মঙ্গলবার রাতে কক্সবাজারের টেকনাফে হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম পানখালী ভিলিজার মোড়া এলাকায় পাহাড় ধ্বসে একই পরিবারের ৫ ভাই-বোন নিহত হয়েছে।
প্রেজেন্ট নিউজের টেকনাফ সংবাদ দাতা এনামুল হক মনজুর সরেজমিন পরিদর্শন করে বলেন, টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম পানখালী ভিলিজার মোড়ার বাসিন্দা মুহাম্মাদ সৈয়দ আলমের পরিবার প্রতি দিনের মতো রাতে ঘুমিয়ে পড়ে। কিন্তু সৈয়দ আলমের বাড়ীর পশ্চিম পাশের সুউচ্চ পাহাড়টি তিন দিন যাবত অনবরত ভারী বর্ষণের ফলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। রাত বারোটা নাগাদ পাহাড়টি সৈয়দ আলমের বাড়ীর উপরে ধ্বসে পড়লে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা সৈয়দ আলমের ৩ ছেলে মুহাম্মাদ আব্দুশ শাকুর (১৮) জুবায়ের (১২) ও আব্দুল লতিফ (১০) এবং ২ মেয়ে কহিনূর (১৪) ও জয়নাব আক্তার ( ৮) মাটি চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
এ ঘটনায় সৈয়দ আলমের এক বিবাহিত মেয়ে ও এক দুগ্ধ শিশু ছাড়া সব সন্তানই মাটি চাপা পড়ে মৃত্যু বরণ করে। সৈয়দ আলম ও তার স্ত্রীও বক্ষ সমান মাটিতে চাপা পড়ে গেলে তার স্ত্রী পাশে থাকা শিশু সন্তানটিকে দ্রুত কাধে নিয়ে নেয়।
এনামুল হক মনজুর আরো জানান, মাটি চাপায় নিহত সৈয়দ আলমের ৫ সন্তানের মধ্যে কহিনূর আক্তার হ্নীলা উম্মে সালমা মহিলা মাদরাসার ৬ষ্ট শ্রেণীর ছাত্রী।
ঘটনার সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হোসাইন আহমদ ও মাওলানা আলী আহমদ লোকবল নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে সৈয়দ আলম ও স্ত্রীকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয় এবং দীর্ঘ সময় উদ্ধার তৎপরতার পর সৈয়দ আলমের ৫ সন্তানের মৃত দেহ উদ্ধার করে।
আমাদের টেকনাফ সংবাদ দাতা আরো জানান, ঘটনার সংবাদ পেয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( রাজস্ব) আল আমিন পারভেজ, কক্সবাজার-৪ এর সাবেক সাংসদ আবদুর রহমান বদি, টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী অফিসার পারভেজ চৌধুরী, টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মাদ হাফিজুর রহমান ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী সহ প্রসানের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
পরে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে এক লক্ষ পঁচিশ হাজার, সাবেক সাংসদ আবদুর রহমান বদি’র ব্যক্তিগত তহবিল থেকে পঞ্চাশ হাজার এবং কোস্টট্রাস্টের পক্ষ থেকে দশ হাজার টাকা সহ সর্বমোট এক লক্ষ পঁচাশি হাজার টাকা নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয় শোকার্ত বাবা সৈয়দ আলমের হাতে।
মঙ্গলবার বাদ আছর পূর্ব পানখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে হাজারো শোকার্ত মুসল্লিদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সকলের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে পূর্ব পানখালী কবরস্থানে ৫ ভাই- বোনের মৃত দেহ দাফন করা হয়।