজের সঙ্গে অধিকতর সংশ্নিষ্ট ২২টি মন্ত্রণালয়ের জন্য প্রস্তাবিত উন্নয়ন বাজেটের মাত্র ১৪ শতাংশ প্রত্যক্ষভাবে তারুণ্য সংবেদনশীল, ৬০ শতাংশ তারুণ্য সংবেদনশীল নয়।