ভারতীয় টিভি সিরিয়াল ‘ক্রাইম পেট্রোল’ দেখে নিজের ভাই, ভাবিসহ পুরো পরিবারকে হত্যা করতে প্ররোচিত হয় রায়হানুর রহমান ওরফে রেহানুল (৩২) নামে এক যুবক। পরিকল্পনা অনুযায়ী কৌশলে কোমলপানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে ভিকটিমদের খাওয়ানো হয়, এরপর ঘুমন্ত অবস্থায় চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে প্রত্যেকের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক।
চলতি বছরের অক্টোবরে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একই পরিবারের ৪ জনকে হত্যার ঘটনায় মূল আসামি রেহানুলকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
ঘটনার মাত্র ১ মাস ৫ দিনের মাথায় রোববার (২২ নভেম্বর) আদালতে মামলার চার্জশিট জমা দেয় তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি।
অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক বলেন, গ্রেফতার রায়হানুল দীর্ঘদিন ফেনসিডিলের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ (ডিসাপেন-২) সেবন করতেন। এক সময় ফেনসিডিলসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে এবং জেলও খাটে। এরপর স্ত্রী ফাহিমার সঙ্গে তার ডিভোর্স হয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে রায়হানুল বেকার অবস্থায় ভাই ও ভাবির সংসারে থাকতে শুরু করেন। ভাবি সাবিনা খাতুন মাঝেমধ্যে টাকার জন্য খারাপ আচরণ করতেন। স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের বিচ্ছেদ ও বেকার জীবনে ভাবির দূর্ব্যবহারের কারণে এক সময় ভাই-ভাবিসহ পুরো পরিবারকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, হত্যার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে স্থানীয় মো. আবু জাফরের দোকান থেকে দুইটি কোমলপানীয় কিনে তার মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয়। ঘুমের ওষুধ মেশানো এ পানীয় তিনি তার ভাই, ভাবি, ভাতিজি ও ভাতিজাকে পান করতে দেয়। তারা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে রাত ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার মধ্যে চাপাতি দিয়ে প্রথমে তার ভাই এবং পরবর্তীতে ভাবিসহ বাকিদের হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডের পর রেহানুল আলামত মুছে ফেলার চেষ্টা করে। কিন্তু তার আগেই সিআইডি তাকে গ্রেফতার করে। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতিসহ রক্ত মাখা কাপড় উদ্ধার করা হয়। ঘটনার মাত্র এক মাস ৫ দিনের মাথায় ২২ নভেম্বর সিআইডি আদালতে এ মামলার চার্জশিট দাখিল করতে সক্ষম হয়।