আব্দুল জব্বার মাহমূদী-মাগুরা জেলা:-ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেছেন, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা ছেড়ে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। দেশে কর্তৃত্ব ও ফ্যাসিবাদী
সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শেখ হাসিনার সরকার দিনের ভোট রাতে করে স্বাধীনতার ৫৩ বছরের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে। তিনি বলেন, সরকার জনগণের ভোটাধিকার ও নাগরিক অধিকার হত্যা করেছে। দেশের নিবন্ধিত অধিকাংশ
রাজনৈতিক দল দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চায় না। কাজেই চলমান সঙ্কট থেকে বাঁচতে হলে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের বিকল্প নেই। এজন্য জাতীয় সরকারের অধীনেই কেবল সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব। আজ মঙ্গলবার বিকেলে মাগুরার নোমানী ময়দানে
বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে চলতি সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (PR) পদ্ধতির প্রবর্তন, দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মাগুরা জেলা শাখার
উদ্যোগে অনুষ্ঠিত বিশাল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) মাওলানা শোয়াইব হোসেন। জেলা সভাপতি মুফতি মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারী
হাফেজ মুহাম্মদ মনিরুজ্জামানের পরিচালায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা উপদেষ্টা মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, সহ-সভাপতি মাওলানা নাজিরুল ইসলাম, মাওলানা মশিউর রহমান, মাওলানা আকরাম হোসাইন, উপদেষ্টা মুফতী আব্দুল জলিল, নাজমুল
হাসান ওয়াদুদ, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের মাওলানা ইমদাদুল্লাহ, চেয়ারম্যান মুফতি উসমান গণি মুহাপুরী, শ্রমিক নেতা মাওলানা আসাদুজজামান, শিক্ষখনেতা হাফেজ মাওলানা উবায়দুল্লাহ, যুবনেতা মাওলানা তাজুল ইসলাম, ছাত্রনেতা আব্দুল্লাহ আল নোমান।
এছাড়াও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্য প্রমাণ করে তারা আমার প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে চায়। অথচ বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। লাখো শহীদের আত্মত্যাগের
বিনিময়ে এদেশ স্বাধীন হয়েছে। এ দেশ স্বাধীন করতে লাখো মা-বোন তাদের ইজ্জত হারাতে হয়েছে। অনেক মা তার বুক খালি করেছে। অনেক বোন হয়েছে বিধবা। অনেক সন্তান হয়েছে বাবা হারিয়ে এতিম। আত্মত্যাগে ছিনিয়ে আনা স্বাধীনতা আজ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়
টিকে থাকার জন্য ধ্বংস করবে এটি এদেশের মানুষ বরদাশত করবে না। মানুষ স্বাধীনতা রক্ষায় প্রয়োজনে আবার রাজপথে নেমে আসবে। তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদেরে বক্তব্য সুষ্পষ্ট রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় আসলে দেশ ধ্বংস করে ফেলবে।
দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে। মানুষের বাকস্বাধীনতার টুটি চেপে ধরবে। তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের বলছেন, তলে তলে সমঝোতা হয়ে গেছে। আমি বলি তলে তলে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দেশের জনগণ সরকারের পতন আন্দোলনে তৈরি হয়ে গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ছলচাতুরির আশ্রয় না নিয়ে ক্ষমতা ছেড়ে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। অন্যস্থায় দেশের জনগণ আপনাদেরকে চরম শিক্ষা দেবে। দলের নায়েবে আমীর মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, দেশ আমাদের নির্বাচনও আমাদের। সুতরাং
আমার দেশের জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কিভাবে হবে? এখানে বিদেশীনের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। বিদেশীদের প্রেসক্রিপশনে রাষ্ট্র ও নির্বাচন পরিচালিত হবে না। দেশের মানুষ নানা সঙ্কট ভোগ করছে। নিত্যপণ্যের সীমাহীন মূল্যবৃদ্ধিতে জনজীবন বিপর্যন্ত। ফিলিস্তিনের
গাজা উপত্যকাসহ বিভিন্ন এলাকায় দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর বিমান হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, দখলদার ইসরাইল ফিলিস্তিনে বিমান হামলা করে বিশ্বব্যাপী অশান্তির দাবানল জ্বালিয়ে দিয়েছে। দখলদার ইসরাইলীরা ফিলিস্তিনে
দখলদারিত্ব করে নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। ইহুদি দখলদার বাহিনী থেকে ফিলিস্কিনের নারী-শিশু, পুরুষ কেউই রেহাই পাচ্ছে না এই। তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর সর্বপ্রথম ফিলিঙিন বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও এখন বাংলাদেশ সরকার
ফিলিপ্তিনের পক্ষে না গিয়ে ইসরাইলকে মদদ দিয়ে যাচ্ছে এবং ভারতের সাথে সূর মিলিয়ে বাংলাদেশ সরকারও ইসরাইলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তিনি আও বলেন, জাতীয় সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে রাজপথ ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠছে। সঙ্কট আরো
ঘূণিত হচ্ছে। সরকার সংবিধানের দোহাই দিয়ে বিগত ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের ন্যায় কলঙ্কিত নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চায়। তিনি বলেন, সংবিধান রাষ্ট্র ও জনগলোর কল্যানে। মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, সিন্ডিকেট বন্ধ করে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
নিরীহ নিরপরাধ জনগণ, আলেম-ওলামাদের হয়রানী বন্ধ করতে হবে। জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। দুর্নীতি, ঘুষ, চুরি-ডাকাতির উন্নয়ন হয়েছে। সর্বা মুখ ও দুর্নীতিতে সায়লাব। সভাপতির বক্তব্যে মুফতি মোস্তফা কামাল বলেন, সরকার দুর্নীতির মাধ্যমে দেশকে
তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে। রিজার্ভ শূন্যের কোঠায়। দেশ দেউলিয়ার পথে। সরকার দলীয় লোকজন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মানুষের পকেট কাটছে। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না। তিনি বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী বলছেন, সরকার নির্ধারিত বাজার দর অনুযায়ী বেচাকেনা হয়। এটা কিসের আলামত? ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগ করা উচিত ।